বাংলা দেশের বরিশালের তাঁর ইস্কুলবাড়ি। সেই ব্রজমোহন বিদ্যালয়। আজ ঠায় দাঁড়িয়ে কবি জীবনানন্দের ভাষায়।
বিএম কলেজে পিছনের পশ্চিম বগুড়ার সড়ক যেখান থেকে পরিয়ে রোজ বাড়ি ফিরতেন মরা ময়ালের মতো শুয়ে আজ ও জীবন্ত সে। ধানসিঁড়ি, ধলেশ্বরী, কীর্তনখোলা, পায়রা, সন্ধ্যা নামের অপরূপ সব নদী জড়ানো বরিশাল- এখনো তাঁর কবিতার বাস্তব রূপ হিসাবে আজও ধরা দেয়। তাহলে রহস্যময়ী নারী চরিত্রের বাস্তব রূপ নেই যে কোথাও ধরা যাবেনা।
এর আগে দেখেছি, আমরা রবীন্দ্রনাথের "মহুয়া" কাব্যগ্রন্থে বিভিন্ন নারীদের নাম দিয়ে কবিতা লেখা আছে| কিন্তু তিনি ই প্রথম তাঁর কাব্যে নায়িকার নাম ও টাইটেল ব্যবহার করেছিলেন। 'বনলতা সেন', 'অরুনিমা সান্যাল', 'শেফালিকা বোস '--নামের সঙ্গে টাইটেল যোগ করে পরিচিত মুখ তুলে ধরতে চেয়েছেন পাঠকের কাছে-যা বাংলা সাহিত্যে বিরল। কবিতায় কল্পনার পাশাপাশি বাস্তবতার পরিষ্কার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও তাঁর মা, স্ত্রী, বোন, নিজের মেয়ে-এদের নিয়ে একটা হাসি খুশির সংসার ছিল| তাই প্রতিটি নারীই তাঁর জীবনে আলাদা বার্তা বহন করে আনে। যেমন 'সুচেতনা' একটি বিখ্যাত কবিতা। কলকাতাকে কল্লোলিনী তিলোত্তমা হিসাবে দেখেছেন তিনি। তাঁর ভালোবাসার পাত্রী সুচেতনা কে এক দূরবর্তী দ্বীপের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যার উপস্থিতি আছে কিন্তু যাকে কাছে পাওয়া বা ছোঁয়া যায়না। নানান ভিড়, কাজের চাপ এসবের মাঝে সুচেতনার উপস্থিতি 'দারুচিনি বনানীর মাঝে নির্জনতা আছে' সেই নির্জনতার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার কবিতার ভাবনা চিন্তা তাকে যেন অন্য মানুষ করে তুলেছে। তাঁকে অন্য জগতে নিয়ে যায়। খুব কম কবিরই এমন কল্পনা শক্তি থাকতে পারে। 'নারী' কবির কাছে এক আলাদা বার্তা বহন করে নিয়ে আসে। 'নারী' কে জীবনানন্দ অন্য রূপে দেখেছেন। প্রকৃতির সঙ্গে নারীকে এমন ভাবে মিশিয়ে দিয়েছেন যাতে কেউ প্রকৃতির নারীকে আলাদা করতে না পারে। নারী সব কবির জীবনেই আলাদা জায়গা নিয়ে থাকে। জীবনানন্দের জীবনে বড় জায়গা নিয়ে রয়েছে