ম্যাজিক বলতেই লোকে জানে ‘পি সি সরকার জুনিয়র’

ম্যাজিক বা যাদু কথাটা বললেই বাঙালির সবচেয়ে আগে মনে পড়বে সরকার পরিবারের কথা। সরকার পরিবারের যাদু সাম্রাজ্যের ঐতিহ্য উত্তরাধিকারের যথার্থ ধারকবাহক তিনি। জুনিয়র পি সি সরকার। পুরো নাম প্রদীপচন্দ্র সরকার। এক সময় অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বাবা পি সি সরকারের মতোই ‘ম্যাজিশিয়ান’ হওয়ার স্বপ্ন ছিল ছোটবেলা থেকে। কিন্তু যাদুর দুনিয়াতে পা রাখা তেমন সহজ ছিল না। বহু কঠিন পার হয়ে তবেই তৈরি পৌঁছতে পেরেছিলেন কাঙ্খিত গন্তব্যে। সেই গল্পই এবার জিয়ো বাংলার আড্ডা উইথ অপ্সরা অনুষ্ঠানে তুলে ধরলেন ম্যাজিশিয়ান জুনিয়র পি সি সরকার ।

প্র: আপনার প্রথম ম্যাজিক শো হয়েছিল ১৯৬৩ সালে।

পি সি সরকার জুনিয়র: না আমার প্রথম ম্যাজিক শো ১৯৪৬ সালে। আমার জন্ম হয়েছিল সেটার আমার প্রথম ম্যাজিক।

প্র: আপনি যখন প্রথম লাইম লাইটে এলেন সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

পি সি সরকার জুনিয়র: অসাধারণ ছিল। আমি প্রথম থেকেই ম্যাজিক শো দেখানোর সময় বাবাকে সাহায্য করে এসেছি। কিন্তু সেই সময় কেউ আমাকে চিনতেন না। কলেজে সবাই আমাকে দেখিয়ে বলতেন যে, আমি পি সি সরকারের ছেলে। তাই যখন প্রথম শো করেছিলাম সেই অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম শো করবো বলে। সেই সময় শিলিগুড়িতে আমার বাবার দলের এক সদস্য থাকতেন যাঁর নাম মানিক ঘোষ। আমি তাঁর বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলাম। সেখানে রেলওয়ে ইনস্টিটিউটে প্রথম ম্যাজিক শো দেখিয়ে ছিলেন তিনি। সবচেয়ে বেশি দামের টিকিট ছিল ১৯ পয়সার। অনেক মানুষ আমার শো দেখতে এসেছিলেন। তারপর একজন আমাকে দার্জিলিংয়ে শো করবার জন্যে ডাকলেন। কিন্তু আমার শর্ত ছিল আমাকে গাড়ি করে নিয়ে যেতে হবে।

প্র: বাবা ছাড়া আপনি কী এমন কোনও ম্যাজিশিয়ানকে দেখেছেন যে আপনাকে উদ্বুদ্ধ করেছে?

পি সি সরকার জুনিয়র: তাঁর পায়েও হাত দিয়েছি আমি। তাঁকে স্বীকারও করেছি যে তিনি আমার বাবার চেয়ে বেটার। তিনি হলেন আমার মা। বাবা কত দাপুটে লোক ছিলেন কিন্তু মায়ে সামনে কেঁচো হয়ে যেতেন। তবে আমার বাবা, মা ঈশ্বরের থেকেও বেশি।

প্র: আপনি অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজির ছাত্র। কখনও মনে হয়েছে ম্যাজিক ছাড়া অন্য কিছু করবো?

পি সি সরকার জুনিয়র: অন্য কিছু করার কথাও ভেবে ছিলাম। কিন্তু শেষে ম্যাজিকটাই বেছে নিতে হল।

প্র: আপনার বাবা চলে যাওয়ার পর এই লেগেসিটা কন্টিনিউ করার দায়িত্ব আপনার কাঁধে এসে পড়ল। সেটা আপনি কীভাবে ম্যানেজ করলেন?

পি সি সরকার জুনিয়র: এটা আমার কপালে লেখা রয়েছে। এটা প্রকৃতির ড্রামা। সূর্য ডুবে যায় আবার সূর্য ওঠে। এর বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই কারুর।

প্র: আপনার পোষ্য সিংহ সম্রাট সম্পর্কে কিছু বলুন?

পি সি সরকার জুনিয়র: ও আমার পোষ্য নয়, আমার ছেলে। এক সময় আমাদের এই ঘরেই সম্রাট ঘুরে বেড়াত। জল তেষ্টা পেলে আমার কাছে এসে গাল চাটত। আমি তারপর ওকে জল দিতাম। আবার এখন একটা কাঠবেড়ালি এসেছে। আমার মেয়ে তার নাম রেখেছে শুড়শুড়ি।

প্র: জয়শ্রী ম্যামের সঙ্গে আপনার খুব মধুর সম্পর্ক। আপনাদের আলাপ কীভাবে হয়েছিল?

পি সি সরকার জুনিয়র: আমাদের কলেজ লাইফে আমার প্রত্যেকটা বন্ধুর একটা করে ইয়ে ছিল। এই ‘ইয়ে’টার মানে আমি জানতাম না। কিন্তু এক দুর্গা পুজোর সময় আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে জয়শ্রী আমার স্ত্রী হবে। আমি জয়শ্রীকে তখুনি গিয়ে বলে দিয়েছিলাম কথাটা। ও তখন রেগেও গিয়েছিল।

প্র: আপনি ফুডি? আপনার ফেভারিট কুইজিন কী?

পি সি সরকার জুনিয়র: হ্যাঁ, আমি ফুডি। ফেভারিট কুইজিন সেটা, যেটা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে।

প্র: টি না কফি?

পি সি সরকার জুনিয়র: চা-ফি।

প্র: নাইট পার্সন না আর্লি মর্নিং?

পি সি সরকার জুনিয়র: দিন শুরু হল না আমার। শুরুর অপেক্ষায় রয়েছি।

প্র: রেনি না সানি?

পি সি সরকার জুনিয়র: বৃষ্টি আমি খুব ভালোবাসি।

প্র: টিভি সিরিজ না ফিচার ফিল্ম?

পি সি সরকার জুনিয়র: একটাও না।

প্র: সোশ্যাল মিডিয়াতে কতক্ষণ সময় কাটান?

পি সি সরকার জুনিয়র: যতক্ষণ চোখ অ্যালাও করে।

প্র: ফ্রি টাইমে কী করেন?

পি সি সরকার জুনিয়র: ফ্রি টাইম আমার থাকে না।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...