সৌন্দর্যের সংজ্ঞা কী? সৌন্দর্যের ধারনায় ‘পারফেকশন’-এর কোনও মাপকাঠি আছে? ফ্যাশন দুনিয়ায় শারীরিক গঠন কতটা প্রভাব ফেলে? ‘Beauty is beyond Physical Appearance’ এই ভাবনার বাস্তব ছবি আসলে কেমন? বিস্তারিত জানালেন বিশিষ্ট লেখিকা ও অ্যাসোসিয়েশন ফর গ্লোবাল ওমেন এমপাওয়ারমেন্টের-এর প্রধান, অদ্বিতীয়া দত্ত বণিক (Adwitiya Datta Banik, Author & Director of AGWE-Association for Global Women Empowerment )
মানুষ নিজেকে পারফেক্ট বলবে কীভাবে? সে সম্পর্কে অদ্বিতীয়া দত্ত বণিক বলেছেন, সব ইম্পারফেকশন বা খুঁত নিয়েই সৌন্দর্য। কারণ মানুষ জন্মায় খুঁত নিয়েই। সৌন্দর্য আসলে মনের রূপ। মনের ছবিই ফুটে ওঠে মুখে। প্রসাধন, মেকআপ, রূপসজ্জা ঘন্টা দেড়েক পর ধুয়েই দিতে হয়। তাই সৌন্দর্য কখনই প্রসাধনী নয়। সৌন্দর্য আসলে মানুষ প্রকৃত যা সেটাই।
মহিলাদের নানা সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। শরীরের গঠন নিয়ে। কার্ভি হলে মোটা, জিরো ফিগার হলে রোগা। আর 'পারফেক্ট' ফিগার হলে তাতেও প্রশ্ন ওঠে কীভাবে এত পারফেক্ট! এই ট্রোলিং আর সমালোচনা সব সময় চলতে থাকে। টিপিক্যাল কোনও ফিগারকে বলা যাবে না মডেল। মডেলকে রোল মডেল হওয়া উচিত। একজন নারীকে দেখে যেন আরও পাঁচ জন নারীকে দেখে অনুপ্রেরণা পায়।
অদ্বিতীয়ার কথা অনুযায়ী যেদিন নিজের চাহিদা থেকে সরাতে পারবে সেদিনই আসল সৌন্দর্য-এর সঙ্গে দেখা হবে। তাকে বলা হয় নির্বাণ।
৮.৯ ইঞ্চির লম্বা চুল তিনি দান করে দিয়েছেন ক্যানসার রোগীদের জন্য। তুমি যেভাবে আছ ঠিক সেই রূপে যখন কেউ তোমায় গ্রহণ করবে সেদিন আর বাইরে থেকে চাপানো সৌন্দর্যের দরকার পড়বে না। আগেকার দিনে বিয়ের সময় চুলের ঘনত্ব আর ভার দেখে পাত্রী নির্বাচন করা হত। সৌন্দর্যের সঙ্গে শরীরের পুষ্টির আন্দাজ করা হত তার মাধ্যমে। মনে হত নারীর অহংকার চুল। সেই অহংকার যখন কেউ দিয়ে দিতে পারে সেদিনই তুমি সবচেয়ে সুন্দর। ভাবনা, চিন্তা, বোধ, শিক্ষা, কথা, আচরণ এই সব মিলিয়ে সৌন্দর্য।
‘Scribbles that set Memoirs’ তাঁর প্রথম বই। শিশু বিবাহ, পাচার, বৈবাহিক ধর্ষণ- বইয়ের বিষয়। নারীরাও সংখ্যালঘু। ‘Dopamine’ তাঁর দ্বিতীয় বই। বিষয় খুশি থাকার হরমোন। রোমান্স কীভাবে আসে মানুষের মধ্যে। ছোট ছোট ব্যবহারে। এই বই উৎসর্গ করা হয়েছে ক্যানসার আক্রান্তদের। তৃতীয় বই ' Metamorphosis ' বদল নিয়ে। মা হওয়ার পর ৭৩ কেজি ওজন থেকে মাত্র ৮ মাসে কোনও জিম ছাড়াই শুধু ডায়েট আর ইচ্ছেতে কীভাবে ৪৭ কেজিতে এনেছিলেন তিনি এই জার্নি নিয়ে। সদ্য মা হওয়া, নতুন দায়িত্ব, সবটাই নতুন এই রূপান্তর খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন নারীর জন্য। ২০১৭ থেকে তিনি তাঁর অ্যাসোসিয়েশন ফর গ্লোবাল ওমেন এমপাওয়ারমেন্ট সংস্থা চালাচ্ছেন। বিশেষভাবে ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুদের জন্য। মহিলাদের স্বনির্ভর হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তাঁর দাদা তাঁর অনুপ্রেরণা।
আত্মবিশ্বাসই আসল গয়না। ফ্যাশন টাকা দিয়ে কেনা যায় স্টাইল আর নিজে ঠিকভাবে প্রেজেন্টেবল হয়ে ওঠা শিখতে হয়। নিজের শরীর সম্পর্কে সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হতে হয়। কথা থেকে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সবটাই শিখতে হয়। কোন পোশাক মানাবে, কোন রঙ মানেবে সবটাই তার মধ্যে পড়ে।