চিরকালই সুস্বাদু খাবার হোক ও ভ্রমণ এই দুইয়ের প্রতিই বাঙালির এক নিবিড় টান রয়েছে। যে বাঙালি এক সময় শুধু মাত্র পুরী ও দীঘায় ঘুরতে গিয়ে খুশি থাকতেন। আজ সেই বাঙালির পছন্দসই পর্যটন কেন্দ্রের তালিকায় নাম জুড়েছে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গার। তবে বহু অচেনা জায়গা রয়েছে যেখানে এখনও সেভাবে পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা যায় না।
কিন্তু স্থান মাহাত্ম্য বহুল। এরকমই কিছু অচেনা ভ্রমণ কেন্দ্রের খোঁজ পাওয়া যায় আমাদের বাংলাতেই। ঘরের কাছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। এক সময় পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর অবিভক্ত ছিল। তারপর ২০০২ সালে ১ জানুয়ারি মেদিনীপুর ভাগ হওয়ার পর দুটি আলাদা জেলা তৈরি হয়। বহু ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। শশাঙ্কের রাজত্বের ঐতিহাসিক নিদর্শন পাওয়া গেছে এই শহরে। তবে এছাড়াও বাংলার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় রয়েছে বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ কেন্দ্র।
এই নিবন্ধে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র তুলে ধরা হল।
১. আরাবারি জঙ্গল: পশ্চিম মেদিনীপুরের জনপ্রিয় ভ্রমণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে আরাবারি জঙ্গল। এই জঙ্গলে দেখা মিলবে বিভিন্ন প্রজাতির সব সাপ ও পাখির। ১৯৭২ সাল থেকে আরাবরি জঙ্গল দেখা শোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টকে। তারপর এই জঙ্গলে ভ্রমণ করতে হলে অবশ্যই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের পারমিশন নিতে হবে। এই জঙ্গলটি হল দেশের প্রথম কমিউনিটি ফরেস্ট।
২. চিলকি গড়, কনক দুর্গা মন্দির: চিলকি গড়ের বিখ্যাত এই মন্দিরটি হল পশ্চিম মেদিনীপুরের মূল আকর্ষণ। বছরের বিভিন্ন সময়ে শুধু মাত্র এই মন্দিরটি দর্শণ করতেই মানুষ উপস্থিত হন পশ্চিম মেদিনীপুরে। এই মন্দিরের পশ্চিমে রয়েছে একটি জঙ্গল যেখানে ৪৩৩ রকমের গাছ পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ চিকিৎসার জন্য এই গাছগুলি ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও অনেক রকমের ফুল গাছও রয়েছে ঐ এলাকায়।
৩. হিজলি ইকোপার্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরে অবস্থিত হিজলি ইকোপার্কটি আইআইটি খড়গপুর ক্যাম্পাস থেকেও অনেক কাছে। এই পার্কটিতে একটি ডিয়ার পার্ক ও নার্সারি রয়েছে।
৪. ঝাড়গ্ৰাম রাজবাড়ী: ১৫৯২ খ্রীষ্টাব্দে আকবরের সেনাপতি মান সিংহের ভাই শবেশ্বর সিংহ তৈরি করেছিলেন এই রাজবাড়ীটি। মোট ১০ ঘর রয়েছে বিশাল এই রাজবাড়ীতে। রাজবাড়ীটির স্থাপত্যের সঙ্গে মিল রয়েছে ইটালিয়ান স্থাপত্যের। প্রতিবছর বহু দর্শক এই বাড়ীটি দেখতে আসেন।
৫. কর্ণগড় মন্দির: দুটি মন্দিরের সম্মোনয় তৈরি একটি মন্দির যেখানে পূজা করা হয় মহাদেব ও মহামায়াকে। বহু প্রাচীন এই মন্দিরটি দর্শণের জন্য বহু ভক্তের আগমণ হয় প্রত্যেক বছর। এই মন্দিরটির স্থাপত্যই পর্যটকদের আকৃষ্ট হওয়ার মূল কারণ। প্রাচীন এই মন্দির থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত কর্ণগড় রাজবাড়ী। বর্তমানে সংরক্ষণের অভাবে ভগ্নস্তুপে পরিণত হয়েছে এই রাজবাড়ীটি।