ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে ‘কমন’ ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সার। ২০১৮ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে প্রতি চার মিনিটে একজনের ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রতি ৮ মিনিটে গড়ে একজন মহিলার মৃত্যুর নেপথ্যে কারণ হিসেবে থাকে ব্রেস্ট ক্যান্সার। এদেশে স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর নিরিখে ভারত গোটা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এমন অজস্র পরিসংখ্যান আছে। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আটকাবার পথ এখনও অধরা।
পরিসংখ্যানের দিক থেকে এই তথ্য যথেষ্ট ভয় ধরানো হলেও লড়াইয়ের জমি ছাড়তে নারাজ চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে ক্যান্সার শব্দটা ভয়ের। কিন্তু তাকে ভয় পাওয়ার চেয়ে বেশি জরুরি সচেতন এবং সজাগ থাকা।
ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছান খুব জরুরি। যত তাড়াতাড়ি রোগ ধরা পড়বে তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু সম্ভব। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু তত তাড়াতাড়ি নিরাময়। এই তিনটি বিষয় এক সূতোয় বাধা।
স্তনের কিছু কোষ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেলে, ওই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমারে পরিণত হয়। সেটি রক্তনালীর লসিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাই ক্যান্সার।
৫০ পেরলেই সতর্ক থাকার শুরু, কিন্তু বর্তমানে ৩০ পেরলেই সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। স্তনে কোনওরকম অস্বাভাবিকতা দেখলেই সতর্ক হোন। স্তনের ত্বক রং বা চেহারায় পরিবর্তন হলে কোনও ব্যথাহীন ফোলা অংশ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এছাড়াও স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হলে, স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হলে, বাহুমূল ফুলে , দাগ দেখা গেলে তা কোনওভাবেই এড়িয়ে যাবেন না।
৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী নারীদের প্রতি তিনবছর পর পর ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাম করানো উচিত। ম্যামোগ্রাম হচ্ছে এক্স-রে’র মাধ্যমে নারীদের স্তনের অবস্থা পরীক্ষা করা।
প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরলে ক্যান্সার থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। ক্যান্সারের পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার নজির আমাদের চারপাশেই অজস্র ছড়িয়ে আছে।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রধানত কয়েকভাগে বিভক্ত- সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোন থেরাপির মাধ্যমে হয়ে থাকে।
কলকাতায় ক্যান্সার চিকিৎসার অন্যতম নির্ভরযোগ্য বিশ্বমানের চিকিৎসাকেন্দ্র সরোজ গুপ্তা ক্যান্সার সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট। ১৯৭৩ সালে যাত্রা শুরু করেছিল এই হাসপাতাল। তারপর থেকে ক্যান্সার চিকিৎসা এবং গবেষণায় নজির তৈরি করেছে। রাজ্যের নানাপ্রান্ত তো বটেই অন্যান্য রাজ্য থেকেই ক্যান্সার রোগীরা এখানে আসেন চিকিৎসা করাতে।