বিমানে ওঠার আগে কি কি খাওয়া উচিত নয়

বিমানে উঠতে গেলে কমবেশি ভয় অনেকেই পেয়ে থাকে। এমনিতেই বিমানবন্দরের নানা চেকিং, ব্যাগপত্তর এইসব নিয়ে চিন্তার শেষ থাকে না। তার ওপর বিমানে প্রবেশ করলেই পেটের ভিতরে গুড়গুড় করে ওঠে। কেন বলুন তো? আপনি এমন কোনও খাবার খেয়ে বিমানে উঠছেন না তো যার ফলে পেটে গ্যাস হয়ে যাচ্ছে? চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক এরকম কিছু খাবারের কথা যা বিমানে ওঠার আগে কখনোই খাওয়া উচিত নয়। তারমধ্যে অন্যতম কিছু হলো, অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার, অ্যালকোহোল, কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস প্রভৃতি।

অতিরিক্ত তেলমশলাযুক্ত খাবার মানুষের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ। শরীরকে সুস্থ রাখতে তাই অধিক তেলমশলা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বিমানে ওঠার আগে অনেকেই আছেন যারা বার্গার বা অন্য কোনো তেলমশলাযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন। কিন্তু বিমানে চড়ার আগের মুহূর্তে এইসব খাওয়ার ফলে পেটের নানা সমস্যা কিন্তু যাত্রাপথের সঙ্গী হতেই পারে। এমনিতেই বিমানের ভিতরে থাকে একধরণের প্রেসার। তারপর খাবারের প্রেসার যদি একত্রিত হয় তাহলে পেটের সমস্যা হওয়া কেউ আটকাতে পারে না। তাই অনেকসময় বিমানে ওঠার পর থেকেই পেট গুড়গুড় করা, বমিভাব, বমি হওয়া প্রভৃতি সমস্যা হতে পারে।

এছাড়াও দেখা যায়, বিমানে ওঠার পরে মানুষের শরীরের রক্ত সঞ্চালনের উপর বিমান যাত্রার এক অদ্ভুত প্রভাব পড়ে। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় পা ঝুলিয়ে বসে থাকার ফলে সেই পা ফুলে যায় তা আমরা সবাই জানি। আর বিমানে বেশিক্ষন একভাবে ওই প্রেসারের মধ্যে বসে থাকার ফলে পা ফোলা থেকে শুরু করে ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস রোগ পর্যন্ত হতে পারে। ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস হলো এমন একধরণের রোগ যাতে শরীরের কোনো এক জায়গায় তৈরী হওয়া একটি ব্লাড ক্লট সারা শরীরে ট্রাভেল করতে শুরু করে। ঘুরতে ঘুরতে এই ক্লট যদি কোনো কারণে হৃদপিন্ডে বা ফুসফুসে পৌঁছে যায় বিপদ ঘটে তখনই। এরফলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হওয়া থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কানাডার একদল চিকিৎসকের করা গবেষণা থেকে জানা গেছে, বিমানে ওঠার আগে অতিরিক্ত তেলমশলা যুক্ত খাবার খেলে রক্ত সঞ্চালনে এক অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা যায়। তবে কি থেকে এই পরিবর্তন হয় বা খাবারের সাথে রক্ত সঞ্চালনের কি সম্পর্ক তা অবশ্যই প্রমাণিত হয়নি।

 

বিমানে ওঠার আগে অনেকেই অল্প মাত্রায় অ্যালকোহোল পান করে থাকেন। বিমানে চড়ার ভয় কাটানোর জন্য বা রাতে একটু ভালো করে ঘুমানোর জন্য অনেকেই অ্যালকোহোলের উপর ভরসা রাখেন। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমান অ্যালকোহোলের পান করার ফলে শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়। এছাড়াও প্রেসারাইজড কেবিন এবং বিমানের নোনতা খাবার সব মিলিয়ে শরীরে অস্বস্তি তৈরী হতে পারে।

বিমানে ওঠার আগে এমন কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয় যা ইন্টেস্টাইনকে বিস্তৃত করতে সাহায্য করে। এমন কোনো খাবার খাওয়াও উচিত নয় যার থেকে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিনস, পেঁয়াজ প্রভৃতি থেকে গ্যাস হতে পারে। তাই বিমানে ওঠার আগে এইসব খাবার না খাওয়াই ভালো।

এছাড়াও কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস বিমানে চড়ার আগে যত কম পান করবেন ততই ভালো। বিমানের প্রেসারে থাকার সময় কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস থেকে একধরণের চাপ তৈরী হয়। এর ফলে অবডোমিনাল ব্লটিং এবং অবডোমিনাল ক্র্যাম্পিং শুরু হয়।

কখনো বিমানে ওঠার পর মনে হয়েছে যে শরীরটা একটু খারাপ খারাপ লাগছে? তাহলে একবার মনে করে দেখুন তো এই খাবারগুলির মধ্যে কোনওটি কি আপনি খেয়ে বিমানে উঠেছিলেন? যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে পরেরবার থেকে বিমানে ওঠার আগে খাওয়াদাওয়ার উপর একটু বেশি নজর দেবেন। এমন কোনো খাবার খাবেন না যার থেকে শরীরে কষ্ট হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...