প্রতি বছরই আয়-ব্যয়-এর হিসেবে হয় রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। বিশেষ করে যত টাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পেয়েছে, তার সবটা খরচ হল কি না, কোন কোন খাতে খরচ হল, কতটা উদ্বৃত্ত থাকল, কতটা ঘটাতি থাকল সবটাই হিসেবে হয় এবং সেই মত, পরবর্তী বছরের জন্য একটা বাজেট তৈরী করা হয়। ২০১৮-১৯ সালের অল ইন্ডিয়া সার্ভে ও হায়ার এডুকেশন-এর রিপোর্ট বলছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে উদ্বৃত্তের হিসেবে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। যাদবপুর, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ঘাটতির খাতায়।
ব্যাংক-এ গচ্ছিত টাকার সুদ, অনুদান, ফি প্রভৃতি মিলিয়ে ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয়েছে ৩০ লক্ষ, ৫৯ হাজার ৬৮৫ টাকা। এই আয়ের সবচেয়ে বেশি টাকা এসেছে অনুদান থেকে প্রাপ্ত টাকার থেকে। এই খাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২৬ লক্ষ্য ৯ হাজার ১৩৬ টাকা পেয়েছে। বেতন, লাইব্রেরি, বিল্ডিং, রক্ষণাবেক্ষণ, ল্যাবরেটরি, স্কলারশিপ এবং অন্যান্য খাতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ লক্ষ ৩৫ হাজার ১৩৭ টাকা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ তাদের উদ্বৃত্ত টাকার পরিমান ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৪৭ টাকা। বিকাশভবনের কর্তারা এই উদ্বৃত্ত টাকার অংক দেখে জানিয়েছেন, তাদের অনেক রকমের আয়ের সংস্থান রয়েছে। তাই এই লাভ কিছুটা হলেও প্রত্যাশিত। পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংকট নিয়ে খোদ কর্তারাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আয় বৃদ্ধির সংস্থান না থাকা, অথবা রাজ্য সরকারের তরফে বরাদ্দ টাকা না পাওয়া- সব ক্ষেত্রেই কিন্তু সমস্যায় রয়েছে যাদবপুর। আর্থিক রিপোর্টেই তার প্রকাশ ঘটেছে। গত আর্থিক বছরে যাদবপুরের আয় হয়েছে ২৭ লক্ষ ৬৩ হাজার ৬৬২ টাকা। তার মধ্যে অনুদান খাতে তারা পেয়েছে ২৬ লক্ষ ৯ হাজার ৫২৯ টাকা। পড়ুয়াদের ফি থেকে তাদের আয় হয়েছে প্রায় ৯৬ হাজার টাকা। ভবন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যয় হয়েছে ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৩৯৪ টাকা। সব মিলিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ হয়েছে ২৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকা। ২,২৫৮ টাকার ঘাটতি রয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাটতির পরিমান ৩৯ হাজার ৯১৮ টাকা।
গত আর্থিক বছরে উদ্বৃত্ত টাকা থেকে গেছে আরও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের- সেগুলি হল, প্রেসিডেন্সি( ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৩২০ টাকা), বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়( ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৯৩ টাকা), রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের( ৬ হাজার ৭৩৬ টাকা) এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (৩ লক্ষ ১০ হাজার ৮৬৫ টাকা)। যাদের উদ্বৃত্ত রয়েছে তাদের নিয়ে তো কোনও সমস্যা হবে না, তবে যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ঘাটতি রয়েছে, তারা কিভাবে আয় বাড়াবে সে বিষয়ে এক থেকেই চিন্তা ভাবনা শুরু করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা।