থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা কী?

থ্যালাসেমিয়া একটি জিনগত রোগ। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেয়। যার ফলে রোগীকে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কীভাবে এড়িয়ে চলা সম্ভব এই রোগ, পরামর্শ দিলেন হেমাটোলজিস্ট ডাঃ প্রান্তর চক্রবর্তী।

হেমাটোলজিস্ট ডাঃ প্রান্তর চক্রবর্তী বলেছেন, গ্ৰিক ভাষায় 'থ্যালাস' শব্দের অর্থ হল সমুদ্রএই 'থ্যালাস' থেকেই এসেছে থ্যালাসেমিয়া। থ্যালাসেমিয়া একধরনের রক্তাল্পতা রোগ। আমাদের শরীরে রক্ত ঠিকভাবে তৈরি হতে না পারলেই এই রোগ দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়া মেজর থাকলে ৬ মাস বয়স থেকেই তার লক্ষণ বোঝা যায়। এই সময় শিশুরা খুব ঝিমিয়ে থাকে, খাবার খেতে চায় না। অনেক সময় বড় বয়সেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সব সমস্যার কারণ হল রক্তাল্পতা। থ্যালাসেমিয়া রোগ এড়িয়ে চলতে গেলে আগে জেনে নিতে হবে যে থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না? কারণ স্বামী-স্ত্রী যদি থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা বাহিকা হয় তাহলে সন্তানেরও থ্যালাসেমিয়া রোগ দেখা দিতে পারে। কিন্তু থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা বাহিকা মানেই তার থ্যালাসেমিয়া আছে এমনটা নয়।

তাই থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করে নিতে হবে। কারণ সাধারণ ব্ল্যাড টেস্টে ধরা পরে না। থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা বাহিকা কিনা তা জানতে এইচ.পি.এল.সি টেস্ট করানো হয়। কিছু থ্যালাসেমিয়া রোগী আছেন যাদের শরীরে রেগুলার রক্ত দিতে লাগে না। কিন্তু তাদের শরীরেও অত্যাধিক পরিমাণে আয়রন জমতে পারে। কারণ থ্যালাসেমিয়া থাকলে শরীর মনে করে রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে তাই সব খাবার থেকে বেশি পরিমাণে আয়রন নিয়ে নেয়। কিন্তু এই অত্যাধিক পরিমাণের আয়রনটা শরীর থেকে বের করতে হবে। এর জন্য কিছু ট্যাবলেট রয়েছে যা ব্যবহার করলে শরীর থেকে এই আয়রন বেরিয়ে যাবে। অনেক ভারতীয় সংস্থা এই ওষুধ তৈরি করে।

থ্যালাসেমিয়ার যেহেতু একটি জিনগত রোগ তাই জিন থেরাপির মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা সম্ভব। এছাড়াও এদেশে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। যদি ভাই বা বোনের সঙ্গে এইচ.এল ম্যাচ থাকে তাহলে খুব সহজেই এই কাজ করা যায়। কিন্তু তার জন্য ছোটবেলা থেকে রোগীর সঠিক চিকিৎসা করার প্রয়োজন রয়েছে।
 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...