ক্রমাগত বুকজ্বালা এবং হজমের সমস্যাও হতে পারে ক্যানসারের লক্ষণ

ক্রমশ বাড়ছে খাদ্যনালীর ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর হার। গত কয়েক বছর ধরে গোটা বিশ্বজুড়েই দেখা যাচ্ছে এই প্রবণতা। খ্যাদ্যনালীর ক্যানসার বা ইসোফেগাল ক্যানসারের লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বোঝা যায় না।

মুখ, গলা ও খাদ্যনালিতে হওয়া ফুয়েল টিউমারই ডেকে আনে খাদ্যনালির ক্যানসার। প্রথম প্রথম গলায় ব্যথা আর শক্ত খাবার গিলতে অসুবিধা হয়। পরবর্তীতে তরল খাবার খেতে এমনকি ঢোক গিলতেও  প্রবল যন্ত্রণা হয়। এছাড়া হজমে সমস্যা দেখা যায়। বুক জ্বালা, বার বার উদগার, মুখে টক হয়ে থাকা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি বার বার দেখা দিতে পারে। এই সমস্ত লক্ষণকে অনেকেই খাওয়াদাওয়া বা হজমের গোলমাল বলে ভেবে নেয়। ফলে অনেকটা দেরী হয়ে যায়।

কিন্তু টানা ২ সপ্তাহ ধরে যদি এই সমস্যা চলতে থাকে তাহলে হালকাভাবে না নেওয়াই উচিত। ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে অনেকখানি ওজন কমে গেলে, খাবারে অরুচি। দীর্ঘদিন ধরে কাশি। রাতের বেলা শ্বাসকষ্ট। গলা ও বুকের মাঝখানে ব্যথা, বিশেষ করে গিলতে গেলে। বমি বমি ভাব, ক্লান্তিবোধ, দুর্বলতা। খাওয়ার সময় দম বন্ধ হয়ে আসা। একটানা কোষ্টকাঠিন্য বা ডায়রিয়া। এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

খাদ্যনালীর ক্যান্সারের পেছনে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার বড় ধরণের সংযোগ আছে বলে মত চিকিৎসকদের। এছাড়া  কৃত্রিম রং ও প্রিজারভেটিভযুক্ত ভেজাল খাবার খাওয়া। অতিরিক্ত ফাস্টফুড, আধা-সেদ্ধ খাবার, পোড়া তেলে ভাজা খাবার খেলে। পান, জর্দা, গুল, সিগারেট, বিড়ি এবং অতিরিক্ত মদ্যপান।

সাধারণত ৪০ বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে এই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে ৭৫ বছর বয়সের পর ঝুঁকি কমে যায়। খাদ্যনালীর ক্যানসার দুটি ধরণের হয়ে থাকে- স্কোয়ামাস সেল (কোষ) কার্সিনোমা ও অ্যাডেনোকার্সিনোমা।

স্কোয়ামাস সেল (কোষ) কার্সিনোমা- এই জাতীয় ক্যানসার পাতলা, সমতল কোষে বিকাশ করে যা খাদ্যনালীতে অভ্যন্তরীণ আস্তরণ গঠন করে। যদিও সর্বাধিক সাধারণ স্থানগুলি শীর্ষ এবং মাঝখানে হয় তবে স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা খাদ্যনালীর আস্তরণের যে কোনও জায়গায় উপস্থিত হতে পারে।

অ্যাডেনোকার্সিনোমা- খাদ্যনালীতে নির্দিষ্ট গ্রন্থি কোষ থাকে যা খাদ্যনালীতে তরল উৎপাদনের জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী। এই কোষগুলিতে বিকাশকারী ক্যানসারকে মেডিক্যালি (চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়) অ্যাডেনোকার্সিনোমা বলা হয়। এ ধরণের ক্যানসার প্রায়শই খাদ্যনালীর নীচের প্রান্তে দেখা যায় (পেটের কাছে)।

অন্যান্য- যদিও উপরের দুটি সর্বাধিক প্রচলিত ধরণের, অন্য ধরণের যেমন ছোট সেল (কোষ) কার্সিনোমা, মেলানোমা, লিম্ফোমা এবং আরও অনেকগুলি যার জন্য এটি গণনা করা যেতে পারে।

রোগনির্ণয়ের পরই আসে চিকিৎসার পালা। চিকিৎসা অনেকটাই নির্ভর করে ক্যানসার কোন ধাপে আছে, তার ওপর। তবে এই রোগ এড়াতে সঠিক জীবনযাত্রার ওপর অনেকটা জোর দেওয়া যায়।

ক্যানসার চিকিৎসায় অগ্রগণ্য নাম সরোজ গুপ্তা ক্যানসার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। ক্যানসার সংক্রান্ত চিকিৎসার তথ্যের জন্য ভিজিট করতে পারেন প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...