২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে চৈত্র নবরাত্রি উৎসব। চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।
হিন্দুধর্মে প্রতিটি ঋতু পরিবর্তনের সময় দুর্গাপুজো করা বিধান রয়েছে। যেমন শারদীয়া নবরাত্রি এছাড়া আষাঢ় নবরাত্রি, মাঘ নবরাত্রি এবং চৈত্র নবরাত্রি। ঠিক এভাবেই বসন্ত কালে পালিত হয় চৈত্র নবরাত্রি।একে বসন্ত নবরাত্রিও বলা হয়।
আদ্যা শক্তি মহামায়া নয় দিন ধরে নয়টি রূপে পূজিতা হন। সেই নয় রূপ হল, শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিনী, চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মাণ্ড, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী, সিদ্ধিদাত্রী।
ন’দিন ব্যাপি উৎসবের প্রথম দিন নবদুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রীর পুজো করা হয়। দেবী শৈল অর্থাৎ হিমালয় কন্যা। তাঁর বাহন ষাঁড়।এক হাতে থাকে ত্রিশূল অন্যহাতে পদ্ম।
দ্বিতীয় দিনে তিনি ব্রহ্মচারিনী রূপে পূজিতা হন। শান্তিদায়ীনি। দক্ষিণ হস্তে রুদ্রাক্ষের জপমালা আর বাম হস্তে কমণ্ডল। দেবী দুর্গার তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘন্টা। এই রূপে দেবী চন্দ্রধারিনী। তাঁর মাথায় অর্ধচন্দ্র। চাঁদের আকার অনেকটা ঘন্টার মতো। দেবীকে ঘন্টা প্রদান করেছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। যাতে গজরাজ ঐরাবতের বল। সিংহবাহিনী দেবী চাঁদের চেয়েও বেশি সৌন্দর্যের অধিকারিনী কুষ্মান্ডা দেবী মহাবিশ্বের সৃষ্টির আদি। দেবী সিংহবাহনা দেবীর দশ হাতে দশ আয়ূধ এবং কুমণ্ডল।
স্কন্দমাতা রূপে দেবীকে কার্তিক মাতা হিসেবে পুজো করা হয়। দেব সেনাপতি কার্তিকেয়র আর এক নাম স্কন্দ। দেবী চারহাত বিশিষ্টা। ডান ক্রোড়ে শিশুপুত্র। অপর দক্ষিণ হস্তে প্রস্ফুটিত পদ্ম। বাম হস্তে দেবী বরাভয় প্রদান করছেন ভক্তদের। দেবী কমলাসনে অধিষ্ঠাত্রী।
ঋষি কাত্যায়নের কন্যারূপে জন্ম নিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। নবরাত্রীর পঞ্চম দিনে তিনি কাত্যায়নী রূপে পূজিতা হন। সপ্তমীতে তাঁর রূপ কালরাত্রি। দেবী ঘোর কৃষ্ণবর্ণা। কালভৈরবের শরীর থেকে জন্ম। বাহন গর্দ্ধব।
অষ্টম রূপে দেবী মহাগৌরী। দেবী দুর্গা কৃষ্ণা। মহাদেবে গঙ্গা জলে তাঁকে স্নান করান। তখন তিনি হয়ে ওঠেন গৌরী। অষ্টমীর রাতে তাঁর পুজো করলে সমস্ত পাপ নাশ হয়। চতুর্ভূজা দেবী শ্বেতবস্ত্র পরিহিতা। বাহন ষাঁড়।
নবরাত্রির শেষতম দিনটিতে দেবী সিদ্ধিদাত্রী। চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা। সিদ্ধি দান করেন ভক্তদের। ভগবৎ পুরাণ মতে শিব দুর্গাকে এই রূপে অর্চনা করেছিলেন। সিদ্ধিদাত্রীর আশীর্বাদেই তিনি অর্ধনারীশ্বর রূপ লাভ করেন।