তাদেরও অন্তরের জমা বেশ কিছু কথা ছিলো, মনের গোপন ব্যাথা, সুখ-দুঃখ ছিল, তাদের ও ব্যক্তিগত রান্নার খাতা, গয়নার বাক্স, ডায়েরী, আমোদ-আহ্লাদ ইত্যাদি আরও কতো অজানা কথা ছিল। অন্দরমহলের সেই সব মেয়েবেলার অজানা গল্প হারিয়ে গেছে হড়প্পা-মহেঞ্জোদারোর সভ্যতার মতো। প্রাসাদের চার দেওয়ালে বন্দিনী নারীদের কাহিনী এবার স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে। সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে এমনই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। অন্দরমহলের অন্দরের কথা বাহির মহলে প্রকাশ করতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে তারা জোগাড় করে আনছেন বনেদি পরিবারের পর্দার অন্তরালে থাকা মহিলাদের জীবন যাপনের ইতিহাস। কেমন ছিলেন অন্দরমহলের সুন্দরীরা?
অন্দরের নারীদের দুঃখ, দুর্দশা, সমস্যা, তাদের দিনযাপন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কথা, ভোগ্য পণ্য হিসাবে নারীদের ব্যবহার-সবটাই ঋতুদা সুন্দর ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছিলেন তাঁর ছবিতে। নবজাগরণের সূচনা ঘটে এই সময়। পরাধীন দেশের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েও কিছু মহিয়সী নারী কিভাবে নিজেদের প্রমান করেছিলেন তাঁদের প্রতীভার কথা, তা আমরা জানতে পারি বই এর পাতায়। যেমন বেগম রোকেয়া শাখায়াত হোসেন মুসলিম কবি হয়েও সংসার-সমাজের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে অন্তরালে থাকা মহিলাদের এক নতুন আলোর দিশা দেখান। কাদম্বিনী গাঙ্গুলি প্রথম দুইজন মেডিকেল ডাক্তারের মধ্যে একজন যিনি উনিশ শতকে দাঁড়িয়েও প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালিয়েছিলেন।
কিন্তু যাদের কথা আমরা জানতে পারিনা সেই সব মেয়েদের জীবনের ডায়রির পাতা পড়ার জন্য আমরা প্রত্যেকেই মুখিয়ে রয়েছি। আমাদের পরবর্তী পড়ুয়ারা যাতে সেই সব মহিয়সী নারীদের কথা জানতে পারে নিজেদের সিলেবাসে তার চেয়ে আর ভালো কিছু হতেই পারেনা।