জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ণের কারণে সমুদ্রের জলে কমছে অক্সিজেনের মাত্রা। আশংকাজনকভাবে বেড়ে চলেছে নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের মাত্রা। সংকটের মুখে জীব বৈচিত্র্য।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। গবেষকদের মতে, অনেক বছর ধরেই সমুদ্রে কমছে অক্সিজেনের মাত্রা । পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি।
১৯৬০–এ সারা পৃথিবীতে ৪৫টি সামুদ্রিক এলাকায় অক্সিজেনের মাত্রা কম ছিল। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৭০০–তে দাঁড়িয়েছে। অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় টুনা, মার্লিন ও হাঙরের মতো সামুদ্রিক প্রজাতিগুলোর অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
সামুদ্রিক এলাকায় অবস্থিত শিল্পকারখানাগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণ বর্জ্য পদার্থ সমুদ্রে মিশছে। এতে সমুদ্রের জলে নাইট্রোজেন ও ফসফরাসের মাত্রা বাড়ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। গ্রিনহাউস এফেক্টের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে, আর সেই বাড়তি তাপমাত্রা শুষে নিচ্ছে সমুদ্রগুলো।
গবেষকেরা বলেছেন, ১৯৬০ থেকে ২০১০—এই ৫০ বছরে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রে অক্সিজেনের মাত্রা কমেছে গড়ে ২ শতাংশ। কোনও কোনও অংশে এই হার ৪০ শতাংশ।
আইইউসিএনের গবেষক মিনা এপস বলেছেন, ‘সমুদ্রে অক্সিজেন কমে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু এর নেপথ্যে যে জলবায়ু পরিবর্তনই দায়ী, সেটি অনেকেই জানি না। গত ৫০ বছরে সমুদ্রে অক্সিজেনের মাত্রা উদ্বেগজনক হারে কমেছে।’
কম অক্সিজেন জেলিফিশ প্রজাতির জন্য সুবিধাজনক হলেও টুনার মতো বড় ও দ্রুতগতির প্রজাতির জন্য আশঙ্কাজনক। টুনা, মার্লিন ও কয়েক প্রজাতির হাঙরের বেঁচে থাকার জন্য বেশি মাত্রার অক্সিজেন দরকার। কিন্তু দিন দিন অক্সিজেন কমতে থাকায় অক্সিজেনের সন্ধানে এরা সমুদ্রের গভীর ছেড়ে উপরিতলে উঠে আসছে।