নাকেল বলের আবিষ্কারক জাহির খান ?

২৩ মার্চ ২০০৩ দিনটা ভারতীয়দের কাছে একটা স্বপ্ন ভাঙার দিন। সেদিন বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রথম ওভারেই কিছুটা হলেও ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল ভারতের হাত থেকে। যতদূর মনে পড়ে প্রথম ওভারে পনেরো রান যোগ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার স্কোর বোর্ডে। সেদিনের ম্যাচে ৭ ওভারে ৬৭ রান দেন তৎকালীন ভারতের প্রধান পেস বোলার। জাহির খান। লেট্ এইট্টিস থেকে আর্লি নাইট্টিসদের কাছে ভারতের সেরা পেস বোলার বললে যে যার নাম প্রথমেই মনে উঠে আসবে সে নাম- জাহির খান। 

এরপর আবার ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেনেয় ভারত। ২০০৩ এর ফাইনালে সব থেকে বেশী রান দেওয়া সেই বাঁ হাতি বোলার ১০ ওভারে ৩টি মেডেন সহ দেন ৬০ রান। একই সঙ্গে তুলে নেন ২টি উইকেট। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্ব খেলে হারের জ্বালাটা জাহির ৮ বছর পর বিশ্বকাপ জিতে পুষিয়ে নিয়েছিলেন।

নিজের বোলিং উন্নত করার জন্য, জহির খান ২০০৬ সালে অল্প সময়ের জন্য ইংল্যান্ডের ওরচেস্টারশায়ারের চলে যান। একজন বাঁ-হাতি ফাস্ট-মাঝারি বোলার, তিনি উইকেটের বাইরে এবং সুইং উভয় দিকে বল সরানোর ক্ষমতার জন্য সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। পুরানো বল কিছুটা গতিতে। জহির খান পুরানো বলে রিভার্স সুইংয়ে দুর্দান্ত।

২০০৩, ২০১১ —বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি জাহির খানের ওয়ান ডে-তে সংগ্রহ ২৮২। সংখ্যাতত্ত্ব বলছে কপিল দেবের পর জাহিরই ভারতের সর্বকালের সেরা পেস বোলার। পরে অবশ্য তাকে স্পর্শ করে ঈশান্ত শর্মা। জহির খান তার ঘরোয়া ক্যারিয়ার শুরু করেন বরোদায়। তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে, জহির খান তার প্রতিকূল সীম এবং পেস বোলিং, বিশেষ করে দ্রুত ও নিখুঁত ইয়র্কারের জন্য পরিচিত ছিলেন। জহিরের ৪৪ টি বিশ্বকাপ উইকেট রয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বিস্তৃত, গ্লেন ম্যাকগ্রা (৭১), মুত্তিয়া মুরালিধরন (৬৮), ওয়াসিম আকরাম (৫৫), চামিন্দা ভাস (৪৯), মিচেল স্টার্ক (৪৯) এবং লাসিথের পরে সপ্তম স্থানে রয়েছে। মার্কি ইভেন্টে বোলারের সর্বোচ্চ সংখ্যক উইকেটের তালিকায় মালিঙ্গার সংগ্রহ ৪৭। জহির, ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জয়ের সময় ভারতের তুরুপের তাস ছিলেন।

১৪ বছরের বর্ণময় কেরিয়ারে জাহির শেষ ম্যাচ খেলেন ২০১৪ সালে ওয়েলিংটনে নিউ জিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান জাহির খান। তার ঠিক ১৫ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু জাহিরের। ২০০০ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক। একই বছরে কেনিয়ার বিরুদ্ধে শুরু করে ছিলেন ওয়ানডে কেরিয়ারও। বছরের নিরিখে ১৫টা নেহাত কম না হলেও চোট আঘাতে জর্জরিত এই পেসারের ঝুলিতে ম্যাচের সংখ্যা খুব বেশি নয়। খেলেছেন মাত্র ৯২টি টেস্ট। যদিও ঝুলিতে উইকেটের সংখ্যা নেহাত কম নয়। টেস্টে তাঁর শিকার ৩১১।

জাহিরের আসলি কেরামতি কিন্তু ৫০ ওভারের ম্যাচে। আপাত শান্ত এই পেসারের চেহারাটা বল হাতে নিলেই বদলে যেত। উল্টো দিক থেকে ছুটে আসছেন জাহির, আর ব্যাটসম্যানের হাঁটুতি কাঁপুনি নেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই ছবি কল্পনাই করা যায় না। জাহির নিঃসন্দেহে সেরা ভারতীয় ফাস্ট বোলারদের একজন।

