বৈশাখের স্বাদ পিয়াল ফল

শহুরে খাবারের রোজনামচায় তাকে কেউ চেনে না। কিন্তু গ্রামে তার ভারী নামডাক। স্বাদ আর স্বাস্থ্য, দুই তার কারণ।
নাম পিয়াল ফল। হঠাৎ শুনলে মনে হতে পারে, পিয়াল ফুল তো চেনা, কিন্তু পিয়াল ফল!

শহর এবং শহরতলির বাজারে পিয়াল ফল পুরোদস্তুর অধরা, কিন্তু শহর ছাড়িয়ে গ্রামে ঢুকলে ছবিটা বেশ অন্যরকম।
বৈশাখী রোদ চড়লেই গ্রাম ম-ম শাল পিয়ালের গন্ধে। বন জঙ্গল ভরে থাকে পিয়াল ফলে। দেখতে অনেকটা কাঁচা সুপারির মতো। পাকলে হয় বাদামি।

PiyalSeeds1

বাঁকুড়া আর রাঢ়বঙ্গ, ঝাড়খন্ডের গ্রামের হেঁশেলে গরম পিয়াল বেশ জরুরি জিনিস। গাছ থেকে ঝরে পড়ে ফল। বছরের এই সময়টা পিয়াল কুড়ানো বা পেড়ে আনা তাই নিত্য দিনের কাজ। অনেকে আবার চারকুলও বলে।

কাঁচা সবুজ পিয়াল কম সুস্বাদু নয়। গ্রীষ্মের দুপুরে বনের মধ্যে চলে পিয়াল ফল সংগ্রহ। অনেকে আবার এই ফল নুন লঙ্কা দিয়ে মেখে জঙ্গলের মধ্যেই ‘পিকনিক’-এর স্বাদ নেয়।

শুকনো পাতা কুড়িয়ে আগুন জ্বালান হয়। শুকনো লঙ্কা পুড়িয়ে মাখা হয় টক পিয়ালের সঙ্গে। চৈত্র-বৈশাখ মাসে পাকতে শুরু করে পিয়াল। বদলে যায় তার গন্ধও। অনেকটা জামের মতো।

PiyalSeeds2

ফল ভাঙলে ভিতরে সবুজ জেলির মতো এক রকম পদার্থ। বীজ থাকে।প্রাচীন বনৌষধিতে মিলেছে এই ফলের গুনাগুণ।
এই সমস্ত অঞ্চলে পিয়াল ফল ভীষণ লোকপ্রিয়। স্থানীয় বিশ্বাস এই ফল প্রচন্ড গরমে তাত থেকে বাঁচায়। গরমের অসুখ দূরে রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কিন্তু সে সব বাদ দিয়ে এই ফলের অসাধারণ স্বাদের জন্য বছরভর বৈশাখের অপেক্ষা করে থাকে মানুষ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...