উল্কাপাতে চাঁদে ফোয়ারা

পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ| আর সেই চাঁদ নিয়ে প্রথম থেকেই কল্পনা ছিল তুঙ্গে| বহুবার চাঁদের মাটিতে পদার্পণ করে মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানতে চেয়েছেন, চাঁদের নানা জানা অজানা কথা| চাঁদের বুকে জল রয়েছে কিনা তা নিয়েও জল্পনা চলছিল বহুদিন ধরেই| এই জল্পনাতেই এবার ছেদ পড়ল| এক উল্কাপাতের ফলে চাঁদের সব রহস্য একেবারে লোকসমাজে ফাঁস হয়েই গেল|

মহাকাশ বিজ্ঞানীদের দাবি, সম্প্রতি চাঁদের বুকে প্রচন্ড জোরে আছড়ে পড়ে একটি উল্কা| আর সেই উল্কার আঘাতেই চাঁদের মাটি ফেটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে জলের ফোয়ারা| তবে মুহুর্তের মধ্যে সেই ফোয়ারার জল কোথায় ভ্যানিশ হয়ে গেল তা জানা যায়নি| এই ঘটনা মহাকাশের কোনো এক প্রান্তে ঘটলেও চাঁদের উপর সজাগ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে থাকে উপগ্রহ ল্যাডি’|

চাঁদে জলের উপস্থিতির কথা বহুদিন আগে থেকেই বিজ্ঞানীদের জানা| কিন্তু কথায় আছে, বিজ্ঞান চোখে না দেখা পর্যন্ত কিছু বিশ্বাস করে না| তাই এই ঘটনা একদিন ঘটতে পারে তা জানা থাকলেও এই ঘটনায় আপ্লুত মহাকাশবিজ্ঞানীগণ| কলকাতার ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স’-এর অধিকর্তা সন্দীপবাবু জানান, এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা মানবসভ্যতা| তাও সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র উপগ্রহ ল্যাডি-র দৌলতে|

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায় জানান,  মহাকাশ বিজ্ঞানের কাছে এটি একটি মাইলস্টোন আবিষ্কার| এর ফলে ভবিষ্যতে উপগ্রহে কোনো ট্রান্সপোর্টেশন হাব গড়ে তোলা যাবে কিনা সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে| চাঁদের অভ্যন্তরে যে আজও জল আছে বিজ্ঞানীদের এই ধারণা সম্প্রতি আরও গভীর হয়েছিল| তাই চাঁদের উপর নজর রাখার জন্য নাসার প্ল্যানেটরি ডিভিশন এক নতুন নতুন কর্মসূচি গঠন করেছিল| আর তার নাম দেওয়া হয়েছিল ডালি’| তার কাজ শুরুর আগেই এরকম একটি আবিষ্কার সত্যিই মহাকাশ গবেষনার জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে|

চাঁদ পৃথিবীর থেকে মাত্র ৫০ কোটি বছরের ছোট| আজ থেকে বহু বহু যুগ আগে কোনো একদিনে পৃথিবীর সাথে ধাক্কা লেগেছিল কোনো এক বড়সড় মহাজাগতিক বস্তুর| সেই বস্তুর আঘাতেই পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় একটি ছোট অংশ| সেই অংশটাই হলো আমাদের চাঁদ| বিজ্ঞানীরা জানালেন, এই চাঁদ আসলে পৃথিবীরই অংশ| তাই পৃথিবীতে প্রাপ্ত সবকিছুই যে চাঁদে পাওয়া যাবে সেটাই স্বাভাবিক| সেই হিসেবে চাঁদের মাটিতে জলের খোঁজ পাওয়াটাও স্বাভাবিক| তবে চাঁদের অভ্যন্তরের এখনও কতটা জল অবশিষ্ট রয়েছে তা জানা যাচ্ছেনা বলেই জানিয়েছেন, বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়|

তবে চাঁদের মাটিতে জলের খোঁজ মেলায় গবেষকদের সাথে সাথে আপ্লুত সাধারণ মানুষজনও| তাহলে ছুটিতে এবার কি ভাবছেন, চাঁদে বেড়াতে গেলে কেমন হয়?         

 

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...