টেস্ট ও একদিনের ম্যাচে ৫৯৩ টি উইকেট সংগ্রহকারী জাহির খানের জন্ম ১৯৭৮ সালের ৭ অক্টোবর মহারাষ্ট্রর আহমেদনগর জেলার শ্রীরামপুরে। ভারতীয় ক্রিকেটে জাহিরের অবদান চিরস্মরণীয়। ভারতীয় ক্রিকেটে তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেও জাহিরের মত সাফল্য খুব কম বোলারই পেয়েছেন। দেশের স্পিন সহায়ক পিচে খেলে বড় হয়ে ওঠা জাহিরের বোলিংয়ে ছিল স্যুইং, পেস। ইয়র্করে ছিলেন মাস্টার। জাহির খান আসলে নস্টালজিয়ার অপর নাম। সৌরভ গাঙ্গুলি থেকে মহেন্দ্র সিমং ধোনি। দেশের সেরা দুই অধিনায়কের দলের বোলিং ইউনিটে জাহিরই ছিলেন ম্যাচ উইনার।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টেই জাহির খান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর প্রথম পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলেছিলেন। টেস্ট অভিষেকের মাসখানেক আগে জাহির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। ২০০০ সালে জহির বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমীতে প্রথম খেলার জন্য নির্বাচিত হন। একই বছর অক্টোবরে আইসিসি নকআউট ট্রফিতে কেনিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল জাহিরের। জাহিরের সঙ্গে একই ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় যুবরাজ সিং ও বিজয় দাহিয়া-র।

২০০০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক টেস্টে জাহিরের প্রথম শিকার ছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার মেহরাব হোসেন। ব্যাটের হাতটা নেহাত মন্দ ছিল না জাহির খানের। একবার দশম উইকেটে সচিন তেন্ডুলকর-জাহির খান জুটি ১৩৩ রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন। জাহির সেই ম্যাচে করেছিলেন ৭৫ রান। সেই সময় এগারো নম্বরে ব্য়াট করতে নামা কোনও ব্যাটসম্যান হিসাবে সেটাই ছিল সর্বোচ্চ রান।

উপমহাদেশীয় পিচে তার পারফরম্যান্স এবং বিভিন্ন ধরনের ক্রিকেট বল নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি প্রশংসিত। ২০১১ সালে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার অর্জুন পুরস্কারে ভূষিত হন। জহির খানের কেরিয়ার বারবার আঘাতের জন্যও উল্লেখ করা হয়, যা প্রায়ই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার অগ্রগতি ব্যাহত করে। সেই কারণেই জহির খান প্রোস্পোর্ট ফিটনেস অ্যান্ড সার্ভিসেস, অ্যাড্রিয়ান লে রক্স এবং অ্যান্ড্রু লেইপাসের সহযোগিতায় একটি বিশেষ পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছেন । ২০২০ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে।

রাহুল দ্রাবিড়ের অধিনায়কত্বের সময় ২০০৫ সালের শেষ দিকে পেসার শ্রীশান্ত এবং আরপি সিং তাদের আন্তর্জাতিক অভিষেক করেন এবং ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন যার ফলে জহিরের পক্ষে প্লেয়িং ইলেভেনে তার অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া বছরের শেষে জহিরকে বি-গ্রেড থেকে সি-গ্রেড চুক্তিতে অবনমিত করেছিল। তিনি ২০০৫ সালের পাকিস্তান সফরে ফিরে আসেন।

২০০৬ সালের শেষের দিকে, ইরফান পাঠানের ফর্মে অবনতি এবং মুনাফ প্যাটেলের ইনজুরির কারণে জহিরকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য টেস্ট ও ওয়ানডে দলে ডাকা হয়। সফরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর, ২০০৭ সালের প্রথম দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম ওয়ানডেতে তার পারফরম্যান্স নজর কারে। যার মধ্যে ক্যারিয়ারের সেরা ৫/৪২ ছিল। এর পর তাকে ২০০৭ বিশ্বকাপের জন্য দলে রাখা হয়েছিল ।

২০০৮ সালে উইজডন-এর বিচারে বর্ষসেরা ক্রিকেটার জাহির খান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬১০টি উইকেট সংগ্রহ করেন। আইসিসি বিশ্বকাপের ইতিহাসে দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার নজির জাহির (২৩ ম্যাচে ৪৪ উইকেট)-এর দখলে।

