বাড়ছে হুপিং কাশির সমস্যা, সাবধান থাকুন

কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে হঠাৎ চড়তে শুরু করল তাপমাত্রার পারদ। এই সকালে গরমে গায়ে সোয়েটার রাখা যাচ্ছিল না, রাত হতেই কম্বল না হলে চলে না! আবহাওয়ার খামখেয়ালে এমন অভিজ্ঞতা প্রায় সবার। উষ্ণতম সরস্বতী পুজো পেরিয়ে এসে আবহাওয়া অফিসের বার্তা ফের ফিরতে পারে শীত।

আবহাওয়ার এহেন বদল জোরদার প্রভাব ফেলছে সাধারণের শরীরের। ঠাণ্ডা লেগে সর্দি জ্বর তো সাধারণ ব্যাপার। চিকিৎসকরা শোনাচ্ছেন হুপিং কাশির সাবধানবাণী।

ইতিমধ্যেই হানাও দিয়েছে হুপিং কাশি। জ্বর-সর্দি বা লাগাতার কাশি ওষুধে না কমলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন রাজ্য স্বাস্থ্যকর্তারা। হঠাৎ জ্বর সঙ্গে খুশখুশে কাশি। সাধারণ শীতের জ্বর-কাশি ভেবে অবহেলা করলেই বিপদ বাড়ছে।

কাশি একবার শুরু হলে আর থামছেই না। একটানা দমকে দমকে কাশি। কাশির দাপটে বুকে ব্যথা এমনকি শিশুদের ক্ষেত্রে কাশতে কাশতে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও আছে। 

বরডাটেলা পারটুসিস ব্যাক্টেরিয়া থেকে এই সংক্রামক রেসপিরেটরি ইনফেকশন হয়। শুধু বাচ্চাদের নয় বড়দেরও হতে পারে। এক-দু সপ্তাহ ভাইরাল ইনফেকশনের মতো জ্বর হয়, চোখ, নাক থেকে জল বের হয়। সামান্য কাশি হয়। দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ কাশি হয়, একনাগাড়ে কাশি হতে পারে।

থেমে গেলে লম্বা শ্বাসের সঙ্গে ‘হুপ’ আওয়াজ হয়। কাশির দুটো স্পেলের মাঝে বাচ্চা স্বাভাবিক থাকে। কাশি ভালো হতে দু’সপ্তাহ থেকে দু’মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।

দুই সপ্তাহের বেশি এরকম কাশি হতে থাকলে বা নিঃশ্বাসের সঙ্গে হুপ আওয়াজ হলে ডাক্তাররা হুপিং কফের সন্দেহ করেন। নিশ্চিত হতে ডিপ থ্রোট সোয়াব কালচার করা হয়

ছয় সপ্তাহ বয়সের আগে বাচ্চার হুপিং কাশি হলে প্রাণ সংশয় থেকে যায়। এছাড়া অন্য কোনও অসুখের সঙ্গে হুপিং কাশি হলেও জটিলতা বাড়তে পারে। নিউমোনিয়াও হতে পারে। টিউবারকিউলোসিস আক্রমণের আশঙ্কাও দেখা যেতে পারে।  

এই রোগের ব্যাকটিরিয়া শ্বাসনালির উপরিভাগে আক্রমণ করে। অনেক সময় শ্বাসনালির উপর চাপ দেয়। রোগ সম্পূর্ণ ভ্যাকসিনে নিয়ন্ত্রণে আসে।  জন্মের দেড় সপ্তাহের মধ্যে ডিটিপি অর্থাৎ ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, পারটুসিস-এর রুটিন টিকা দেওয়া হয়। পরে তিনদফায় এই টিকা নিতে হয়। একটি ডোজ বাদ পড়ে গেলে একটু বড় হলে বাচ্চার হুপিং কাশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ভবিষ্যতে।

তবে এই রোগের হঠাৎ প্রাদুর্ভাব ঘটায় ভাইরাসের জিনের চরিত্র বদলের দিকটিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা।

ফুসফুস ও শ্বাসনালী সংক্রান্ত যে কোনও অসুস্থতার জন্য যোগাযোগ করা যায় আনন্দলোক হসপিটালে (Anandalok Hospital)। এছাড়া শিশু বিভাগে চিকিৎসার জন্য তথ্য পাবেন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এবং হেল্পলাইনে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...