আসলে থিয়েটার এর জন্য তো আলাদা করে কোনো দিন ধার্য হতে পারে না, তবু বিশ্বের বিদ্বজনেরা একটা দিন রেখেছিলেন বলেই আমরা আজ লেখার বিষয় পেয়েছি| থিয়েটার বা নাটক আসলে আমাদের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি| শিল্প জগতে বিভিন্ন মাধ্যম বিভিন্নভাবে নিজেদের কথা বলে| থিয়েটার, জগতের কথা বলে, জীবনের কথা বলে নিজেদের মত করে সামগ্রিকভাবে| একবিংশ শতাব্দিতে দাঁড়িয়ে সমগ্র বিশ্বে দিনের পর দিন বাড়তে থাকা হিংসা, হানাহানি, অরাজকতা, বিশ্বাসঘাতকতা, সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতা আমাদের প্রতিনিয়ত ভেঙেচুরে তছনছ করে দিচ্ছে| আমার মনে হয় একমাত্র থিয়েটার-ই পারে এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের মননকে তৈরী করতে| অর্থাৎ যে কোনও অনৈতিক কাজকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো এবং তার থেকে উত্তরনের পথ খুঁজে বের করার মত বলিষ্ঠ মাধ্যম বোধহয় থিয়েটার বা নাটক ছাড়া আর কিছুই হতে পারেনা| তাই পুঁথিগত পড়াশোনায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি থিয়েটারে শিক্ষিত হওয়াও আজকে ভীষনভাবে প্রয়োজন| কারন থিয়েটার আমাদের সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে শেখায়, সব কাজের সমান গুরুত্ব আছে তা আমরা থিয়েটার থেকেই শিখি| দায়িত্ব, নিয়মানুবর্তিতা, শিষ্টাচার, নিষ্ঠা শেখায় থিয়েটার| এখনকার স্বার্থপরতার যুগে সকলের কথা ভাবতে শেখায় থিয়েটার|
১৯৬১ সালে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট দ্বারা বিশ্ব নাট্য দিবসের সূচনা হয়| প্রথমে হেলসিংকিতে ও পরে ১৯৬১ সালে জুনে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট-এর নবম বিশ্ব কংগ্রেস অধিবেশনে ভিয়েনাতে সভাপতি আরভি কিভিমা এই প্রস্তাব পেশ করেন| তারা ২৭ মার্চ দিনটিকে ধার্য করে প্রতি বছর থিয়েটার দিবস হিসেবে পালন করে তা উদযাপন করার দিন হিসেবে| স্ক্যান্ডিনেভিয়ান সেন্টার এই প্রস্তাব সমর্থন করে| এই দিনে প্রতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক একটি বার্তা দেওয়া হয় থিয়েটারের পক্ষে, যা বিশেষ করে শান্তির বার্তা বয়ে আনে| ১৯৬২ সালে ফ্রান্সের জীন ককটু দ্বারা প্রথম বিশ্ব থিয়েটার দিবসের আন্তর্জাতিক বার্তা লিখিত হয়েছিল|