কপি স্পেশ্যালঃ ফুলকপি ধোকার ডালনা ও বাঁধাকপির পোলাও

শীতের শুরু থেকে কপি খেতে খেতে এক ঘেঁয়ে লাগার সময় চলে এল। ফুলকপি আর বাঁধাকপি দুইয়ের স্বাদেই চাই নতুনত্ব। এই সপ্তাহে উইকএন্ডের স্পেশ্যাল রান্নায় আসুক কপির চমক। রইল তেমন রেসিপির সন্ধান। 

ফুলকপির ধোকার ডালনা

ধোঁকা খেতে কে আর চায়, কিন্তু ফুলকপির ধোকা খেতে কে না চায়। কেন? খেলেই বোঝা যাবে এর কারণ। আর তার জন্য শিখতে হবে এই হারিয়ে যাওয়া বিশেষ পদটির রন্ধনপ্রণালী।

কী কী লাগবে

মটরের ডাল-৫০০গ্রাম

ফুলকপি-১টা বড়

আলু-৫০০ গ্রাম

আদা-৩০ গ্রাম

হলুদ গুঁড়ো-১ চা চামচ

জিরে গুঁড়ো-২ চা চামচ

পেঁয়াজ-১ টা বড়

কিশমিশ-৩০ গ্রাম

সর্ষের তেল- রাঁধবার জন্য

জিরে-ফোড়নের জন্য

টমেটো- ২টো বড়

শুকনো লঙ্কা- ২টো

কাঁচালঙ্কা-২-৩ টে

গরমমশলাগুঁড়ো-১ চা চামচ

ঘি-২ চামচ

কীভাবে রাঁধতে হবে

ফুলকপির ধোকা রান্নার আগের রাতে মটরের ডাল ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে ভেজানো ডাল ভাল করে বেটে নিতে হবে। পেঁয়াজ ও আদা আলাদা আলাদাভাবে বেটে রাখতে হবে। ফুলকপির ডাঁটা বাদ দিয়ে ফুলের অংশ গ্রেটারে ঘষে নিতে হবে।ফুলকপির ধোকা বানাতে ডালবাটা আর ফুলকপি ঘষা সমান পরিমাণে নিতে হবে। আলু ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে মাঝারি সাইজে কেটে রাখতে হবে। কড়াই গ্যাসে বসিয়ে অল্প তেল দিয়ে গরম করে ফুলকপি ঘষাটা হালকা করে ভেজে নিতে হবে। কড়াইতে আবার তেল দিয়ে ডালবাটা, আদাবাটা, লঙ্কা গুঁড়ো, কিশমিশ ও নুন দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে ফুলকপি ভাজাটা দিয়ে বেশ করে মেশাতে হবে। বেশ শুকিয়ে এলে নামিয়ে তেল মাখানো থালায় ঢেলে হাত দিয়ে ওপরটা সমান করে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। একটু ঠান্ডা হলে ছুরি দিয়ে ধোকার আকারে কেটে নিতে হবে। কড়াই ভালোভাবে ধুয়ে গ্যাসে বসিয়ে গরম করে তেল দিয়ে ধোকাগুলো বেশ লাল করে ভেজে নিতে হবে। আলুগুলো ও লালচে করে ভেজে নিতে হবে। গরম তেলে জিরে, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ বাটা, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, আদাবাটা দিয়ে বেশ নাড়াচাড়া করে টমেটো কুচিয়ে দিতে হবে।  সব মশলা ভালোভাবে কষাতে হবে। অল্প অল্প জল দিয়ে বারবার নেড়েচেড়ে মশলা কষাতে হবে। মশলা থেকে তেল ছেড়ে দিলে ভাজা আলু, কাঁচালঙ্কা, চিনি, নুন  আর জল দিয়ে ফুটিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। আলু সেদ্ধ হয়ে এলে  ভাজা ধোকাগুলো দিয়ে কমানো আঁচে কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। তারপর গরমমশলাগুঁড়ো আর ঘি দিয়ে নামিয়ে রাখতে হবে। কী দিয়ে খেতে হবে? গরম ভাত থেকে পোলাও,রুটি অথবা লুচি, পরোটা কোনোটাতেই যে এই ধোকা ধোঁকা দেবে না তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

বাঁধাকপির পোলাও

কী কী লাগবে

বাঁধাকপি-১টা( মাঝারি)

