আমাদের রাজ্যে শহরের উন্নতির পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নতিও যথেষ্ট প্রয়োজনীয়। আসলে যে কোনো রাজ্য তথা দেশের ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য। গ্রামের উন্নতি না হলে সেই জায়গা এগোয়না। পশ্চিমবঙ্গেও গ্রামীণ উন্নতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট জোর দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে। কুটির শিল্পের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের মহিলারা যাতে স্বনির্ভর হতে পারেন সেই দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়ে এগিয়ে আসছে যেমন সরকারি দফতর তেমনি এগিয়ে আসছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সরকারি তরফেও চেষ্টা করা হচ্ছে বিভিন্ন উপায়ে যাতে অর্থের সংস্থান করা যায়, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে।
এ প্রসঙ্গে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, গ্রামবাংলার পরিকাঠামো উন্নয়নে ৩৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বিভিন্ন রাজ্যে বিশ্বব্যাংক সশক্তিকরণ কর্মসূচি নিয়েছে। সেই কর্মসূচি অনুযায়ী ওই টাকা দেওয়া হবে বলে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫জুলাইয়ের মধ্যে ওই টাকা চলে আসবে বলে খবর। টাকা এলে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে।
এর আগে বিশ্বব্যাংকের টাকায় ‘আইএসজিপিপি’ প্রকল্পে গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘর তৈরী হয়েছে। কম্পিউটার বসানো হয়েছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতকর্মীদের। গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের আধুনিকীকরণ হয়েছে। এবারে বিশ্বব্যাংকের টাকা দিয়ে পানীয় জল, মহিলা শৌচাগার তৈরী সহ অন্যান্য আরো কাজ করা হবে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাছে জানতে চাওয়া হবে কেমন ধরণের পরিষেবা প্রয়োজন। তার ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংক, গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ কর্মসূচি অনুসারে গ্রামের রাস্তা, ডিপ টিউবয়েল, শৌচালয়, কালভার্ট, শৌচালয় প্রভৃতি তৈরির পরিকল্পনা নেয়। অন্য রাজ্যের তুলনায়ায় এই রাজ্যে এর আগে ভালোই কাজ হয়েছে। তাতে যথেষ্ট খুশি বিশ্ব ব্যাংক। রাজ্যের মোট ৩২২৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশ্বব্যাংকের টাকায় পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা দেওয়া হয়। ২০১৭ সাল থেকেই বাংলায় গ্রামীণ উন্নতির জন্য টাকা আসছে। এর আগে মোট ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। টাকা দেওয়ার পর সেই টাকা সঠিকভাবে খরচ হল কি না তা খতিয়ে দেখতে আসেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিরা। তাই যাতে যথেষ্ট স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ হয়, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারি তরফে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ফিল্ড ইন্সপেকশন করে কাজের পরিকল্পনা করলে তবেই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে তা বলাই বাহুল্য। তার পর সঠিক পদ্ধতি মেনে অডিট করতে হবে বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। এইভাবে কাজ করলে এবং প্রতিবছর কাজের হিসেব সঠিক থাকলে তবেই বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নিয়মিতভাবে পাওয়া যাবে তা বলাই বাহুল্য।