জলের অপচয় রুখতে মিটার

 

জলসংকট বর্তমান সময়ের এক অতি বড় সমস্যা। বেশ কিছু জায়গায় জলের অভাব দৈনন্দিন জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি এমনই সংকট দেখা দিয়েছে চেন্নাইতে আমরা জানি। তাই সেই দিকে নজর দিয়ে কলকাতা পুরসভা পানীয় জলের যাতে অপচয় না হয়, সেদিকে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে। উত্তর কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতাতেও জলের মিটার বসানোর পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুরসভা।

    পুরসভার বক্তব্য অনুযায়ী উত্তর কলকাতার টালা ও পাইকপাড়া অঞ্চলে মিটার বসিয়ে ইতিমধ্যেই জলের অহেতুক অপচয় রোধ করা গেছে। সেই মতই এবারে দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, গল্ফ গ্রিন প্রভৃতি জনবহুল এলাকায় জলের মিটার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পূর্ব কলকাতার ইএম বাইপাস এবং তার লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে জোর কদমে এই মিটার লাগানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষকে জলের অপচয় রোধ করার ব্যাপারে সচেতন করার উদ্দেশ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব ও বাজারগুলিতে প্রচার চালানোর কথা ভাবা হয়েছে।

    পুরসভার তরফ থেকে জানা গেছে, টালা-পাইকপাড়ায় মিটার বসানোর আগে গড়ে এক একজন নাগরিকের জন্য রোজ ২০০-৩০০ লিটার জল খরচ হত। যা এখন ৮০-১২০ লিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। ১ নং বোরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহার মতে, মিটার বসানোর জন্য মানুষের সচেতনতা বেড়েছে, তাই জলের অপচয় বন্ধ হয়েছে। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের অধিকর্তা বিভাস মাইতি জানান, মিটার বসানোর পর থেকেই টালা-পাইকপাড়া এলাকার নাগরিকেরা বুঝে জল খরচ করছেন। বর্তমানে শহরের রাস্তায় পানীয় জলের ১৮ হাজার কল রয়েছে। জল নিয়ে নেওয়ার পর নাগরিকেরা এর মধ্যে থেকে অনেকেই কল বন্ধ করেননা। তাদের বোঝানোর পর এবং জলের মিটার বসানোর পর এই অপচয় বন্ধ হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতায় মিটার বসিয়ে দিলে সেখানেও জলের অপচয় রোধ করা যাবে।

     পুরসভা জানিয়েছে, মিটার বসানো হলেও নাগরিকদের ওপর জলকর বসানো হবেনা। জল সংকট যাতে কলকাতায় শুরু না হয়, তার জন্যই আগাম এই ব্যবস্থা। প্রচারমূলক কর্মসূচি ও শহরজুড়ে মিটার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হলেও মানুষকে কিন্তু সচেতন হতে হবে। বছর দুয়েক আগেই এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (কেইআইআইপি) অধীনে উত্তর কলকাতায় জলের মিটার বসানোর কাজ  হয়েছিল। ওই একই প্রকল্পে দক্ষিণ কলকাতায় জলের মিটার বসানোর কাজ হবে। প্রকল্পের জন্য বাজেট ধার্য করা হয়েছে ১৮৭ কোটি টাকাআট মাসের মধ্যেই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে পুরসভার কর্তারা জানাচ্ছেন। তবে জলকর নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা পুরসভার নেই।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...