হাতি বেরিয়েছিল তাই বোলপুরে আটকে গিয়েছিল ‘শ্বেতকালী’র শ্যুটিং!

থ্রিলার, প্রেম, আর গা ছমছমে সুপার ন্যাচারাল কান্ড- তিনে মিলে তৈরি হয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘শ্বেতকালী’। ২৪ ফেব্রুয়ারি এসেছে ওটিটির পর্দায়। পরিচালনায় সানি ঘোষ রায়।   রহস্যময় সাদাকালী নিয়ে কাহিনি, বোলপুরে শ্যুটিং করতে গিয়ে ঘটেছিল হাতির উৎপাত, জঙ্গলে জঙ্গলে শ্যুটিং, কেমন ছিল সেসব অভিজ্ঞতা? সেই কাহিনি নিয়ে আজ টলিকথার আড্ডায় অতিথি ঐন্দ্রিলা সেন এবং সাহেব ভট্টাচার্য। শ্যুটিং ফ্লোরের জমজমাট গপ্পো শুনুন তাঁদের মুখে।

প্রঃ রিলিজ করেছে ‘শ্বেতকালী’ দর্শকদের মধ্যে বেশ ভাল রেসপন্স পেয়েছে, কেমন লাগছে?

সাহেবঃ ভাল রিঅ্যাকশনের এক্সপেক্টেশন তো একটা ছিলই। যে জোনটাতে এই সিরিজটা তৈরি হহয়েছিল সবাই সেটা নিয়েই কথা বলছে, যে থ্রিলার তো সবসময় ওয়েব সিরিজ হিসেবে দেখেছি কিন্তু ধর্মান্ধতা, অন্ধবিশ্বাস ঘিরে থ্রিলার, এটাই শ্বেতকালীর টুইস্ট। এগুলোই খুব ভালভাবে ওয়াক করেছে। এক্সপেক্টেশন ফুলফিল হয়েছে।    

প্রঃ ‘শ্বেতকালী ‘ সাদা কালী, একেবারে অন্যরকম একটা কনসেপ্ট, ধর্মের ব্যাপার মানেই সেনসিটিভ ইস্যু, তো মরা ভেবেছিলে এরকম একটা বিষয় নিয়ে কাজ করবে?

ঐন্দ্রিলাঃ দ্যাখো, সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে কাজ করতে আমার অসুবিধা নেই। আল্টিমেটলি আমরা বিষয়টা অভিনয়, সেটা রিয়েল লাইফ তো নয়! আমার একটা কথাই বলতে ইচ্ছে করছে যে এন্টারটেইনমেন্টটা এন্টারটেইনমেন্টের মতো রাখলে বেটার।

আর অন্যকম কনসেপ্ট বলতে প্রথম যখন আমি ‘শ্বেতকালী’র কথা শুনলাম তখন ভেবেছিলাম যে একটা নাম হবে বোধহয়, পরে জানলাম ‘শ্বেতকালী’ আসলে সাদাকালী। অনেকে দেখেওছে সেই মূর্তি, কিন্তু আমি কখনও দেখিনি, শ্যুটে গিয়ে দেখলাম প্রথম।

আর একটা ব্যাপার থ্রিলারের অনেক মোড থাকে, অ্যাপ্রোচ কীভাবে করছ সেটাই ব্যাপার। সেখানেই আমরা অন্যরকম।

সাহেবঃ যখনই থ্রিলার তৈরী হয় কিছু কিছু সাবজেক্ট আছে যেগুলো ম্যাটার করে, দেখে একটু নড়েচড়ে বসে মানুষ। যখন ধর্ম বা এই ধরনের জিনিস চলে আসে তখন আনকমফোর্টেবল হয়ে যায়, সেটাই ইন্টারেস্টিং। দর্শক যখন দেখছে তখন সে হয় লাইনটা মেনে নিয়ে দেখছে, নয়ত বিরোধীতা করে দেখছে- এটা একটা অ্যাডেড বুস্ট আমাদের থ্রিলারের জন্য।

প্রঃ ঐন্দ্রিলাদি, প্রথম ওয়েব সিরিজে কাজ করে কেমন লাগল ?

