খাজুরাহো মন্দির নির্মাণ করেছিলেন চন্দ্রবর্মন

'টেম্পল অফ লাভ' নামেই পরিচিত 'খাজুরাহো মন্দির'। ঐতিহাসিকদের মতে, ৯৫০ থেকে ১০৫০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে এই মন্দিরগুলি নির্মাণ করা হয়েছিল। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এক সময় বারানসী শহরে হেতম্বী নামে এক সুন্দরী ব্রাক্ষণ কন্যা থাকতেন। খুব কম বয়সেই স্বামীকে হারিয়ে ছিলেন তিনি। চন্দ্র দেব তার রূপ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তারপর চন্দ্র দেব ও হেতম্বীর মিলনে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। চন্দ্রের সাহস ও শক্তি দুই ছিল এই শিশুর মধ্যে। তাই হেতাম্বী তার নাম রেখেছিলেন চন্দ্রবর্মন। হেতাম্বী ও চন্দ্রের এই সন্তানই পরে চন্দ্র দেবের আদেশে খাজুরাহোর মন্দির নির্মাণ করেন। চন্দ্র দেবের ভবিষ্যতবাণী ছিল এই মন্দির হেতাম্বীকে তার পাপ থেকে মুক্তি দেবে। 

তবে দেশের অন্যান্য প্রাচীন মন্দিরগুলির থেকে এই মন্দিরের বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ এই মন্দিরগুলির গাত্রে দেবদেবীদের শৃঙ্গার মুদ্রা ভাস্কর্যের রূপ দেওয়া হয়েছে। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, মাহমুদ গজনি ভারতে এসেছিলেন এই মন্দিরগুলি লুঠ করবার উদ্দেশ্যে। তবে তিনি সফল হতে পারেননি। 

প্রাচীন ভারতের ভাস্কর্য ও স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন হল এই মন্দির। সেই সময় পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছিল এই মন্দির। তবে শুধুমাত্র একটি মন্দির নেই। অনেকগুলি মন্দিরের সমষ্টি হল 'খাজুরাহো মন্দির'। তবে মধ্য ভাগেই রয়েছে মহাদেব মন্দির। এই মন্দিরের আরাধ্য দেবতা হলেন মহাদেব অর্থাৎ শিব। মধ্যযুগে এখানে মোট ৮৫টি মন্দির ছিল। যার মধ্যে শুধু মাত্র ২২টি হিন্দু মন্দির রয়েছে। প্রত্যেকেটি মন্দিরেরই একটি করে প্রবেশদ্বার, হলঘর ও গর্ভগৃহ রয়েছে। প্রাচীন ভারতের এই ঐতিহ্যবাহী  মন্দিরের নাম রয়েছে 'ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' স্থানগুলির তালিকায়। মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখন্ড এলাকায় ছত্তড়পুর জেলায় অবস্থিত এই মন্দিরটি কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ১,০৬৬.৪ কিলোমিটার।

অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি খাজুরাহো ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। নবীন শিল্পী ও ভাস্করদের অবশ্য দ্রষ্টব্য।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...