‘কনফিডেন্স বিল্ডিং’ বা আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সবচেয়ে জরুরি বিষয় কী? নেগেটিভ চিন্তাভাবনা কাটিয়ে পেশার জগতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন কীভাবে? সেল্ফ-ডাউট বা নিজেকে নিয়ে সংশয় থেকে বেরিয়ে আসার পথ কী? টিপস দিলেন মডেল অনুক্তা ঘোষাল (Anukta Ghoshal, Model)
অনুক্তা ঘোষাল জানিয়েছেন, জীবনে মানুষ যা কিছু শেখে সে তার জীবন দিয়ে শেখে। তাঁর নিজের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। জীবন একটা জটিল রাস্তা। তার দুটো দিক আছে। পথ চলার উদ্দেশ্যটাকে যদি স্থির করে নেওয়া হয় তাহলে দেখা যায় একটা সোজা রাস্তা- যেটায় অনেক দূর তোমায় হাঁটতে হবে আর আছে শর্টকাট। শর্টকাটে নিজের উদ্দ্যেশ্যে পৌঁছলে সেখানে কিন্তু আদৌ কতটা লক্ষ্যপূরণ হল তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ থেকে যায়। কিন্তু সোজা আর সঠিক রাস্তা ধরলে সেখানে বারবার হোঁচট আর বাধা আসে। রাস্তাও হয় লম্বা। তবে লক্ষ্য পূরণে সংশয় থাকে না।
কারণ এক্ষেত্রে আগে থেকেই জানা থাকে আমার জীবনের রাস্তা শক্ত। আমাকে অনেকটা এগোত হবে। বারবার হোঁচট খেতে হবে এবং চলতে গিয়ে পড়েও যেতে পারি। তার জন্য সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন তা হল আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে উঠে দাঁড়ানো। উঠে দাঁড়ানোটা ভীষণ জরুরি। পেশা জগৎ হোক বা ব্যক্তিগত জীবন, যে কোনও উন্নতি তথা অ্যাচিভমেন্টের মূল কথা ‘উঠে দাঁড়ানো’। তার জন্য যে আত্মবিশ্বাস প্রয়োজন সেটা সবসময় নিজের ‘ব্যাগে’ রাখতে হবে। তবেই নিজের লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব।
ছোট ছোট বিষয় অনেক সময় জীবনের চলার পথের বন্ধু হয়ে ওঠে। বন্ধু, সহকর্মী, আত্মীয় কে কী করছে সেদিকে তাকালে চলবে না। পাশের জনের সঙ্গে নিজেকে তুলনা না করে যদি নিজের সঙ্গে নিজের তুলনা করা হয় সেটা অনেক বেশি কাজের। এক বছর আগে কেমন ছিলাম আমি? আর আজ কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সেই মূল্যায়ণ দরকার। প্রতি স্তরে কী উন্নতি হচ্ছে , সেটা বুঝে নেওয়া সহজ হয়। কতটা উন্নতি হচ্ছে সেই ফলাফল পরবর্তী স্তরে পৌঁছানোর জন্য মোটিভেট করবে। যা থেকে তৈরি হয় আত্মবিশ্বাস। রাতারাতি উন্নতির কথা ভাবলে হবে না। ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে বড় লক্ষ্যের দিকে এগোতে হবে। ভাবতে হবে এই ছোট লক্ষ্য যখন পূরণ করা সম্ভব হয়েছে তখন জীবনের সবচেয়ে বড় যে লক্ষ্য- সেটাও পূরণ করা সম্ভব হবে।
মানুষের জীবন উপন্যাসের মতো। আমরা পিছনের পাতা পড়তে পড়তে এগোই সামনের দিকে। পিছনের পাতার গল্পগুলো যেহেতু জানা হয়ে গেছে তাই আবার সেগুলো ফিরে দেখা হয় না। সামনে কী আছে সে নিয়ে যদি নিজেকে একটু বেশি ভাবি, কী হতে চলেছে আগামীতে সে নিয়ে যদি বেশি ফোকাস থাকি তাহলে জানাবোঝা বেশি ভাল হয়। তার জন্য উৎসাহ থাকে বেশি।
নিজেকে একটু ‘ফ্লেক্সিবল’ করতে হবে। ব্যর্থতায় আটকে না থেকে ভাবতে হবে সাফল্যের দিকে এগিয়ে চলার কথা। নিজেকে নিজের মতো করে বোঝাতে হবে ‘আমিও পারব’। প্রতিদিন সকালে উঠে নিজেকে বলতে হবে এই মন্ত্র। ‘হবে না’ কে মুছে ফেলে বলতে হবে ‘হবে’।
আমরা যখন দিন শুরু করি তখন শরীর মন থাকে এনার্জিতে ভরপুর। দিন যখন শেষ হয় তখন সেই এনার্জি অনেকটাই কমের দিকে। প্রতিদিন শকালে উঠে এক গ্লাস জল ভর্তি করুন। মনে মনে ভাবুন আপনার এনার্জি, ক্ষমতাকে পূর্ণমাত্রায় ভরে নিলেন আপনি। এই পূর্ণতাই আপনাকে সারাদিনের শক্তি জোগাবে। পরের দিন আবার ভরে নেবেন খালি হয়ে যাওয়া গ্লাস। সুস্থ আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে লক্ষ্যপূরণ এটাই হোক প্রতিদিনের রুটিন।