শুধুমাত্র মুত্তিয়া মুরালিধরন (৩২৫) এবং শন পোলক (২৫২) জহির খানের চেয়ে বেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে আউট করেছেন। জাহিরের সংগ্রহ ২৩৭ বার। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক তথা তারকা ওপেনার গ্রেম স্মিথকে মোট ১৪ বার আউট করে নজির গড়েন জাহির।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গ্রায়েম স্মিথ ছাড়াও কুমার সাঙ্গাকারা , সনৎ জয়সুরিয়া এবং ম্যাথু হেইডেন - খেলার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানদের -কে ১০ বারের বেশি আউট করার স্বতন্ত্র রেকর্ডও রয়েছে তার। এক দশকেরও বেশি সময় ভারতীয় দলের পেস বিভাগকে সামলানো ৯২টি টেস্ট এবং ২০০টি ওডিআই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জাহির কিংবদন্তি ক্রিকেটার থাকার সময়ও একাধিক তরুণ বোলারের মেন্টর ছিলেন।

ওরচেস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট এছাড়াও তিনি খেলেছেন মুম্বাই, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে। আই পি এলের প্রথম উইকেটটিও তার সংগ্রহ। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর হয়ে জাহির তার প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উইকেট সংগ্রহ করেন। 

ভরতের সর্বকালের সেরা দুই অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্বের মধ্যে মিল বের করেন জাহির খান। দুই অধিনায়কের নেতৃত্বেই খেলেছেন বাঁ হাতি পেসার। সৌরভের হাতে যখন নেতৃত্বের ব্যাটন ছিল, তখন জাহির তরুণ প্রতিভা। পরে ধোনি যখন ক্যাপ্টেন হন, তখন জাহির অনেক পরিণত।

সৌরভের দলের সিনিয়াররাও তত দিনে অনেকেই অবসর নিয়ে ফেলেছেন। সেই সময়ে ধোনি ঠিক 'সৌরভের ভূমিকায়' অবতীর্ণ হয়েছিলেন বলে দাবি করেন জাহির। তরুণ ক্রিকেটারদের মেন্টর হিসেবে ধরা দিয়েছিলেন ধোনি। একটি চ্যাট শোয়ে জাহির বলেন, ''কেরিয়ারের গোড়ার দিকে সৌরভের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সদ্য পা রাখার সময়ে এই সাহায্যটারই দরকার। তার পরে খেলতে খেলতে নিজেকে তৈরি করে নেওয়া যায়।''

সৌরভ ও ধোনি দীর্ঘসময় ধরে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দুই অধিনায়কের নেতৃত্বে খেলার ফলে দু'তারকার মধ্যে মিল ঠিক কোন জায়গায় তা সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন জাহির। তিনি বলছেন, ''এমএস যখন দলের দায়িত্ব নিয়েছিল, তখন দলে অনেক সিনিয়র প্লেয়ার ছিল। ফলে সেই সময়ে ধোনিকে বিশেষ কিছু করতে হয়নি। কিন্তু যখন ওই সিনিয়র ক্রিকেটাররা অবসর নিতে শুরু করে, তখন অপেক্ষাকৃত তরুণ ক্রিকেটারদের পরামর্শ দিত ধোনি। তাদের মেন্টর হয়ে উঠেছিল। এই কাজটা তো সৌরভকেও করতে দেখেছি।''

ভারতীয় ক্রিকেট সৌরভের হাত ধরে সাবালক হয়। প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে শেখে। অনেকেই মনে করেন, সৌরভ বদলে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটের ছবিটা।

'দাদা'র হাত থেকে সেই ব্যাটন নিয়ে ধোনি পরবর্তীকালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটে এই পরম্পরা অতীতেও ছিল। পরেও রয়েছে। এখন যেমন ধোনির হাত থেকে রিমোট কন্ট্রোল এসে উঠেছে কোহালি রোহিত দের হাতে।

১৯৯৬ সালে মুম্বাইয়ে এসে শহরের এ ডিভিশনে খেলা জাতীয় ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দেন জাহির। তিনি দলের সাথে কাঙ্গা ক্রিকেট লীগ, কমরেড শিল্ড এবং পুরুষোত্তম শিল্ডের মতো প্রতিযোগিতায় খেলেছেন। সেই সময়ে জাহিরের অধিনায়ক সন্দীপ মাহাদকার, বল নিয়ে শেষোক্তের ক্ষমতার কথা স্মরণ করেছিলেন যেখানে তিনি ৫০ ওভার বোলিং করা একটি বলকে রিভার্স সুইং করেছিলেন, দশটি মেডেন ওভার বল করেছিলেন এবং তার দলকে কমরেড শিল্ড খেলায় জিততে সাহায্য করেছিলেন।

