আশির দশকের বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী। সিনেমার পাশাপাশি 'বিশে জুন'-এর মতো চর্চিত নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। মাত্র চার বছর বয়স থেকে শুরু হয়েছিল অভিনয় জীবন। কেমন ছিলসেই জীবনের শুরুয়াত, সেই কাহিনি জিয়ো বাংলার আড্ডা উইথ অপ্সরা অনুষ্ঠানে শেয়ার করলেন অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী।
প্র: আজকের দিনে একটা হিট মুভি তৈরি করতে হলে একটা আইটেম নাম্বার থাকা জরুরি। এক সময় আপনার 'বিবি পায়রা' গানটা খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই এক্সপিরিয়েন্সটা কেমন ছিল?
পাপিয়া অধিকারী: তখন আইটেম নাম্বার বলে কিছু ছিল না। যে কোনও গানেই হিরোইনদেরকে পারফর্ম করতে হত। তখন তো ডিস্কো ছিল না তাই দুর্গাপুজো আর কালীপুজোর প্যান্ডেলে এই গানগুলো বাজানো হত।
প্র: আপনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। আপনার কলেজ লাইফটা কেমন ছিল?
পাপিয়া অধিকারী: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় একটা দারুন জায়গা। ওখানে ভুল-ভাল আড্ডা কম হতো। ওখানে পড়াশোনা করলে অনেক কিছু জানতে পারবে। আমাদের পড়াশোনার বাইরেও অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হত। আমি সাউথ পয়েন্টে পড়তাম। সেখানেও পড়াশোনা পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলামে অংশগ্রহণ করতাম আমি। নাচ, গান, কবিতা লেখা সব কিছুই করতাম আমরা।
প্র: আপনার মা কল্যানী অধিকারীর মতো আপনিও বহুদিন ধরে থিয়েটার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কিন্তু আপনার অভিনয় জগতে আসার জার্নিটা কেমন ছিল?
পাপিয়া অধিকারী: ছোটবেলা থেকেই আমি থিয়েটার করতাম। তাছাড়াও আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন রেডিয়োতে কাজ করতাম। চার বছর বয়স থেকে অ্যাক্টিং করা শুরু করে ছিলাম। যখনই আর্টিস্ট কম পড়ে যেত, তখনই আমাকে ডাকা হতো। একবার এক নৃত্যানুষ্ঠানে এক জনের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাকে তার জায়গায় নাচতে বলা হয়েছিল। মা আমাকে নাচটা শিখিয়ে ছিল। আমার মা, মায়ের বাবা আর এখন আমার মেয়ে থিয়েটারে অভিনয় করে।
প্র: আপনি অনেক থিয়েটার ও নাটক করেছেন। কিন্তু আপনার রিমার্কেবেল নাটক ছিল 'বিশে জুন'। এই নাটকে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
পাপিয়া অধিকারী: বিরাট একটা স্ক্যামের উপর নাটকের গল্পটা লেখা হয়েছিল। সেই সময় অরুন্ধতী বন্দোপাধ্যায়ের নাট্য দলে আমি অভিনয় করতাম। তাদের নাট্য দল থেকেই আমাকে 'বিশে জুন' নাটকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমাকে বলা হয়েছিল এটাকে একটা রাজনৈতিক নাটক হিসেবেই দেখতে।
প্র: আপনি বাংলার পাশাপাশি তামিল, তেলেগু, ওড়িয়া, ভোজপুরী ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছেন। কেমন ছিল সেই এক্সপিরিয়েন্স?
পাপিয়া অধিকারী: আমি তিনটে বাংলা ছবি করার পর কখনও ওড়িয়া আবার কখনও ভোজপুরী ছবিতে অভিনয় করেছি। এই জন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।
প্র: আপনি বহু বছর টিভি সিরিয়ালে কাজ করেছেন।
সেটার এক্সপিরিয়েন্স কেমন? আর এখন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে যে পরিবর্তন এসেছে সেই বিষয়ে আপনি কী বলবেন?
পাপিয়া অধিকারী: এখন সবাই অভিনেতা-অভিনেত্রী হয়ে যাচ্ছে। অভিনয় তো দু-তিন দিনে শেখানো যায় না। কিন্তু এটা ঠিক যে টেলিভিশন এখন একটা বড় মাধ্যম।
প্র: কোথাও কী আপনার মনে হয় থিয়েটারের জনপ্রিয়তা কমে আসছে?
পাপিয়া অধিকারী: যারা থিয়েটার দেখার তারা থিয়েটার দেখবেই। এখানে না দেখলে বিদেশে গিয়ে দেখবে। থিয়েটার হল পঞ্চম বেদ। তাই থিয়েটার দেখা ছাড়বে না। থিয়েটার হল লাইভ পারফরমেন্স। তাই থিয়েটার কোনও দিন যাবে না।
প্র: আপনি অনেক ছোটবেলা থেকেই প্রেম করেছ। আপনার সেই গল্পটা শেয়ার করুন আমাদের সঙ্গে।
পাপিয়া অধিকারী: আমার দুই দাদার বন্ধুরা আসতেন আমাদের বাড়ি। তাদের প্রত্যেকের আমাকে খুব ভালো লাগতো। কিন্তু আমি যাকে বিয়ে করেছি সে এখানকার ছেলে নন। ওর বাড়ি জামশেদপুরে। আমার দিদির বিয়েতে আমাদের ইনি আমাদের বাড়ি এসেছিলেন। আমার ওকে দেখে খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু আমি প্রথমে কিছুই বলিনি। তবে একদিন ও নিজেই আমাকে প্রোপজ করেছিল।
প্র: আপনার আপকামিং প্রজেক্টগুলো কী?
পাপিয়া অধিকারী: পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে ইন্ডিপেডেন্ট ছবি করছি। এছাড়াও একটা ফিচার ফিল্ম নিয়ে কাজ করছি। যেটা পুরোটাই বেদান্ত নিয়ে।
এবার র্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী
প্র: আপনি কী ফুডি?
পাপিয়া অধিকারী: না।
প্র: আপনার ফেভারিট পাস টাইম কী?
পাপিয়া অধিকারী: আমি পড়ি এবং লেখালিখি করি।
প্র: রেনি না সানি পার্সন?
পাপিয়া অধিকারী: রেনি ডে ভালো লাগে।
প্র: লং ওয়াক না লং ড্রাইভ?
পাপিয়া অধিকারী: লং ড্রাইভ।
প্র: মুভিজ, টিভি সিরিজ না ওয়েব সিরিজ?
পাপিয়া অধিকারী: মুভিজ তো নিশ্চয়ই।