ঋতব্রতর নাম শুনলেই কেন সবাই বলে ওঠে ‘ওরে বাবারে’!

রিল লাইফের হিরোইন তো অনেকেই কিন্তু তাঁর রিয়েল লাইফের হিরোইন কে? প্রতিদিন ক্লাসরুম থেকে টিচার কেন বের করে দিতেন ঋতব্রতকে? স্কুল লাইফের টপ সিক্রেট কী? নিজে ছবি পরিচালনা করলে হিরো বাছবেন কাকে? টলিকথা’র জমজমাট আড্ডায় ফাঁস হল অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাজার এক রহস্য।

প্রঃ বেশ কিছু দিন আগে ফেসবুকে তোমাদের একটা বন্ধু অডিশনের ছবি দেখা গিয়েছেল। তো ‘ওপেন টি বায়স্কোপ’ কি আবার ‘রি-ওপেন’ হবে?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ আসলে ছবিটা আট বছর কমপ্লিট হয়েছিল বলে তখনকার-এখনকার ছবি দিয়ে কোলাজ বানিয়েছিল। অনেকেই জিজ্ঞেস করেছে ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এর পরবর্তী পার্ট হবে কিনা। এটা তো প্রযোজক বা পরিচালকই বলতে পারবেন। অনিন্দ্যদা বলতে পারবেন, সুজিত সরকার যিনি প্রযোজক বলতে পারবেন। সত্যি কথা বলতে আমাদের বন্ধু বান্ধবের অ্যাসোসিয়েশন চেয়েছি যে ওপেন টি বায়স্কোপ-এর যদি আর একটা সিকুয়্যেল হয় আবার সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে পারবে। প্রচুর মানুষ চেয়েছেন বা প্রচুর মানুষ বলেছেন যে ওপেন টি বায়স্কোপ-এর পার্ট টু কবে আসবে। তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় যে ওপেন টি বায়স্কোপ-এর পার্ট টু অনেকেকেই যারা এক্সপেক্ট করছেন, তারা হয়তো চাইছেন ওপেন টি বায়োস্কোপ-এর মতনই আবার একটা সিনেমা হোক। কিন্তু গল্প নিয়ে করলে দেখা যাবে এরা অনেক বড় হয়ে গেছে বা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে গেছে। সেটা হয়তো এক্স্যাক্ট আর একটা ওপেন টি বায়স্কোপ হবে না। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় যদি এই সিদ্ধান্ত যদি কখনও হয় যে পার্ট টু হবে না তাহলে আমার মনে হবে ওই ওয়ানের ফ্লেভারটাকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যই সেটা হবে। যদি কোনদিন পার্ট টু হয়, হতে পারে গল্পটা এক এগিয়ে যাবে কিছু বছর বা হতে পারে সম্পূর্ণ অন্য বন্ধুদের গল্প হবে। দেখা যাক।

প্রঃ তোমার নতুন ছবি ‘প্রজাপতি’ নিয়ে যদি কথা বলি, এই চরিত্রটাতে তোমাকে একদম অন্যরকম দেখা গেছে। কিছুটা খোকা চরিত্রে দেখতে পেয়েছি আগে। এরকম চরিত্র একদম ডিফারেন্ট। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ ‘প্রজাপতি’ ছবিটি প্রথমেই একটাই কনফিউশন হয়েছিল নামটা নিয়ে। কারণ একদম চর্চিত উপন্যাস। এক সময় নিষিদ্ধ ছিল। আমি খুবই উত্তেজিত ছিলাম। সুব্রতদা নিজে এতবছর বাদে ছবি পরিচালনা করেছেন, এতবছর বাদে ছবি হবে ঠিক হয়েছে। কিন্তু শুধু যে ওইদিকটা নিয়ে, যে ‘ব্যান’ ছিল সেটার জন্যই এই ছবিটা করা হয়েছে,  তা একদমই নয়। এই ছবিটার মধ্যে একটা ভীষণ রকম পলিটিক্যাল-সোশ্যাল গল্প রয়েছে। আমি যে চরিত্রটা করছি, টুকু গুন্ডা বলে একটা চরিত্র। সত্যি একদম অন্য রকম একটা চরিত্র। তবে, উপন্যাসটি যারা পড়েছেন তারা হয়তো জানবেন যে এই চরিত্রগুলোর অনেকগুলো ‘শেড’ আছে। এরকম নয় যে তারা স্বেচ্ছায় গুন্ডা হয়েছেন, এরম কিছুই নয়। এক টাউনের এক ‘ইনফ্লুয়েন্সিয়াল’ কমবয়সী ছেলে, সে আস্তে আস্তে গ্যাংস্টার বা গুন্ডা হয়ে উঠছে। সেই দিকে গল্পটা গেছে। খোকার গল্পটা একদম রিয়েল লাইফ, একটা অন্যরকম চক্রের গল্প বলেছে। কিন্তু এই চরিত্রটা একদম একটা সফট চরিত্র। প্রজাপতি মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি ভীষণ ফ্রেশ, অনেস্ট একটা গল্প এবং খুব রও। একটা অরিজিন্যাল গ্যাংস্টারদের গল্প এটা।

