'জিয়ো আড্ডা উইথ অনিন্দিতা সরকার' শোয়ে আজ অতিথি বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে বসন্ত উৎসবের প্রাক্কালে চূড়ান্ত ব্যস্ততা সামলেও দর্শকদের মুখোমুখি তিনি। শিল্পী জীবন আর ‘দীক্ষামঞ্জরী’র সফর কাহিনি শুনুন তাঁর মুখে ।
প্রঃ দোলের আগে একটা প্রোগ্রাম, প্রোগ্রামে কী হচ্ছে?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ যারা একা থাকে, সেভাবে দোল সেলিব্রেটের সুযোগ পায় না, বাচ্চা বাচ্চা মেয়েরা অনেকেই পাড়ায় বেরিয়ে দোল খেলার সুযোগ নেই, স্কুলে দোলের প্রোগ্রাম হয়, কিন্তু সেখানেও বেশি আবির খেলা যায় না, অল্প একটু আবির হয়ত গালে লাগালো। তাদের দোলের আনন্দের স্বাদ দিতে এই আয়োজন।
প্রঃ জাদুঘরেই কেন?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ আমরা জাদুঘরের সঙ্গে শেষ কয়েক বছর ধরে অনুষ্ঠান করছি। আগে বাড়িতে করতাম। এখন সেখানে জায়গা কম। তাই এখানেই করি। আর মনে হয় জাদুঘরের লোকেদের ভালও লাগে। এখানে এমন নয় যে শুধু দীক্ষা মঞ্চরীর মেয়েরা পার্টিসিপেট করে, একটা ওয়ার্কশপও হয়। মিউজিয়ামে যারা আসে, ইন্টারেস্ট দেখায় তারা অংশ নেয়। আগে হয়ত নাচত, এখন ছেড়ে দিয়েছে তেমন মানুষও আসেন।
প্রঃ তুমি দেশে-বিদেশে প্রচুর পারফর্ম করো, এই যে জার্নি, নাচটা কি তোমার ছোটবেলার ভাল লাগা?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ মা আমাকে ছোটবেলায় নাচ-গান-ড্রইং সব কিছুতে দিয়েছিল। আমার নাচটাই ভাল লেগেছে। গুরু কেলুচরণ মহাপাত্র আমার আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন নাচ সম্পর্কে।
প্রঃ তোমার কি মনে হয় এখন যে শোগুলো হয়, রিয়েলিটি শো, সেখানে নাচ গান সবই কন্টেম্পোরারি, আমাদের নাচের যে ট্র্যাডিশনাল ফর্ম সেটার চর্চা হচ্ছে?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যে রেওয়াজ দরকার। হুট করে ক্লাসিক্যাল শিল্পী হওয়া যায় না। কন্টেম্পোরারি ফর্মটা সহজ, শাস্ত্রীয় নৃত্য ভাল লাগার জন্য একটা টেস্টেরও দরকার হয়। কিন্তু তুমি যদি রাগ আর পাল্টা রেওয়াজ করো তোমার গলাটা ভাল হবে। যদি এমনি গান করা হয় গলটা অত পাকা হবে না। কন্টেম্পোরারি ভাল কিন্তু আমি একটা কথা বলব যারা রিয়েলিটি শোয়ে ফার্স্ট বা সেকেন্ড হচ্ছে বা প্রথম ১০ জনে পড়ছে তারা কেউ বিরজু মহারাজজী হয়ে যায়নি। তবে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আরও কিছু বছর রেওয়াজ করে তাহলে বড় হতে পারবে।
প্রঃ ‘দীক্ষা মঞ্জরী’ নিয়ে তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ আমার কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থাকে না। এরকমই সবার সঙ্গে নাচগান, ক্লাস হয়, অ্যানুয়াল শো হয়, দোলে বড় প্রোগ্রাম করি, বাইরে শো করতে যাই, সবই চলে।
প্রঃ সানা তো খুব ভাল নাচে...
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ হ্যাঁ, কিন্তু ও এখন আর নাচ করছে না, লন্ডনে পড়াশোনা করছে। ছোটবেলায় নাচে ওর খুব ইন্টারেস্ট ছিল, এখন যত বড় হচ্ছে তত ইন্টারেস্ট কমে যাচ্ছে। আবার ইন্টারেস্ট হলে আবার আমাদের সঙ্গে করতে পারবে।
প্রঃ ‘ডোনা গাঙ্গুলী’ মানে আমরা জানি ‘নাচ’, কিন্তু এছাড়া আর কী ভাল লাগে?
ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ঃ খুব একটা সময় পাই না। সংসার, সানাকে দেখে, এখন অবশ্য একটু সময় হয়েছে। কারণ সানা বিদেশে, আমি কলকাতায় আছি। নাচ ছাড়া অন্য কিছুতে সময় পাই না।
কোভিদের যেমন মাইনাস পয়েন্ট অনেক, কিছু প্লাস পয়েন্ট ছিল। আমাদের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে লন্ডন, দোহা, আমেরিকা, বাংলাদেশে এরকম নানা জায়গায়। ওদের টাইম অনুযায়ী ক্লাস নিতে হয়। তাতেও অনেকটা সময় নিয়ে নেয়। আগে যেমন শুধু শুক্র-শনি-রবিবার ক্লাস ছিল এখন সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস।