সাংবাদিক লতা, সঙ্গে কিশোর

সাক্ষাৎকার চলছে কিশোরকুমারের। প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন করলেন তাঁকে,
আপনি এখন খুশি তো?
কিশোরের উত্তর, "আমি ভীষণ খুশি। আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই, আমি এবার আমার বাড়ি ফিরে যেতে চাই, খান্ডোয়াতে, মধ্যপ্রদেশে। মন থেকে ডাক পাচ্ছি।"
কিশোরের উল্টোদিকে সাংবাদিকের ভূমিকায় যিনি ছিলেন তিনি আর কেউ নন, সুর সম্রাজ্ঞী লতা স্বয়ং।
সাক্ষাৎকার দিতেই যিনি অভ্যস্ত তিনি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তাঁর আর এক লেজেন্ডের।
নিউইয়র্কের একটি ভারতীয় টেলিভিশনের উদ্যোগে নেওয়া হয়েছিল এমন একটি সাক্ষাৎকার পর্বের।
ওয়াশিংটনের বিখ্যাত ওয়াটারগেট হোটেলে নেওয়া হয়েছিল সাক্ষাৎকার। সাংবাদিকদের সঙ্গে দুষ্টুমি করতে অভ্যস্ত ছিলেন কিশোর। তাই সাংবাদিক লতার সঙ্গে তিনি কী করবেন তা নিয়ে কৌতুহল ছিলই। কিশোর এসেছিলেন হলুদ গোলাপ হাতে নিয়ে।
জানা-অজানায় জমে গিয়েছিল লতা আর কিশোরের সাক্ষাৎকার । দুজনেই পরিচিত ভঙ্গীতে।
লতা আর কিশোরের সম্পর্কটা শুরু থেকেই ছিল এরকমই। সহজ এবং গভীর বন্ধুত্বের।
কিশোর কুমার আর তিনি জন্মেছিলেন একই বছরে। সন ১৯২৯। কিশোরকুমার তাঁর চেয়ে ২ মাসের বড়।
রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে তিনি থাকা মানেই একবারের জন্যও হাসি বন্ধ করার উপায় নেই। নানারকম মজার কথায় এমন হাসাতেন যে হাসি থামতেই চাইত না লতার। হাসির চোটে চোখে জল চলে আসত। কিন্তু গানের মূহুর্ত এলেই একেবারে বদলে যেতেন।
লতাকে অনুরোধ করতেন তাঁর ভার্সানটা আগে গাইবার জন্য। মন দিয়ে শুনতেন। তারপর উজাড় করে দিতেন নিজেকে গানের কাছে। যন্ত্রণার গানেও। এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল মেহেবুবা ছবিতে আরডি বর্মনের ‘মেরে নয়না, শাওন ভাদো’ রেকর্ডিং-এর সময়।
দুজনেই সেরা। দুজনেই লিজেন্ড। কিন্তু প্রতিযোগিতা ছিল না তাঁদের মধ্যে। সুর সম্রাজ্ঞীর কথায়, "ম্যায় ইয়ে নেহি কাহুঙ্গি হাম কম্পিটিটিভ থে, বলকি ইয়ে কাহুঙ্গি হাম দোনো দিল পুরি তারাহ সে লাগা কর গাতে থে" এই বোঝাপড়াই তাঁদের গানকে মানুষের মনে জাগিয়ে রেখেছে বছরের পর বছর।

 

তথ্যঋণ: অন স্টেজ উইথ লতা

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...