প্রঃ গোয়েন্দা চরিত্রে কাজ করা হয়েছে, তাহলে বলও ব্যোমকেশ নাকি ফেলুদা?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ দ্যাখো, এমনিতে আমার মনে হয় যারাই সাহিত্য পড়েছে, তারা যদি অভিনেতা হন তাহলে সবসময় একটা ইচ্ছা থাকে যে কখনও বা কখনও একটা বাঙালি চরিত্র সেটা ব্যোমকেশ, ফেলুদা বা মিতিন মাসী হতে পারে, এরম অনেক চরিত্র আছে। আমার ব্যাক্তিগতভাবে মনে হয় প্র্যাকটিক্যালি  শারীরিক কিংবা কোনভাবেই আমাকে কোনও চরিত্রই মানাবে না। যেহেতু এতগুলো অ্যাডাপটেশন করা হয়েছে, সেটা এক্ষুনি আমি চাইব না এবং সেটা করার বয়সও নয় আমার। তবে একটা চরিত্র খুব ইন্টারেস্টিং সেটাও আমার সঙ্গেও মিল নেই, তবে সেটা করতে পারলে খুব মজা হত সেটা হচ্ছে ‘টেনিদা’।

প্রঃ ‘জেনারেশন আমি’-তে যেরকম একটা কঠিন বাবা কে দেখেছিলাম, তো বাস্তবে তুমি কতটা কঠিন পাও নিজের বাবাকে?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ বাবা এমনিতে ভীষণ ‘কুল’। যেহেতু বাবাকে আগে সবাই খলনায়ক হিসেবে দেখেছে, এমনিতে বাবা খুবই শান্ত এবং কথা কম বলে কিন্তু যখন বাবা পরিচিত মহলে থাকে তখন প্রচন্ড গল্প করতে ভালবাসেন। খুবই ফানি। আমি যখন বড় হয়েছি তখন বাবা একদম ‘জেনারেশন আমি’ বাবার মতন নয়। বাবা-মায়ের শাসনটা ভীষণ আসল বাস্তবটা বুঝিয়ে দেয়। অনেক বেশী ভরসার জায়গা তৈরি করে দিয়েছে।

প্রঃ তোমার বদমাইসির একটা বদনাম রয়েছে সবার কাছে, একেবারে সবাই শুনলে ‘ওরে বাবারে’ বলে ওঠে। পর্দার বাইরে তুমি কেমন?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ পর্দার বাইরে আমি খুব একটা কিছু করিনা। খুবই চুপচাপ এবং শান্তশিষ্ট। ছোটবেলায় আমি খুবই দস্যি ছিলাম। ওপেন টি বায়োস্কোপ- এর মেকিং-এ যেমন আছে আমি একদম সেরকম ছিলাম। তবে এখন আমি খুবই চুপচাপ। খুব পরিচিত মহল নাহলে খুব কম কথা বলি। প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া বলি না। কিন্তু পরিচিত মহলে আমি একদম ফাজিল, বন্ধুবান্ধবরা একসঙ্গে থাকলে বোঝাই যায় না কীভাবে সময় কেটে যায়। যে কারণেই এই ‘ওরে বাবারে’ কথাটা।

প্রঃ ঋতব্রতর নায়িকা হিসেবে আমরা অনেককে চিনেছি বিভিন্ন চরিত্রে। তোমার বাস্তবের নায়িকার সঙ্গে কবে দেখা করাবে?

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়ঃ কোন বাস্তবে নায়িকা নেই। খালি সিনেমাতেই আছে। এখন যেহেতু ‘প্রজাপতি’ মুক্তি পেয়েছে তাই আমার এখন নায়িকা, টুকু গুন্ডার নায়িকা হচ্ছে জিনা অর্থাৎ শ্রীতমা। বাস্তবে নায়িকা হলে জোর গলায় জানাবো, গর্ব করতে পারব।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...