ভারতে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রায় ১৮ লক্ষের বেশি মানুষ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। কলকাতাও এ ব্যাপারে চাপ মুক্ত নয়, বরং বাকি রাজ্যের তুলনায় কলকাতায় স্ট্রোকে আক্রান্তের হার প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি।
ধূমপান, ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ বা অবসাদে ভুগছেন? আসলে এই সমস্ত কারণ স্ট্রোকের বিপদ ডেকে আনে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি স্ট্রোকের আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। অবসাদ, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে কোষের মৃত্যু হয়। মস্তিষ্কের ক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটে। কারও পারিবারিক ইতিহাসে স্ট্রোকের সমস্যা থাকলে সেখান থেকেও কিন্তু আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।
স্ট্রোক তিন ধরনের হয়ে থাকে। মাইল্ড স্ট্রোক, ইসকেমিক স্ট্রোক ও হেমোরেজিক স্ট্রোক। মাইল্ড স্ট্রোকে রোগীর মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ সাময়িক বন্ধ হয়ে আবারও চালু হয়। এটি মূলত বড় ধরণের স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ।
ইসকেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের ও শরীরের অন্যান্য স্থানের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে।
হেমোরেজিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিঁড়ে রক্তপাত হয়। স্ট্রোক, মস্তিষ্কে কতোটা ক্ষতি করবে এটা নির্ভর করে এটি মস্তিষ্কের কোথায় ঘটেছে এবং কতটা জায়গা জুড়ে হয়েছে, তার ওপর।
স্ট্রোকের লক্ষণ
অনেকসময় অজান্তেই স্ট্রোক হয়। কোনও লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে স্ট্রোকের প্রাথমিক কিছু উপসর্গ আছে। চিনতে না পারা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টিশক্তি এসবই স্ট্রোকের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। চলাফেরার ভারসাম্যে অসুবিধা, চলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া, প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ হারানো, ভাবনা চিন্তায় অসুবিধা এসবও স্ট্রোকের লক্ষণ। চিকিৎসার পরিভাষায় এসবই ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’র লক্ষণ। সাইলেন্ট স্ট্রোকও যথেষ্ট বিপদজনক। নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, ডিমনেশিয়ার মতো সঙ্কট শুরু হতে পারে এ থেকেই। সাইলেন্ট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেই কিছুক্ষণের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যান। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রেখে যায়। পরে বড় ধাক্কা আসে।
স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে আক্রান্ত রোগীকে বিছানায় বা মেঝেতে কাত করে শুইয়ে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হবে, না হলে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করত হবে।
আনন্দলোক হসপিটালের নিউরো সার্জারি এবং নিউরো মেডিসিন বিভাগে স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত আছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য পাবেন সংস্থার ওয়েবসাইট এবং হেল্পলাইনে।