পাখির কেন লঙ্কায় ঝাল লাগে না ভেবে দেখেছেন কখনও?

জিভ জ্বলছে, চোখ-মুখ লাল। কানে ধোঁয়া। লঙ্কায় কামড় আর হু-হা শুরু। এ ছবি অতি চেনা। অবাক হওয়ার মতো কিছুই নেই। কিন্তু অবাক করে দেয় বাড়ির দাঁড়ে পোষা টিয়াটি। সে কিন্তু টপাটপ খেয়ে যায় লঙ্কা। টুকটুকে লাল লঙ্কা পেলে সে আর কিচ্ছু চায় না। আচ্ছা ওর কি ঝাল লাগে না?

শুনলে অবাক হবেন, সত্যি সত্যিই কিন্তু এই টিয়ার ঝাল লাগে না। শুধু টিয়া কেন, কোনও পাখিরই ঝাল লাগে না। অন্য সব কিছুর স্বাদ পেলেও ঝালের স্বাদ তারা পায় না জিভে।

ক্যাপসাইনিন নামক উপাদানের কারণে মনুষ্য ও অন্যান্য পশুর জিহ্বায় ঝালের স্বাদ অনুভূত হয়, কিন্তু পাখিরা ক্যাপসাইনিনে অনুভূতিহীন। তাই লঙ্কা যত ঝালই হোক না কেন পাখিদের ঝাল লাগে না। লঙ্কায় ক্যাপসাইসিন কতটা আছে তার ওপর নির্ভর করে কোন লঙ্কা কত ঝাল হবে।

দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় জন্মায় ক্যারোলাইনা রিপার লঙ্কা। এই লঙ্কাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল লঙ্কা। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করেও নিয়েছে। ‘ঝাল’ যতই ঝাল লাগুক, মানুষ ভালবাসে ঝালের স্বাদ। ঝাল স্বাদের বিবর্তন ঘটেছে বহু। বিজ্ঞানীদের মতে লঙ্কায় ঝাল বেড়েই চলেছে প্রকৃতির নিয়মে। ঘটেছে বিবর্তনও।

 

Birds1

 

লঙ্কায় স্বাদজনিত কারণে এক ধরনের উত্তাপের সৃষ্টি হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণী, পোকামাকড় এড়িয়ে চলে লঙ্কা। কেবলমাত্র পাখির এই সমস্যা নেই।

স্তন্যপায়ী প্রাণীরা লঙ্কার দানা হজম করে ফেলে, ফলে নতুন করে আর গাছের বংশবিস্তার সম্ভব হয় না। কিন্তু পাখির ক্ষেত্রে তা হয় না- বীজ পাখির মলের সঙ্গে বেরিয়ে আসে এবং নতুন উদ্ভিদের জন্ম হতে পারে।

লঙ্কা ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস আবিষ্কার করেছিলেন। এটি ৬০০০ বছর আগে উত্তর মধ্য আমেরিকায় ব্যবহৃত হয়েছিল এবং ষোড়শ শতকের মধ্যে ইউরোপে পৌঁছেছিল। ঝালের তীক্ষ্ণতা স্কোভিল তাপ ইউনিটে পরিমাপ করা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল লংকা ক্যারোলিনা রিপারের তীক্ষ্ণতা এই স্কেলে ২২ লাখ ইউনিট পর্যন্ত হতে পারে।

তবে লঙ্কার ঝাল জল দিয়ে কখনও ধোয়া যায় না। ক্যাপসাইসিনে নাইট্রোজেন, অক্সিজেনের মত ইলেক্ট্রোনেগেটিভ পরমাণুর অনুপাত কার্বন আর হাইড্রোজেনের থেকে অনেকটাই কম, তাই জাহ্ল লাগলে যতই জল খাওয়া হোক না কেন, কখনওই ঝাল কমে না।  ক্যাপসাইসিন জলের মধ্যে মেশে না।

তার বদলে ঘরোয়া টোটকার নুন, মধু বা ঠাণ্ডা দুধ চলতে পারে।

তথ্য সূত্র- বিজ্ঞান

বিবিসি

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...