ব্যাট হাতে তার ক্ষমতা অন্য একজন প্রাক্তন সতীর্থের কথায় উঠে আসে। সেই ম্যাচে জাহির নবম উইকেটে ১০২ রানের জুটি গড়েন অপরাজিত ৬২ রান করে তার দলকে ঘরে নিয়ে যান। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে শিবাজি পার্ক জিমখানার বিরুদ্ধে ৭/৭৪ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তার 'পুরোত্তম শিল্ডে চোয়ালের স্পেল' শেষ হয় । জাতীয় ক্রিকেট ক্লাব তার প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়ে সেখানকার বোলিং কোচ টিএ শেখর খানকে বরোদার হয়ে খেলার জন্য চাপ দেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে,  আজকাল নাকেল বলের চর্চা সর্বত্র। জহির খানই  প্রথম বোলার যিনি নাকল বল করেছিলেন। জহির খান ২০১১ বিশ্বকাপে নাকল বল চালু করেছিলেন। দারুণ ইফেক্টের জন্য সেই বলটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইয়ান বেল এবং পল কলিংউডের উইকেট এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডেভন স্মিথের উইকেট এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে মাইকেল হাসির উইকেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট পেতে তিনি সেই বলটি ব্যবহার করেছিলেন।

একটি সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছিলেন: "পুরো ২০১১ বিশ্বকাপ, আমি এটির জন্য উন্মুখ ছিলাম, বিশেষ করে ঘরের দর্শকদের সামনে খেলতে - এমনকি এটি অতিরিক্ত চাপ যোগ করলেও। আমি একটি নতুন ডেলিভারি প্রস্তুত করছিলাম যা আমি ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। যা ছিল নাকল বল। আমি টুর্নামেন্টের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এক বছর ধরে এটি নিয়ে কাজ করছিলাম। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো ম্যাচেই এটি ব্যবহার করিনি। এটি আমাকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। যখন এমন একটি পরিকল্পনা কাজ করে, এটি আপনাকে অতিরিক্ত সন্তুষ্টি দেয়।"

'চক দে গার্ল' হিসাবেই যাঁর পরিচিতি টিনসেল টাউনে। যিনি ওই ছবিতে হবু বয়ফ্রেন্ড পেশায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে প্রত্যাখান করেছিলেন। সেটা ছিল রিল লাইফ। কিন্তু, রিয়েল লাইফে অভিনেত্রী সাগরিকা ৩ বছরের প্রেমপর্বের পরে বয়সে ৮ বছরের বড় জাহিরকে বিয়ে করেন ২০১৭-র নভেম্বরে। তখন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস দলের অধিনায়ক জাহির খান। 

বিয়ের আগের দিন বিকেলেই জাহিরের একটি ছবি ওয়েব দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছিল। 'ম্যাড ব্রাইড' হিসেবে তিনি তখন ভাইরাল। এর পর দিনই রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন জাহির ও সাগরিকা। বিয়ের ছবি অবশ্য প্রথম শেয়ার করেছিলেন জাহিরের ফিটনেস স্টুডিওর প্রধান অঞ্জনা শর্মা। সেই সময় ভাইরালও হয় ম্যাগাজিন কভারের জন্য তোলা নবদম্পতির একটি ভিডিও শুট।

সাগরিকা তো বলিউড অভিনেত্রী। তাই ক্যামেরা, পোজ, লুক— এ সব তাঁর কাছে জলভাত। কিন্তু দেখার বিষয় ছিল জাহিরের পোজিং। সেই মাসের 'বাজার ব্রাইড'-এর কভার ছবিতে ধরা দিয়েছিলেন জাহির-সাগরিকা। ভিডিওতে কখনও একটি পিয়ানোর কাছে সবুজ গাউনে দেখা গেছে সাগরিকাকে। অফ-শোল্ডার গাউনে নতুন বউকে দেখাচ্ছে একেবারে মোহময়ী। তাঁর পাশেই গাঢ় বেগুনি রঙের কুর্তা পরে বসে রয়েছেন জাহির। তাঁর চোখও কিন্তু সাগরিকার থেকে সরছে না! আবার কখনও রুফটপে 'লাভি ডাভি' পোজও দিয়েছিলেন জাহির।

 

 

নিবন্ধকারঃ ঋদ্ধি রিত

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...