লিভারের সমস্যায় আখের রস কিভাবে মহৌষধী হিসেবে কাজ করে

সবে পেরিয়েছে ক্রিসমাস-নিউইয়ার মরসুম। পার্টি-পিকনিক-গেটটুগেদারে টানা চড়া তেলমশলার খাবার খেয়ে অনেকেরই অরুচির ভাব এসে গিয়েছে। শরীর ম্যাচম্যাচে, এনার্জি লেভেল লো, ঘুমঘুম ভাব যেন কিছুতেই কাটছে না। এসব সমস্যায় এক দুর্দান্ত দাওয়াই হয়ে উঠতে পারে আখের রস। অল্প নুন আর আদা মিশিয়ে এক গ্লাস আখের রস মুহূর্তে ঝরঝরে করে দেবে শরীর।  

আখের রসকে অনেকেই মনে করেন গ্রীষ্মের পানীয়। কিন্তু এ ধারণা একেবারেই ভুল। শীতকালেও ডিটক্স পানীয় হিসেবে আখের রস উপকারী। হালকা হলুদ রঙের এই তরল যেন সুধারসের মতো মনে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের খুব প্রিয় প্রাকৃতিক পানীয়।

আখের রস প্যাকেটবন্দী হয়ে বিকোচ্ছে এই দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না। আখ মাড়াই কলে চোখের সামনে আখ থেকে রস বের করে কাচ বা প্ল্যাস্টিকের গ্লাসে ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়াই চল। আখের রস শুধু গলা ভেজাতে নয়, পুষ্টিগুণেও খাঁটি। একাধিক রোগ প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার।

লিভারের সমস্যা মেটাতে আখের রস অত্যন্ত উপযোগী পানীয়।দেহে বিলুরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে, এই কারণেই জন্ডিসের আয়ুর্বেদিক ঔষধ।

আখের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা হজমে সহায়তা করে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে।

কিডনি, হৃত্‍পিণ্ড, মস্তিষ্ক, চোখ, পাকস্থলী ইত্যাদি কার্যক্ষম রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া বিপাক ও হজমক্রিয়া স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখে। রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে ডায়াবেটিক রোগীরাও পান করতে পারেন।

আখের রস ক্যান্সার প্রতিহত করে। গবেষণায় দেখা গেছে আখের রসে বিদ্যমান ফ্লেভোনস দেহে ক্যানসারের কোষ বৃদ্ধি ও ছড়ানো প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। আখের রসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রোস্টেট ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে আখের রস খুব কাজ দেয়। এতে থাকে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, আলফা-হাইড্রক্সি অ্যাসিড থাকে যা কোষের উৎপাদন বাড়ায়। ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা দূর করতে সাহায্য করে। আখের রসে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থ থাকে। এর ফলে দাঁতের এনামেল এবং দাঁত মজবুত হয়। ফলস্বরূপ দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

শীতে গর্ভবতী মহিলাদের সুস্থতায় আখের রস খুবই উপকারী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শরীর ঠাণ্ডা রাখতে আখের রস বেশ কার্যকর।

তবে মাত্রাতিরিক্ত আখের রস কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলছেন দিনে দু’গ্লাসের বেশি আখের রস কখনই পান করা উচিত নয়। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...