'যমুনা মাতা কি জয়'

গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ, বদ্রীনাথ এই তিন ধামের সঙ্গে প্রায় এক নিঃশ্বাসে উচ্চারিত হয় একটি নাম। যমুনোত্রী। হিমালয়ের কোলে বিখ্যাত হিন্দু তীর্থ। চারধামের অন্যতম। প্রতিবছর মে থেকে অক্টোবর চার ধাম দর্শনে বহু তীর্থযাত্রী আসেন এখানে। যমুনোত্রী গঙ্গোত্রী দেখে তাঁরা রওনা হন কেদার-বদ্রীর উদ্দ্যেশে।

হিন্দুদের কাছে গঙ্গার পরেই যমুনার স্থান। তাঁদের বিশ্বাস যমুনার জলে স্নান করলে অকালমৃত্যু থেকে রক্ষা পায় মানুষ। পায়ে হাঁটা পথেই মন্দির দর্শনে যান মানুষ। তীর্থস্থানের ধূলি পায়ে লাগলে নাকি পুণ্যপ্রাপ্তি হয়। ট্রেকিং করতে যারা ভালবাসে তাদের কাছেও যমুনোত্রী অবশ্য গন্তব্য।

যমুনোত্রী মন্দিরের অবস্থান উত্তরাখণ্ডের গাড়োওয়াল হিমালয়ের পশ্চিম অঞ্চলে। ১০,৭৯৭ ফুট উচ্চতায়। দেবী যমুনার উদ্দ্যেশ্যে এই মন্দির। মন্দিরের গর্ভগৃহে কালো পাথরের দেবী মূর্তি। যম ও যমুনা উভয়রই মূর্তি আছে৷ আরতি এবং প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় মন্দিরে। যমুনা নদীর উৎসভূমি কিন্তু এই মন্দির নয়। বান্দর পুঞ্চ পর্বতের প্রান্তে চম্পাসার হিমবাহ থেকে যমুনার জন্ম। যমুনার বাম তীরে যমুনার মন্দিরটি ১৮৩৯ সালে তেহরী গাড়ওয়ালের মহারাজা প্রতাপ শাহ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন জয়পুরের মহারানী গুলেরিয়া।

 

Yamunotri1

 

তবে এই মন্দিরের প্রথম নির্মাণ কে করে তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। ১৯২৩ এবং ১৯৮২ সালে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় মন্দির। একবার হিমবাহ বিপর্যয়ে অন্যবার ভূমিকম্পে। কিন্তু আঁচড় লাগেনি মূর্তির গায়ে।

মন্দিরের কাছে উষ্ণ প্রসবনগিরি সূর্য কুন্ডের অবস্থান। সূর্যকুন্ডের কাছে দিব্য শিলা নামে একটি শিলা রয়েছে, যা দেবদেবীর পূজা দেওয়ার আগে পূজা করা হয়। ভক্তরা ভাত এবং আলু, মসলিনের কাপড়ে বেঁধে এই গরম জলের ফোয়ারাগুলিতে ডুবিয়ে মাজারে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করেন। ভাত রান্না করা হয় প্রসাদাম হিসাবে আর বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। যমুনা দেবী যম দেবতার সহদরা।

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মন্দিরের দ্বার খোলা হয়। এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পড়ে। দীপাবলির দিন বিশেষ পূজা-পর্বের পর দ্বার বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের। বাকি সময়টা এই মন্দির তুষারের চাদরে ঢাকা থাকে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...