স্ট্রেস ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স, ইউরিন লিকেজ কেন হয়?

স্ট্রেস ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স, ইউরিন লিকেজ কেন হয়? ইউরিন লিকেজ কি শুধু মহিলাদের রোগ? এই উপসর্গ কি কিডনির সমস্যার লক্ষণ? প্রস্রাবের অসংযম- এই সমস্যার প্রতিকার কিভাবে সম্ভব?  বিস্তারিত জানালেন, কনসালট্যান্ট গাইনোকলজিস্ট অ্যান্ড ল্যাপারস্কোপিক সার্জন ডাঃ সেবন্তী গোস্বামী (Dr Sebanti Goswami, Consultant Gynaecologist & Laparoscopic Surgeon)

কোনও সময় কাশতে গিয়ে বা জোরে কথা বলতে গিয়ে প্রস্রাবে অসংযম ঘটে, এই সমস্যাকে চলতি  কথায় বলা হয় ইউরিন লিকেজ।

হাঁচি, কাশি বা দৌড়ে যাওয়া, লাফিয়ে ওঠা, এমনকি জোরে কথা বললেও সেই স্ট্রেস থেকেও লিকেজ হয়, তাই এই সমস্যাকে বলা হয় স্ট্রেস ইউরিনারি ইনকনসিস্টেন্স। গর্ভধারন এবং প্রসবের পর ইউরেট্রাস স্ট্রাকচারের ইনজুরির জন্য হয়। মানে মেয়েদের ইউরেত্রা বা মূত্রনালীর তার কিছু সাপোর্টিং মেকানিজম আছে সেই সিস্টেমে যদি ডেলিভারির জন্য বা প্রেগনেন্সির কারণে নষ্ট হয়ে যায় বা দুর্বল হয়ে যায় তাহলেই যখন স্ট্রেস হয় ব্লাডারের প্রেশার ইউরেত্রার প্রেশারের থেকে অনেক বেশি হয়ে যায় কিন্তু যেহেতু ইউরেত্রার সাপোর্ট চলে গেছে সেই জন্য সেই চাপটা সে নিতে পারে না। তখনই এই সমস্যা হয়। মেনোপজের পরও এই সমস্যা হয়। ইস্ট্রাজেন হরমোন কমে যায় ফলে বার্থ ক্যানেল এবং তার আশেপাশের জায়গাগুলো আলগা হয়ে যায়। সেই জন্য সাপোর্ট আর রাখতে পারে না। তখন এই লিকেজের সমস্যা দেখা যায়।

আরও এক ধরনের ইউরিন লিকেজের সমস্যা আছে। সেটাকে বলা হয় আর্চ ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স । এই সমস্যায় একবার যদি প্রস্রাবের বেগ আসে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না এমনকি বাথরুম পর্যন্ত যাওয়ার সময়ও পাওয়া যায় না অনেক সময়। হাঁচি কাশির সমস্যার সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই। অনেক কারণে এই সমস্যা হতে পারে। কোনও সংক্রমন থেকে হতে পারে। আবার মূত্রাশয়ের পেশি তার অতি সক্রিয়তাতেও হতে পারে। মহিলারা মূলত এই দু ধরনের লিকেজ সমস্যায় ভোগেন। গর্ভধারণকালীন সময়ে এই সমস্যা বেশ সাধারণও।কিডনির সঙ্গে এই সমস্যার কোনও যোগ নেই। মূলত মূত্রথলি, মূত্রনালীর সঙ্গে সংযুক্ত।

এই সমস্যা এড়াতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। প্রেগনেন্সির পর নিজের স্বাভাবিক ওজনে ফিরে আসতে হবে। মেনোপজের কাছাকাছি থাকা মহিলাদেরও শরীর চর্চার মধ্যে থাকতে হবে। অতিরিক্ত চা কফি, এলকোহল গ্রহণ কমাতে হবে। প্রয়োজনের থেকে বেশি জল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটাও কমাতে হবে। ডেলিভারির পর ও মেনোপজের সময় চিকিৎসকরা এক্সারসাইজের পরামর্শ দেন। এই পরামর্শ মেনে চলা উচিত। লিকেজ সমস্যাকে অনেকেই খুব স্বাভাবিক ভাবে নেন। বিশেষ করে বয়স্ক মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা খুব বেশি।

স্ট্রেস ইউরিন ইনকগনিটেন্স এর নিরাময় করতে সার্জারি আর লেজার ট্রিটমেন্ট বা রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ট্রিটমেন্ট করা হয়। অপারেশন শেষ বিকল্প। লেজার থেরাপি আউটডোর প্রশিডিওর হিসেবে হয়। যন্ত্রণাহীন। এনাস্থেশিয়া করা হয় না। রোগী থেরাপির পর নিজে গাড়ি চালিয়ে বাড়িও যেতে পারেন। সময়ও লাগে অনেক কম। তবে একেবারে সিভিয়ার কেসে রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ট্রিটমেন্টের বদলে সার্জারির প্রয়োজন হয়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...