আমরা মাঝে মাঝেই লোকজনকে বলতে শুনি, ‘ওর তো ডায়ালিসিস চলছে’। ক্যান্সারের কেমোথেরাপির মতোই যেন বহুল ব্যবহৃত শব্দ হয়ে উঠেছে ডায়ালিসিস। শব্দটি যদিও পরিচিত, কিন্তু ডায়ালিসিস যে ঠিক কী, সে নিয়ে খুব পরিষ্কার ধারণা অনেকেরই নেই।
কিডনির কাজ শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ অপসারণের জন্য রক্তের পরিস্রাবণ। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ। সোডিয়াম পটাসিয়াম নিয়ন্ত্রণ। ভিটামিন ডির সক্রিয় ফর্ম উৎপাদন করে হাড়কে ঠিক রাখা। এরিথ্রোপয়েটিন উৎপাদন যা লাল রক্ত কণিকা উৎপাদনে ভূমিকা রাখা।
জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে যখন মানুষের দুই কিডনিই তাদের স্বাভাবিক কাজ বন্ধ করে দেয় তখন রক্তে দূষিত পদার্থ, বর্জ্য জমতে থাকে। তখন ডায়ালিসিস নামক কৃত্রিম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর যে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয় তা বের করা আনা হয়।
দূষিত রক্তের মাধ্যমে রোগীর শরীরে বাহিত বর্জ্য পদার্থ ডায়ালিসিসের ্মাধ্যমে শোধন করা হয়।
পদ্ধতি অনুযায়ী ডায়ালিসিস দু’ধরনের। ডায়ালিসিসে আমাদের শরীর থেকে রক্ত বের করে পরিস্রুত করে আবার তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করানো হয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় হিমোডায়ালসিস।
অন্য একটি পদ্ধতিটি হল পেটের মধ্যে নল ঢুকিয়ে তার মধ্যে দিয়ে ডায়ালিসিসের সলিউশন দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেটিকে আবার বের করে নেওয়া হয়। একে বলা হয় পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস।
ডায়ালিসিস শুরুর আগে রোগীর শরীরে ফিসচুলা তৈরী করেন চিকিৎসকরা। হাতের শিরা ও ধমনী জুড়ে দেওয়া হয় এই পদ্ধতিতে। রোগীর শরীরে রক্ত পরিশোধন করার পথ ফিসচুলা।
কিডনির পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে রোগীর ডায়ালিসিস কতদিন চলবে। সাধারণত সপ্তাহে দু থেকে তিনবার ডায়ালিসিস হয় রোগীর। বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় তাঁদের।
ডায়ালিসিসের খরচ নির্ভর করে সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতাল অনুযায়ী। কলকাতার আনন্দলোক মাল্টি স্পেশ্যালিটি হসপিটালের নেফ্রোলজি ইউনিটে অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত ‘হিমোডায়ালসিস সেন্টার’ নতুন সংযোজন। দশ শয্যার বিশেষ নেফ্রোলজি ওয়ার্ড রোগীদের চিকিৎসা ও পরিচর্যায় আছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম ২৪x৭ কাজ করে সেখানে। রোগীর সাধ্যের মধ্যে সেরা চিকিৎসা এবং নিরাময়ই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য।