ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাঙালির নারী হিসেবে নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন 'কেয়া শেঠ'। ‘প্রিয়দর্শিনী’ পার্লার দিয়ে পথ চলার শুরু। তারপর আজ শিক্ষাক্ষেত্র থেকে শুরু করে জামা-কাপড় সব ক্ষেত্রেই ছড়িয়ে আছেন ‘ব্র্যান্ড কেয়া শেঠ’। এবার জিয়ো বাংলায় পর্দায় জীবনের সাফল্য অর্জন করার পাঁচটি মন্ত্র শেখালেন স্বয়ং কেয়া শেঠ।
প্র: একজন সাধারণ হোমমেকার থেকে কীভাবে শুরু করলেন সব কিছু?
কেয়া: সাধারণ হোমমেকার বললে ভুল হবে। যেহেতু অনেক কম বয়সে আমার বিয়ে হয়েছে। তাই পড়াশুনা শেষ করতে পারার আগেই আমাকে সংসারের সঙ্গে সঙ্গে বাকি দিকগুলোও সামলাতে হয়েছে।
প্র: ছোট বয়স থেকে সাঁতার কেটেছেন ও ছবি এঁকেছেন। কিন্তু রূপচর্চার ফিল্ডে কখন আসবেন ভেবেছিলেন?
কেয়া: ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল পেইন্টার হওয়ার। কিন্তু সংসারের কাজ সামলে সেটা আর করা হয়ে ওঠেনি। তাই যখন একটা বিউটি পার্লার শুরু করলাম তখন ইচ্ছা ছিল এই ফিল্ডে আমার সেরা হতেই হবে। সেই কারণেই বিউটিশিয়ানের কোর্স করেছিলাম।
প্র: কেয়া শেঠের জার্নি শুরু হয়েছিল ১৮৫ স্কোয়ার ফিটের একটি বিউটি পার্লার দিয়ে। কেমন লাগে সেই সময়ের কথা ভাবলে?
কেয়া: তখনকার সময়ের সব স্মৃতিই খুব মধুর। কারণ তখনই অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলাম আমি। তবে কিছু খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও পড়তে হয়েছিল আমাকে। সেই খারাপ সময়টা আমি ভুলে যেতে চাই। শুধু ভাল সময়টা মনে রাখতে চাই।
প্র: শুরুতে মাত্র ছ’টা প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করে আজ জামা-কাপড় থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্র সব ফিল্ডেই কেয়া শেঠের শাখা রয়েছে, এতো কিছু আপনি সামলান কীভাবে?
কেয়া: আমার যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পছন্দ সেটি আজও ধরে রেখেছি আমি। কিন্তু একটা মানুষ শুধুমাত্র মেকআপ দিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারে না। তার জন্য ভালো পোশাকের প্রয়োজন হয়। এই কারণেই 'কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ' তৈরি করেছি আমার।
প্র: 'কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ' সবার জন্য বিভিন্ন ধরনের পোশাক নিয়ে এসেছে। আপনি কীভাবে পছন্দ করেন নিজের ড্রেস?
কেয়া: আমি এতদিন যা ড্রেস ব্যবহার করে সেগুলির বেশির ভাগই আমার নিজের ডিজাইন করা। এছাড়াও আমার মেয়েকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত আমি নিজের ডিজাইন করা পোশাক পরাতাম। এই ভাবেই তৈরি হয়েছিল 'কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ'।
প্র: আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মহিলাদের চারদিক সামাল দিতে হয়। এই কম সময়ের মধ্যেও নিজেকে ঠিক রাখবেন কীভাবে তাঁরা?
কেয়া: কম সময়ের মধ্যে মহিলা নিজেদের সৌন্দর্য ঠিক রাখতে সবার আগেই মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এছাড়াও চুল ঠিক রাখতে ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই সৌন্দর্য বজায় থাকবে। এছাড়াও বাইরে বেরোনোর আগে সানসক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
প্র: কোভিড আক্রান্ত অনেক রোগীর দেখা গিয়েছে চুল ওঠে যেতে। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কি কোনও উপায় রয়েছে?
কেয়া: কোভিড আক্রান্ত হলে অনেক সময় দেখা গিয়েছে শুধু চুল নয়, ত্বকের উজ্জ্বলতাও কমে যায়। চুলের ক্ষেত্রে প্রত্যেকদিন চুলে একবার করে ওয়েল ম্যাসাজ করতে হবে। আর রাতে ঘুমোনোর আগে প্রত্যেকদিন মুখের ত্বকে ময়েশ্চেরাইজার ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও জল বেশি করে খেতে হবে, চুলে দই ব্যবহার করতে পারেন, আর ডাবের জল খাওয়া যেতে পারে।
প্র: সাফল্যের পাঁচটা মূল মন্ত্র কী ?
কেয়া: সাফল্যের জন্য আগে দূরদর্শীতা প্রয়োজন। কী করতে হবে সেটা আগে প্ল্যান করতে হবে। ১. কোনটা তোমার জন্য সঠিক সেটা আগে ভেবে নিতে হবে। ২. কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, ৩. নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে সময় দিতে হবে। ৪. লোকের জন্য ভালো কাজ করার কথা চিন্তা করতে হবে। ৫. নিজের কাজের প্রতি সততা দেখাতে হবে।
প্র: আরও পাঁচ বছরে কী কী আসতে চলেছে 'কেয়া শেঠের' তরফ থেকে?
কেয়া: আরও পাঁচ বছরে কী কী আসবে সেটা এখনই আমার জানা নেই। কিন্তু আমি চাই আরও অনেক 'কেয়া শেঠ' গড়ে উঠুক। তাই যার বিউটিশিয়ানের ফিল্ডে কাজ করতে চান তাঁরা এগিয়ে আসুক নিজের স্বপ্ন পূরণ করুক।