অনেকদিন আগেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল ক্যানসার। কিন্তু কোনোভাবেই তাতে দমে যাননি, বরং তাকে গ্রহণ করেছিলেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। যা সকলের কাছে ছিল কার্যত অসম্ভব, তাকেই সম্ভব করে দেখালেন কলোরাডোর বাসিন্দা সারহা থমাস। যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা পিছনে ফেলে একটানা চারবার ইংলিশ চ্যানেল পার করলেন ৩৭ বছর বয়সী সারহা।
গত রবিবার শুরু হয় এই দুর্গম যাত্রাভিযান। ৫৪ ঘন্টা সাঁতার কেটে ১৫৪ মাইল পথ অতিক্রম করে ১৭ই সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ল্যান্ডমার্ক স্পর্শ করেন তিনি। চ্যানেলটি পার হওয়ার জন্য তাঁকে ৮০ মাইল সাঁতার কাটতে হত, কিন্তু জোয়ার থাকার ফলে অতিরিক্ত ৫০ মাইল সাঁতার কেটে লক্ষ্যে পৌঁছে যান সারহা। এর আগে কেবলমাত্র চারজন পুরুষ না থেমে একটানা সাঁতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে সারহাই প্রথম মহিলা সাঁতারু যিনি এই অনন্য নজির স্থাপন করে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন।
মঙ্গলবার ভোর ৬.৩০ নাগাদ ডোভারে পৌঁছে যাত্রা শেষ করার পর তাকে চকোলেট ও শ্যাম্পেন সহকারে অভ্যর্থনা জানানো হয়। গত বছরই সমস্ত চিকিৎসা সম্পন্ন করে ক্যানসার মুক্ত হয়েছেন সারহা। উপকূলে পৌঁছে তিনি জানান, চারদিন ধরে নোনা জলের সাথে মোকাবিলা করাটা সত্যিই চ্যালেঞ্জ সাপেক্ষ। এর ফলে গলা, মুখ এবং জিভের করুণ দশা হয়। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। এত লোক আমাকে উৎসাহ দিতে আসায় আমি বাকরূদ্ধ। আপাতত আমি ক্লান্ত, এখন কিছুদিনের জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন।
আবহাওয়া সম্বন্ধে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। পথে অসংখ্য জেলিফিশের সম্মুখীন হতে হয়। সমুদ্রের পর তটে পৌঁছে ইতিমধ্যেই টুইটের জোয়ারে ভেসে গিয়েছেন সারহা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এমনকি এই জয়যাত্রার পর অনেকে তাকে ‘সুপার হিউম্যান’-এর সাথে তুলনা করেছেন। সকল ক্যানসার আক্রান্ত মানুষকে তিনি এই জয় উৎসর্গ করেছেন। ইচ্ছেশক্তির কাছে কোনোরকম শারীরিক প্রতিবন্ধকতাই যে নাগাল পায় না, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন সারহা থমাস।