অফিস হোক বা বেড়াতে যাওয়া, পাবলিক ট্রান্সপোর্টের থেকে গাড়ির উপরেই বেশি ভরসা করেন অধিকাংশ মানুষ। নিজের গাড়ি থাকলে তো খুবই ভালো। আর না থাকলেও সমস্যা নেই। অনলাইনে ক্যাব বুক করে নিলেই হলো। কিন্তু জানেন কি, গাড়ি চড়ার অভ্যেস কতটা ক্ষতি করতে পারে একজন মানুষের? কিভাবে? চলুন সেটাই জেনে নেওয়া যাক.................
১) গাড়ির ভেতরে এসি চলার কারণে গাড়ির জানলার কাঁচ প্রায় নামানো হয়না বললেই চলে। সেক্ষেত্রে গাড়ির ভেতরে দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে সবসময় এসি না চালিয়ে কিছু সময় অন্তর জানলার কাঁচ নামানো ভালো। এছাড়াও এসির ভেন্টের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অনেক ধরণের জীবাণু।এসি চালানোর সাথে সাথে তা মেশে গাড়ির ভেতরের বাতাসের সাথে।এর ফল হিসেবে দেখা মেলে নানাধরণের অসুস্থতার।
২) গাড়ি নিয়ে সারাদিন ঘোরার ফলে এক একসময়ে নামতে হয় এক এক জায়গায়। কোনো জায়গায় অত্যধিক ধুলো তো কোথাও বসবাস করে জীবাণু। সেক্ষেত্রে যতবার গাড়ির দরজা খুলে বেরোনো হয় সেইসব ধুলো ও জীবাণু গিয়ে ঢোকে গাড়িতে। সেই জীবাণু বা ধুলো থেকে ডাস্ট অ্যাল্যার্জি যেমন হতে পারে সেরকমই হতে পারে অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতা।এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গাড়ি নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। শুধু গাড়ির বাইরেটি নয় ভেতরটাও সমানভাবে পরিষ্কার রাখা জরুরি।
৩) সারাদিন অফিস করে অনেকসময়ই আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি।কিন্তু কিছু সময়ে আবার অত বেশি পরিশ্রম না করলেও নিজেকে খুব ক্লান্ত মনে হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যত লম্বা যাতায়াতের পথ ততই কম খুশির পরিমান।খুশির পরিমাণকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় হ্যাপিনেস স্কোর। দেখা গেছে, নিয়মিত যারা ৫০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা গাড়িতে ট্রাভেল করেন তাদের উদ্বেগ ও ডিপ্রেশনের পরিমান হয় অন্যদের তুলনায় অনেকটা বেশি। তাদের আবার মুড সুইং-ও হয় অনেক বেশি।
৪) গাড়ির দুর্গন্ধ দূর করতে অনেকেই ভরসা করেন নানা কেমিক্যাল ফ্রেশনারের উপরে।কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এইজাতীয় কেমিক্যালযুক্ত ফ্রেশনার থেকে প্রচুর কেমিক্যাল স্মোক বেরিয়ে গাড়ির ভেতরে ঘুরতে থাকে।এই কেমিক্যাল স্মোক থেকে শরীরে নানা এফেক্ট হতে পারে।বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সবসময় গাড়িতে ফ্রেশনার না দিয়ে জানলা খুলে রাখলেও গাড়ির মধ্যে থাকা ড্যাম্প গন্ধ অনেকটাই কমে যায়।
৫) দেখা গেছে, গাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ট্রাভেল করার ফলে খিদে বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনি হয়তো ভাববেন খিদে বাড়া তো ভালো লক্ষণ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা একেবারেই সহমত পোষণ করছেন না। তারা জানাচ্ছেন, রাস্তাঘাটে খিদে পাওয়ার ফলে আমাদের কমফোর্ট ফুডের দিকে হাত বাড়াতে হয়। সেক্ষেত্রে শরীরে অতিরিক্ত কিছু ক্যালোরির প্রবেশ ছাড়াও লাভ কিছুই হয় না।
এইসব কারণবশত বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যতটা কম সময় গাড়ির মধ্যে কাটানো যায় ততই ভালো। তাছাড়াও গাড়িতে বেশিক্ষন বসে থাকার ফলে স্পন্ডেলাইটিসের সমস্যাও দেখা দিতেই পারে। অসম্ভব কিছুই না। তাই এরপর থেকে লং ড্রাইভে যাওয়ার আগে একবার এগুলো ভেবে দেখবেন নাকি???