আলু-১৫০গ্রাম

পোলাওর চাল-২৫০গ্রাম

হলুদ গুঁড়ো-২ চা চামচ

জিরে গুঁড়ো-২ চা চামচ

তেজপাতা-২ টো

কিশমিশ-৩০ গ্রাম

ছোট এলাচ-৪টে

দারচিনি- ছোট টুকরো ৫টা

লবঙ্গ-৪ টে

সর্ষের তেল- রাঁধবার জন্য

গরমমশলাগুঁড়ো- আন্দাজমতো

নুন-স্বাদ অনুযায়ী

চিনি- স্বাদ অনুযায়ী

ঘি-১ চামচ

কীভাবে রাঁধতে হবে

আলু ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিতে হবে। বাঁধাকপির ওপরের পাতা ফেলে ধুয়ে নিয়ে কুচিয়ে রাখতে হবে। চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে রাখতে হবে। কড়াই গ্যাসে বসিয়ে তেল দিয়ে গরম করে আলুগুলো ভেজে নিতে হবে। অল্প তেলে কুচোনো বাঁধাকপি দিয়ে ভেজে নিতে হবে। বাঁধাকপি থেকে জল ছাড়লে জল শুদ্ধু বাঁধাকপি তুলে রাখতে হবে। কড়াই পরিষ্কার করে তাতে তেল দিয়ে গরম করে জিরে, তেজপাতা আর গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিয়ে চাল দিয়ে নাড়তে হবে। চাল থেকে পুটপুট আওয়াজ হলে জলশুদ্ধু বাঁধাকপি, ভাজা আলু, কিশমিশ, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, নুন আর চিনি দিয়ে বেশ করে নাড়াচাড়া করে আন্দাজমতো গরম জল দিতে হবে। জল বেশি দিতে হবে না। একটু পরে যদি দেখা যায় চাল ও আলু শক্ত আছে তবে অল্প জল দিয়ে দমে বসাতে হবে। বেশ ঝরঝরে হলে গরমমশলাগুড়ো ও ঘি দিয়ে নামিয়ে ঢেকে রাখলেই তৈরি হয়ে যাবে বাঁধাকপির পোলাও।

ভেটকি মাছের ঝুরি

কী কী লাগবে

ভেটকি মাছ- ১ কেজি

আলু-৫০০গ্রাম

ফুলকপি-১টা বড়

পেঁয়াজ-৫০০গ্রাম

হলুদ গুঁড়ো-২ চা চামচ

লঙ্কা গুঁড়ো-স্বাদ অনুযায়ী

জিরে গুঁড়ো-২ চা চামচ

ধনে গুঁড়ো-৩ চা চামচ

দুধ- ১কাপ

তেজপাতা-ফোড়নের জন্য

গোটা জিরে-ফোড়নের জন্য

শুকনো লঙ্কা-২টো

কাঁচালঙ্কা-৩টে

গোটা গরমমশলা-ফোড়নের জন্য

সর্ষের তেল-রাঁধবার জন্য

চিনি-সামান্য

নুন-আন্দাজমতো

ঘি-২ চামচ

কীভাবে রাঁধতে হবে

আলু আর ফুলকপি সরু সরু করে কেটে নিতে হবে। ভেটকি মাছের মুড়ো আর ল্যাজা বাদ দিয়ে গোটা মাছ ছোট ছোট টুকরো করে কেটে, ধুয়ে নুন হলুদ মাখিয়ে রাখতে হবে। পেঁয়াজ, ধনেপাতা আর কাঁচালঙ্কা কুচিয়ে রাখতে হবে। গ্যাসে কড়াই বসিয়ে  তেল দিয়ে গরম করে আলু আর ফুলকপি ভেজে তুলে নিতে হবে। এরপর ভেটকি মাছের টুকরোগুলো ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। ভাজা মাছ থেকে কাঁটা বেছে রাখতে হবে। কড়াইতে আবার তেল দিয়ে গরম করে শুকনো লঙ্কা,  গোটা গরমমশলা, জিরে আর তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে কাঁচালঙ্কা কুচি দিয়ে ভেজে পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে।  পেঁয়াজ ভাজা ভাজা হলে আলু- ফুলকপি ভাজা আর মাছ ভাজা দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো,ধনেপাতাকুচি আর সামান্য কাঁচালঙ্কা কুচি দিয়ে খুব ভালোভাবে নাড়তে হবে। নুন,চিনি আর   ১কাপ   দুধ দিয়ে আবার নাড়তে হবে। যখন দুধ শুকিয়ে মাছ, আলু, ফুলকপি বেশ ঝরঝরে হয়ে আসবে তখন ঘি আর গরমমশলা গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে ঢেকে রাখলেই তৈরি ভেটকি মাছের ঝুরি। খাবার সময় সঙ্গে থাকুক ভাত অথবা লুচি। যদিও রুটি, পরোটার সঙ্গেও এই পদটিকে বেশ লাগে।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...