খোলাবাজারে মাস্ক উধাও। কালোবাজারিতে বিকোচ্ছে চড়া দামে। গ্রামের মানুষ কিনবে কি করে? মানবিকতা এখনো হারিয়ে যায়নি। খাপাইডাঙ্গার কলেজ পড়ুয়া নিজেই এগিয়ে এসেছেন নিজের গ্রামকে বাঁচাতে। গোটা গ্রামের বাচ্চা-বুড়ো সবার মুখে মাস্ক। আর এসবের জোগান দিচ্ছে কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
অথচ বিশ্বজিতের পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। অভাবের সংসারে নিত্য লড়াইয়ের মাঝেই বাড়িতে সেলাই মেশিন বসিয়ে মাস্ক বানাচ্ছেন। গোটা গ্রামের জন্য। শপথ রুখে দেব করোনা ভাইরাসকে।
বিশ্বজিৎ'র এই সচেতনতা আর মানবিকতার লড়াইটা কিন্তু খুব সহজ নয়। খাপাইডাঙা গ্রামে বাবা-মা আর বোনকে নিয়ে অভাবের সংসার।
সংসারের মুখে হাসি ফোটাতে দিনমজুরির কাজও করে বিশ্বজিৎ। মেঝে বা দেওয়ালে টাইলস,পাথর বসানোর কাজ করে সংসার আর লেখাপড়ার কাজ চলে।
করোনা প্রভাব শুরু হতেই বিশ্বজিৎ পরিবার আর নিজের জন্য বাজারে মাস্ক কিনতে গিয়ে দাম শুনে চমকে উঠেছিল। না চড়া দামে মাস্ক না কিনে বিশ্বজিৎ সেই টাকায় সুতির কাপড় কিনে বাড়ি এসে নিজেদের সেলাই মেশিনে জেদের বশেই পরিবারের সবার জন্য মাস্ক বানিয়ে ফেলেছিল। তারপর আর থেমে থাকা নয়,বিশ্বজিৎএর কথায়, "শুধু নিজে বা পরিবার সুস্থ থাকা বেঁচে থাকাটাই বড় কথা নয় নিজের প্রিয় গ্রামের মানুষগুলোকে বাঁচানো দরকার।"
আর এই ভাবনা থেকেই নিজের কষ্টে সঞ্চিত টাকা থেকেই মাস্ক বানিয়ে তুলে দিচ্ছেন গ্রামবাসীদের হাতে। আর হ্যা, এই কাজের জন্য কোনো পয়সা নিচ্ছেন না তিনি।