ছোটবেলায় হিন্দি ছবি দেখে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। জেভিয়ার্সে ছাত্র থাকাকালীন থিয়েটার দিয়েই অভিনয় শুরু। বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ নীল ভট্টাচার্য। প্রথম ধারাবাহিক 'ঠিক যেন লাভ স্টোরি'। কিন্তু 'কৃষ্ণকলি' ধারাবাহিকে অভিনয় করেই দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। জিয়ো বাংলার আড্ডা উইথ অপ্সরা অনুষ্ঠানে আড্ডা দিতে এসে নিজের জীবনের অজানা গল্প শেয়ার করলেন অভিনেতা।
প্র: তুমি সকলের কাছেই পরিচিত। বিশেষ করে মহিলারা তোমার সবচেয়ে বড় ভক্ত। তাই কেমন লাগে এই ব্যাপারটা?
নীল: "সো কাইন্ড অফ ইউ টু সে লাইক দ্যাট"। লাস্ট আট বছর ধরে আমি সিরিয়ালে আছি। বিকেলে টেলিকাস্ট হয়। আমার ওয়েল উইশাররা যে দেখে সেটাই আমার কাছে বড় পাওয়া।
প্র: তুমি আট বছর ধরে সিরিয়াল করছ, তোমার কী প্ল্যান রয়েছে ওটিটিতে কাজ করার?
নীল: সেভাবে প্ল্যান করে কখনও অভিনেতা এগোতে পারে না। আমাদের এখানে ভালো কাজ করলে প্রোমোশন হবে সেরকম না। যে রকম কাজ আসবে সেরকমই কাজ করার চেষ্টা করব সেটা ওটিটি, বিগ স্ক্রিন, টেলিভিশন যেখানেই হবে।
প্র: তুমি অভিনয়কে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছ কেন? ফ্যামেলির সাপোর্ট কতটা ছিল?
নীল: আমার ফ্যামিলি অলওয়েজ সাপোর্টিভ। মা, বাবা দুজনেরই সাপোর্ট ছিল। ছোট বয়স থেকেই আমার অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা ছিল। ছোটবেলায় যখন 'দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে' সিনেমাটা দেখেছিলাম তখন ভেবেছিলাম আমিও বড় হয়ে এমন সুইজারল্যান্ডে গিয়ে শুটিং করব। তারপর স্কুলে থিয়েটার করা, কলেজে থিয়েটার করা। আমার মা, বাবা বলেছিলেন, প্রথমে তুমি নিজের স্টাডি কমপ্লিট করো, তারপর তুমি অভিনয় করো। অভিনয় এমন নয় যে তার জন্যে কোনও ডিগ্ৰি লাগবে। কিন্তু একজন মধ্যবিত্ত বাঙালির ঘরের ছেলের সব সময় চিন্তা থাকেই যে, বাই চান্স যদি অ্যাক্টিং ক্লিক না করে তারপর কী হবে? তাই আগে পড়াশুনা করার পরেই আমি এসেছি এখানে।
প্র: তুমি জেভিয়ার্সের প্রাক্তন ছাত্র। তাই জেভিয়ার্স এমন জায়গা যেখান থেকে তুমি অভিনয় জগতে আসার কথা ভেবেছিলে?
নীল: আসলে জেভিয়ার্স হল এমন একটা জায়গা যেখানে যে খুব ভাল পড়াশোনা করতে চায় সে ভালো পড়াশোনা করতে পারবে। যে পরিচালনা বা অভিনয় করতে চায়, সেও করতে পারবে। আসলে জেভিয়ার্স তোমার ভিশনটাকে বড় করে। যখন আমি জেভিয়ার্সে থিয়েটার করতাম তখন আমি অনেক কিছু শিখেছি। ওভারঅল বিল্ডিংয়ের জন্য জেভিয়ার্স খুব ইম্পর্টেন্ট ছিল।
প্র: তুমি সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব অ্যাকটিভ, প্রচুর রিলস আর অনেক পোস্ট করো। তুমি কী নিজেই হ্যান্ডেল করো তোমার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট?
