‘সাহেবের চিঠি’, ‘সোহাগী সিঁদুর’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দর্শকদের মন্তব্য তাঁর কাছে পুরস্কারের মতো। নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় দেখে কেউ যদি তাঁকে ‘মন্দ’ বলে তাঁর মনে হয় অভিনেত্রী হিসেবে তিনি সার্থক। জীবনকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। জীবনযুদ্ধ শুরু হয়েছিল কিশোরী বয়সেই। বারবার ঝড় এসেছে তাঁর জীবনে। কখনও বাবার অসুস্থতা, কখনও সম্পর্কে ভাঙন, তিনি কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ। প্রতিবারই জীবনের প্রতি প্রবল বিশ্বাস আর প্রেমে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ধরা দিয়েছে সাফল্য। টেলিপর্দার- বড়পর্দার জনপ্রিয় মুখ অভিনেত্রী মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ‘টলিকথা’য় তাঁর মুখে শুনুন তাঁর জীবনের গল্প।
প্রঃ প্রেমের সপ্তাহে প্রেম নিয়ে কী বলবে?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ প্রেম নিয়ে একটা কথায় বলব, প্রেম ভাল। প্রেম করলে সব ভাল লাগে। সাজতে ভাল লাগে। আয়নার সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়াতে ভাল লাগে।
প্রঃ অভিনয়ে কীভাবে এলে?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে বাবা। সেন্ট্রাল গভঃ-এ চাকরি করতেন। তাঁর অসুস্থতাটা জ্বর, সর্দির মতো সাধারণ অসুস্থতা ছিল না। মানসিক সমস্যা হয়েছিল। বাবার ভয় করত খুব, বাড়ি থেকে বেরতে পারতেন না। অফিস যেতে পারতেন না। আমরা তিন বোন তখন সবাই ছোট।আমার মনে হয়েছিল আমার কিছু করা উচিত। সারভাইভ করার জন্য কিছু করতে হবে। একটা সময় আত্মীয়রা পাশ থেকে সরতে শুরু করল।
সেই সময় আমার নাচের টিচার সাহায্য করেছিলেন। তাঁর চেনা-জানা ছিল টলিউডে। তাঁর সাহায্যেই আমি ব্যাকআপ ডান্সার হিসেবে কাজ শুরু করলাম। ছোটবেলা থেকে বহু সিনেমায় কাজ করেছি ব্যাক আপ ডান্সার হিসেবে। তারপর একদিন বাবা সুস্থ হল। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক। ক্লাস এইটে পড়তে পড়তেই নাচের স্কুল করেছিলাম। বিয়ে হল। মা হলাম। টলিপাড়া আমাকে কখনও নিরাশ করেনি।
প্রঃ বড় পর্দার অভিজ্ঞতা কেমন?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ দ্যাখো, কাজ মানেই চ্যালেঞ্জের। সিনেমায় আগে স্ক্রিপ্ট পাওয়া যায়। চরিত্রটাকে নিজের মত ভাবার সুযোগ পাওয়া যায়। নিজের মতো করে তৈরী করা যায়। সিরিয়ালে সেই সুযোগ নেই। সেখানে সবটাই গরম গরম। মানে ইন্সট্যান্ট। ফ্লোরে গিয়ে হাতেস্ক্রিপ্ট। আমার মনে হয় সিরিয়ালে যারা অভিনয় করেন তাঁদের কাছে প্রতিটা দিন চ্যালেঞ্জের।
এবার ওয়ার্ড গেম রাউন্ড...
প্রিয় সিনেমা?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে
প্রিয় গোয়েন্দা?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ফেলুদা
প্রথম প্রেম?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ মেয়ে
সরস্বতীপুজো?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ হলুদ শাড়ী
সবচেয়ে খুশির দিন?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ৯ জুলাই, গরিমার (মেয়ে) জন্মদিন
প্রিয় বন্ধু?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ মা
ভ্যালেন্টাইন?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ভ্যালেন্টাইন মানে প্রেম
প্রঃ প্রেম নিয়ে কী অ্যাডভাইস দেবে?
মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ আমরা যারা নাইন্টিজ’র গান শুনে বড় হয়েছি তাঁদের কাছে প্রেমের অনুভূতি অন্যরকম। এখন বাচ্চারা অনেক অ্যাডভান্স। চটজলদি ডিসিশন নেয়। অ্যাডজাস্টমেন্ট ছাড়া প্রেম বা সংসার কোনওটাই হয় না। সেটা দু’জনকেই করতে হয়। ‘আমাকে এতটা ফটো পাঠাতে হবে তবেই বুঝব তুমি ভালবাসো’-এটা করো না। কারণ কার মনে কখন কী হয় কেউ জানে না। বাবা-মা’র সন্তানকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন থাকে।