ঐন্দ্রিলাঃ খুব ভাল লেগেছে, কারণ আমি অনেক বছর সিরিয়াল করেছি, পরে সিনেমা; কিন্তু দু’জায়গাতেই একটা টাইম ফ্যাক্টর কাজ করে। ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের ক্ষেত্রে যদি এক্সপ্রেশন ধরে রাখার কারণে সময় বেড়েও যায় তাতে অসুবিধা নেই। সেই স্পেসের জায়গাটা আমরা এক্সপ্লোর করেছি। অ্যাক্রোপলিসের টিম খুব ভাল ছিল।

প্রঃ সাহেবদা, হিরো হয়েও এখানে তুমি ভিকটিম, কেমন লাগল অন্যরকম চরিত্রে অভিনয় করে?

সাহেবঃ এটা দর্শক বলবে। অভিনেতা হিসেবে নিজেকে এক্সপ্লোর করার সুযোগ আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে খুব কম পাই, যেটুকু সুযোগ পাই সেটা দিয়েই সাধারণকেও ইউনিক করে তোলার চেষ্টা করি আমরা।

প্রঃ বাঙালি যা যা ভালবাসে সব রয়েছে এই থ্রিলারে, তাই দর্শকদের ভালবাসা পাচ্ছে, তোমাদের কতটা ভচাল লাগছে?

ঐন্দ্রিলাঃ দ্যাখো, আমি যখন যে কাজটা করি সেখানে নিজের ১০০ শতাংশ দিই, এমনকি নিজের সিলেকশন ভুল হয়েছিল এটা বুঝে গেলেও নিজের ১০০ শতাংশ দিই, কারণ কাজ বাছা ভুল হতে পারে, তাবলে কাজের প্রতি অন্যায় করব না, এটা ছোট থেকেই করি। সেখানে ‘শ্বেতকালী’ আমাদের পছন্দের প্রজেক্ট , মনের মতো সাবজেক্ট, তখন ২০০ শতাংশ দিয়েছি। আগে সিরিজের অফার পেয়েছি, কোনওদিন করিনি; কেন করিনি নিজেকে জিজ্ঞেস করেছি।

যখন দেখলাম ‘শ্বেতকালী’তে সব আছে তখন নিজের ১০০ নয় ২০০ শতাংশ দিয়েছি। এটা আমি একা নই সিরিজের সঙ্গে যুক্ত সবাই করেছে। খুঁতখুতুনি এলেই সবাই মিলে স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসে যেত, সানিদা ধরে ধরে শ্যুটিং করত।

সাহেবঃ একটা প্রজেক্ট করতে গেলে যে যত্নটা থাকা দরকার, যেটা আগেকার সিনেমায় দেখতে পেতাম যে, কারণে তখন ছবি ভাল হত, সেই যত্নটা এই কাজটায় পেলাম।

ঐন্দ্রিলাঃ ‘যত্ন’ কথাটা বলতে মনে পড়ল, আমরা বোলপুরে শ্যুটিং করতে গিয়েছিলাম। ওখানে বেশ কয়েকদিন শুটিং হয়েছিল, কিন্তু আমাদের যে ইন্ট্রো সিনটা সেটা বোলপুর থেকে অনেক ভিতরের দিকে রাস্তায় শ্যুট হয়েছিল। খুব বেশি হলে ২ কি আড়াই মিনিটের শট হবে সেটা করতে আমরা পুরো টিম আবার গিয়েছিলাম ওখানে। প্রথমবার করতে পারিনি আমরা তখন হাতি বেরিয়েছিল, আর সানিদার ওই রাস্তাটাই লাগত।   

প্রঃ দর্শকদের উদ্দ্যেশ্যে কী বলবে ?

ঐন্দ্রিলাঃ দর্শকদের বলব, আর অপেক্ষা কীসের, তাড়াতাড়ি ‘শ্বেতকালী’ দেখে নিন। ভাল লাগলে আমাকে জানান, খারাপ লাগলে যার দায়িত্ব সে। আঙুলটা সাহেবের দিকে (হেসে)   

সাহেবঃ এখন তো কাজ শেষ, রিলিজও হয়ে গিয়েছে, আর আলাদা করে বলার কিছু নেই, ভাল লাগলে জানাবেন, খারাপ লাগলেও আমাদের জানাবেন। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...