নীল: হ্যাঁ, আমি নিজেই হ্যান্ডেল করি। এখনও পর্যন্ত আমার কোনও ম্যানেজার নেই। রিল করতে ভালো লাগে তাই পোস্ট করি।
প্র: তোমার জন্য 'কৃষ্ণকলি' সিরিয়ালটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
নীল: 'কৃষ্ণকলি' আমার লাইফের একটা গেম চেঞ্জার বলা যেতে পারে। একটা সিরিয়াল চার বছর চলা সাধারণ ব্যাপার না। অ্যাক্টর হিসেবে আমার জন্য সত্যিই একটা গেম চেঞ্জার।
প্র: এমন কোনও জনরা রয়েছে যেটা তুমি এক্সপ্লোর করতে পারনি?
নীল: অনেক কিছুই বাকি। কারণ সিরিয়ালে আমি সাধারণত একটা ভালো ছেলের চরিত্র অভিনয় করি। তাই আমার থ্রিলারে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।
প্র: যখন আস্তে আস্তে মানুষ চিনতে শুরু করল। সেই মুহুর্তটা কেমন ছিল?
নীল: মানুষ চিনলে আমারও ভালো লাগে। কারণ মানুষের চেনা মানে তারা আমার কাজ দেখছে। তাই ভালো লাগে। কিন্তু এখনও অনেক শেখা বাকি।
প্র: তোমার আর তৃণার আলাপ কীভাবে? প্রেমের শুরু কীভাবে হয়েছিল?
নীল: আমরা দশ-এগারো বছর ধরে একে অপরকে চিনি।এম.বি.এ করার সময় ক্যান টিউশন নিতে হয়ে। সেখান থেকেই আমাদের আলাপ। তবে প্রেম পরে এসেছে প্রথমে বন্ধুত্ব হয়েছিল। ও দিল্লিতে এম.বি.এ পড়তে গিয়েছিল কিন্তু আমি কলকাতায় এম.বি.এ পড়েছি। তারপর আমি অভিনয় শুরু করেছিলাম। তবে দিল্লী থেকে আসার পর ও অ্যাজ অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ শুরু করে। পরে অবশ্য আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
প্র: নীল স্বামী হিসেবে কেমন?
নীল: খুবই বাজে হয়তো। তবে যে আমাকে সহ্য করছে সে বলতে পারবে। কিন্তু চেষ্টা করি ভালো হওয়ার।
প্র: সাধারণত এক ইন্ডাস্ট্রির কাউকে বিয়ে করতে চায় না। কিন্তু তোমরা এক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছ। কী মনে হয়, এটার কোনও খারাপ ও ভালো দিক রয়েছে?
নীল: আমার মনে হয় পুরোটাই একটা সাইকোলজিকাল ব্যাপার। এই ইন্ডাস্ট্রি, চারটে নতুন ইন্ডাস্ট্রি এমন হয় না। সব কাপলদের মধ্যেই ঝগড়া হয়। তাই এই সিচুয়েশন সামলানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেয় সবাই। তাই একে অপরের সঙ্গে থাকাটাই সবচেয়ে বেশি ইম্পরটেন্ট।
প্র: বাড়িতে দুজনে যখন এক সঙ্গে থাকো তখন কী নিয়ে আলোচনা করো?
নীল: কথাবার্তার থেকে বেশি আমরা দুজনে চিল করতে পছন্দ করি। সব সময় এক সিনেমা, সিরিজ দেখি।
প্র: আপকামিং কী প্রজেক্ট শুরু হবে তোমার?
নীল: আপাতত 'উমা' চলছে। এছাড়াও কিছু প্রজেক্ট আসবে।
প্র: নীল ইমোশনাল?
নীল: আমি ইমোশনাল। কিন্তু ইমোশানটা নিজের মধ্যেই রাখতে পছন্দ করি।
প্র: রেগে যাও?
নীল: আমি একদমই রেগে যেতে পারি না।
প্র: তোমাদের মধ্যে ঝগড়া হলে কে আগে সরি বলে?
নীল: তৃণা।
প্র: কে আগে প্রোপজ করেছে?
নীল: দুজনেই জানতাম ব্যাপারটা।
প্র: তুমি অগোছালো?
নীল: হ্যাঁ, অগোছালো।
প্র: তুমি কতটা রোমান্টিক?
নীল: বলিউডের সিনেমা দেখে বড় হয়েছি তো। তাই রোম্যান্সটা সব সময় ছিল।
প্র: টি পারসন না কফি পারসন?
নীল: দুটোই খাই না।
প্র: লং ড্রাইভ না লং ওয়াকস?
নীল: লং ড্রাইভ।
প্র: নাইট আউল না আর্লি রাইজার?
নীল: আমি যখন চাই রাত জাগতে পারি আবার যখন চাই তখন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যেতে পারি।