বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে লুকিয়ে বহু ইতিহাস

বৈষ্ণোদেবী মন্দির ভারতের গুরুত্বপূর্ণ দেবীপীঠ। বৈষ্ণোদেবী দেবী পার্বতীর অন্য রূপ। কথিত আছে, বহু কাল আগে ভারতের ‌একটি ছোট গ্ৰামে বাস করতেন রত্নাকর সাগর ও তাঁর স্ত্রী। তাঁদের কোনও সন্তান ছিল না। অনেক চেষ্টার পর তাদের এক কন্যা সন্তান জন্মায়।এই কন্যাসন্তানের জন্মের পরেই তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন যে সন্তানের ভবিষ্যতের উপর কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবেন না তাঁরা। এই কন্যা সন্তানই বৈষ্ণোদেবী নামে পরিচিত লাভ করেছিল। ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত ছিল ঐ কন্যা। অনেক ছোট বয়সেই তিনি বিষ্ণুকে তুষ্ট করতে তপস্যা করেছিলেন। তার এই তপস্যায় খুশি হয়ে বিষ্ণু তাকে আশির্বাদ করেছিলেন।

 

VaishnoDevi1

ত্রিকুট পর্বতে রামের নির্দেশে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। ঐ মন্দিরে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব দেন মহাবীর হনুমানকে ও একটি সিংহকে। এছাড়াও তাকে একটি তীর ধনুক দিয়ে ছিলেন বিষ্ণু। পরবর্তীকালে এই এলাকাতেই মন্দির বানানো হয়। যা আজকের ‌যুগের মানুষ বৈষ্ণোদেবী মন্দির বলে ডাকেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই পুরো মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন শ্রীধর নামের এক গরীব পূজারী। তিনি বৈষ্ণোদেবীর বড় ভক্ত ছিলেন। বালিকা রূপে শ্রীধরকে দেখাও দিয়ে ছিলেন বৈষ্ণোদেবী। দেবীর এই রূপকে খুবই জাগ্ৰত বলে মনে করা হয়।

ভক্তদের বিশ্বাস এই মন্দিরে পুজো দিলে সব ইচ্ছা পূরণ হয়ে। তাই প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত বৈষ্ণো মাতার দর্শন করতে যান। মহাভারতেও উল্লেখ রয়েছে বৈষ্ণোদেবীর। বলা হয়, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে নামার আগে পান্ডাবরা বৈষ্ণোদেবীর পূজা করেছিলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের আদেশ করেছিলেন দেবীর আরাধনার জন্য।

 

VaishnoDevi2

জম্মু কাশ্মীর রাজ্যের রেজি জেলার কাটরা এলাকায় অবস্থিত বৈষ্ণোদেবীর মন্দির। পাহাড়ে ঘেরা এই মন্দিরটির কাটরা থেকে দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। এছাড়াও জম্মু থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৬১ কিলোমিটার। প্রত্যেক বছর নবরাত্রি উপলক্ষে নয় দিন এই মন্দিরে পুজো করা হয় বৈষ্ণোদেবীর। এই মন্দিরের মধ্যে রয়েছে তিনটি গুহা। তবে এই মন্দির গুলির মধ্যে একটি গুহা বছরে বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকে। এই বিশেষ দিনগুলিতে দেবীর পূজা করেন ভক্তরা। প্রতিবছর প্রায় ৮ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...