যেসব খাবার ফ্রিজে রাখা উচিৎ নয়

উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করি, তার মধ্যে একটি হলো ফ্রিজ। রান্নার পরিমান বেশি হয়ে গেলে বা কাঁচা বাজার বেশি হয়ে গেলেও নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় এখন আর নেই কারণ প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে ফ্রিজ নামক বস্তুটি। কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ সবই মানুষ স্টোর করে রাখে ফ্রিজে। এতে নষ্ট হওয়ার ব্যাপার থাকে কম। কিন্তু এমন কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলি ফ্রিজে মোটেই রাখা উচিত নয়। সেইগুলি নিয়েই আজ আমরা আলোচনা করবো।

১) আলু- প্রথমেই আসা যাক আলুর কথায়। আলু ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রাখলে সবথেকে ভালো থাকে। কিন্তু ফ্রিজের ঠান্ডা আবার অত্যধিক বেশি ঠান্ডা। এই ঠান্ডা আবার আলু সহ্য করতে পারে না। ফ্রিজের ভিতরে রাখার ফলে আলু থেকে স্টার্চ আলাদা হতে থাকে। এর ফলে আলুর টেক্সচারটি বালুকাময় হয়ে যায় এবং তা যথেষ্টই অস্বস্তিকর লাগে। আরো বেশিক্ষন ফ্রিজে থাকার ফলে স্টার্চ থেকে চিনি আলাদা হতে শুরু করে। এর ফলে আলুর নিজস্ব গন্ধ আর থাকেনা।

২) পেঁয়াজ- পেঁয়াজ এমন একটি জিনিস যা ফ্রিজে রাখলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু নরমাল তাপমাত্রায় রাখলে ঠিক থাকে। তাই পেঁয়াজকে ফ্রিজে না রাখাই ভালো। পেঁয়াজকে কখনো সরাসরি সূর্যালোকে রাখবেন না। কিন্তু একবার পেঁয়াজ কেটে ফেলার পর তা যদি ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন পরে তাহলে একটি এয়ার টাইট কন্টেনার করে পেঁয়াজটি ফ্রিজে রাখুন এবং ভেজিটেবল রাখার জায়গাতেই শুধুমাত্র পেঁয়াজ স্টোর করুন কারণ অন্য জায়গার থেকে এই জায়গার তাপমাত্রা একটু কম থাকে।

৩) রসুন- রসুন অত্যধিক ঠান্ডায় রাখার ফলে তার গন্ধ হারিয়ে ফেলে। তাই রসুনকে যতটা সম্ভব ফ্রিজে না রাখার চেষ্টা করুন। যদি ফ্রিজে রাখতেই হয় তাহলে ভালো ভেন্টিলেশনযুক্ত কোনো কন্টেনারে রেখে তারপরই ফ্রিজে রাখতে হবে। এই ক্ষেত্রে পেপার ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। রসুনের মাথার দিক দিয়ে ছাড়ানো হয়ে গেলে তা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে তাই রসুন ছাড়িয়ে রাখার ১০ দিনের মধ্যেই সেই রসুন কাজে লাগিয়ে নেওয়া দরকার।

৪) মধু- ফ্রিজে রাখার ফলে মধু জমাট বেঁধে যেতে পারে। এর ফলে মধু ধীরে ধীরে বালুকাময় এবং অবশেষে কঠিন আকার ধারণ করতে পারে। জমে যাওয়া মধু খাওয়ার অযোগ্য। যদি কখনো ফ্রিজে মধু রেখে থাকেন তাহলে দেখবেন মধু জমে গেছে। মধু জমে গেলে সেই মধুর শিশি গরম জলের বাটিতে রেখে দিলেই হালকা গলে যাবে। তবে মধু ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই রাখা ভালো।

৫) ব্রেড- ব্রেড হাফ খাওয়ার পর অনেকেই তা ফ্রিজে রেখে দেন। মনে করা হয়, ফ্রিজে রাখার ফলে ব্রেডের মধ্যে ফাঙ্গাস বাসা বাঁধতে পারে না। কথাটা সত্যিই হলেও, ব্রেড ফ্রিজে রাখার ফলে তা অতিমাত্রায় শুকিয়ে যায় এবং যথারীতি খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে।

এইসব খাবার ছাড়াও বাদাম, টমেটো, আপেল, কফি প্রভৃতি জিনিসও ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। মূলত কোনো খাবারই ফ্রিজে রেখে খাওয়া উচিত নয়। রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখলে সেই খাবারের পুষ্টিগুণ কমে আসে। তাই অল্প পরিমান রান্না করুন এবং দিনের রান্না করা খাবার সেই দিনই শেষ করুন আর যদি একান্তই রান্না করা খাবার ফ্রিজে রেখে খেতেই হয়, তাহলে এক এক বেলার খাবার এক একটি পাত্রে ঢাকা দিয়ে রাখুন-এতে কিছুটা হলেও খাদ্যগুণ বজায় থাকে।     

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...