একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় কর্কট রোগের মতো মারণ ব্যাধি ধরা পড়লে কেমোথেরিপি বা সার্জারির মধ্যে দিয়ে রোগ নিরাময় বা কষ্ট লাঘব করা হয়, কিন্তু যখন একেবারে অ্যাগ্রেসিভ স্টেজে ধরা পড়ে তখন রোগী মারাত্মক কষ্টকর অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই সময় রোগীর কষ্ট কমিয়ে ভালো রাখার চেষ্টা করা হয় প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মাধ্যমে।
প্যালেয়েটিভ কেয়ারের বাংলা হল উপশন চিকিৎসা। লাতিন শব্দ প্যালিয়াম থেকে প্যালিয়েটিভ শব্দটির জন্ম। প্যালিয়াম মানে এমন এক জিনিস যা দিয়ে চাদরের মতো ঢেকে দেওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এর সংজ্ঞা হল কোন রোগ যখন নিরাময় অযোগ্য, সেই সময়ে আমরা তাকে শারীরিক ও মানসিক, আত্মিক ও সামাজিকভাবে যে সাপোর্ট দেওয়া হয়, সেটাকে প্যালেয়েটিভ কেয়ার বলে।
প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মূল উদ্দেশ্য ব্যথা কমানোর পাশাপাশি রোগীর অন্যান্য শারীরিক কষ্ট নিয়ন্ত্রণ করা ও মন ভাল রাখার চেষ্টা করা। শরীরের কষ্ট কমানোর পাশাপাশি মনের জোর আনাও প্যালিয়েটিভ কেয়ারের লক্ষ্য।
প্যালিয়েটিভ কেয়ার চিকিৎসায় রোগীদের নানান কষ্টকর শারীরিক সমস্যা লাঘব করা হয়। শুধু ক্যানসার নয়, অনেক দুরারোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে প্যালিয়েটিভ কেয়ার দেওয়া হয়। টার্মিনাল অসুস্থ রোগীর যে সব শারীরিক সমস্যা বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে সেগুলি হল, নিঃশ্বাসের কষ্ট, ভয়ানক যন্ত্রণা, বমি, ভয়ানক ক্লান্তি, ঘুম কমে যাওয়া, শরীর জুড়ে যন্ত্রণা সহ নানান কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়। এই সব কষ্ট কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে নিউট্রিশন থেরাপি, ফিজিক্যাল থেরাপি ও ডিপ ব্রিদিং টেকনিকের সাহায্যে রোগীকে রিলিফ দেওয়া হয়।
আগে নিরাময়ের কঠিন স্তরে রোগীকে প্যালিয়েটিভ কেয়ার দেওয়া হত এখন ক্যান্সারের মতো রোগে পরিস্থিতি বুঝে প্রথম পর্যায়েও রোগীকে প্যালিয়েটিভ কেয়ার দেওয়া হয়।
ক্যানসার জটিলতা নিরাময়ে পূর্বভারতের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান সরোজ গুপ্তা ক্যানসার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। এখানে আছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এবং সমস্ত রকম আধুনিক সাপোর্ট সিস্টেম। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে আছে বিশেষ প্যালিয়েটিভ কেয়ার ইউনিট। রোগী এবং রোগীর আত্মীয়দের ভরসা দিতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে প্যালিয়েটিভ কেয়ার টিম। আছে হোম কেয়ার ফেসিলিটি। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে সমস্ত তথ্য ও হেল্পলাইন সহায়তা পাওয়া যায়।