কীভাবে বুঝবেন মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ

করোনার ভয় থেকে হাঁফ ছেড়ে বেঁছেছে মানুষ। ঠিক সেই সময় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আরও একটি নতুন ভাইরাস। যার নাম মাঙ্কি পক্স। বর্তমান বিশ্বের বহু দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কি পক্স। তবে এই ভাইরাস নতুন নয়। ২০১৮ সাল থেকে ইংল্যান্ডে এই রোগ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছিল। মোট সাত জন আক্রান্ত ব্যক্তির উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। যাতে দেখা গিয়েছে কিছু অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে মাঙ্কি পক্সকে প্রতিহত করা সম্ভব। এমন কী এই ওষুধের ব্যবহারে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। এখনও পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে মোট ১ হাজার ৬০০ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। যার মধ্যে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে।  বিশেষজ্ঞদের ধারণা আফ্রিকা থেকেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। তবে এখন আফ্রিকা ছাড়াও স্পেন, পর্তুগাল ও যুক্তরাজ্যেও এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ৩০ দেশে মিলেছে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান।

১৯৫৮ সালে প্রথম ড্যানিশ ল্যাবরেটোরিতে বানরের মধ্যে এ ভাইরাসটি আবিষ্কৃত হয়। মানুষের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় ড্যামোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে ১৯৭০ সালে। এর দুটি ধরনের মধ্যে একটি হল পশ্চিম আফ্রিকান অপরটি মধ্য আফ্রিকান। এ ক্ষেত্রে, পশ্চিম আফ্রিকান (৩.৬%) ধরনের তুলনায় মধ্য আফ্রিকান (১০.৬%) ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।

 তবে ‘মাঙ্কি পক্স’ নামটি দিয়ে আপত্তি আছে বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে এই ভাইরাস আফ্রিকা থেকে চড়াচ্ছে এবং প্রচার বৈষম্যমূলক। নামটিও পরিবর্তন হওয়া দরকার।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই নিয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।

মাঙ্কি পক্স ভাইরাসের সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে মিল রয়েছে চিকেন পক্সের। এটিও একটি গুটিবসন্ত ঘরানার ভাইরাস। তবে বেশি উপসর্গ নেই এছাড়াও সাধারণ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম। জ্বর, ক্লান্তিভাব, গায়ে র‌্যাশ, চুলকানি, গা-হাত ও মাথা ব্যথা হয় মাঙ্কি পক্স হলে। একই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় চিকেন পক্স হলেও। কিন্তু চিকেন পক্সের সময় যে ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয় সেগুলি শুকোতে সাত থেকে দশ দিন সময় লাগে। কিন্তু মাঙ্কি পক্সের সময় ফুসকুড়ি দেখা দিলে তা শুকোতে একুশ দিনও লাগতে পারে। চিকেন পক্সে লিম্ফ নোড ফুলে যায় না। তবে মাঙ্কি পক্সে লিম্ফ নোডগুলি ফুলে যায়। এছাড়াও চিকেন পক্সের ওষুধ কার্যকরী নয় এই রোগে।

 

চিকিৎসকদের ধারণা ক্ষত স্থান, নাক, মুখ, চোখ ও শ্বাসনালির মাধ্যমে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তবে সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হলেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...