বাতাস থেকে জল তৈরি করতে পারে আজব এই কল। বৃষ্টি আসুক বা নাই আসুক রুক্ষ মাটি ভিজবেই। কুয়াশার গায়ে যত জলের দাগ সব থেকে জল জমায় ইথিওপিয়ার ‘ওয়ার্কা’।
বাঁশ আর পাটের তৈরি টাওয়ার। নাম ওয়ার্কা ওয়াটার টাওয়ার। ৩০ ফুট লম্বা, ১৩ ফুট চওড়া। ওয়ার্কা গাছের বৈশিষ্টের সঙ্গে মেলে বলে এই টাওয়ার নাম ‘ওয়ার্কা টাওয়ার’। ওয়ার্কা গাছ যত বড় টাওয়াররে আকার- আকৃতি কিন্তু তত বড় নয়।
ওয়ার্কা ওয়াটার টাওয়ার আবিষ্কার করেছেন আর্থ ভিটরি।
উত্তর-পূর্ব ইথিওপিয়ায় মানুষের জলের সমস্যা সাঙ্ঘাতিক। পানীয় জলের সঙ্কট চরমে। জলের জন্য সাধারন মানুষের এমন হাহাকার দেখে ভিটরি সমাধানের পথ খুঁজতে শুরু করেন। ওয়ার্কা টাওয়ারের ভাবনা মাথায় আসে।
গম্বুজাকৃতির ওয়ার্কা গাছের কার্যকলাপ দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি বানান ওয়ার্কা ওয়াটার টাওয়ার। এটির ওজন ৮৮ পাউন্ড। দুটি অংশ দ্বারা এর কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছে।
বাইরের আবরণটি মজবুত। কিন্তু বাঁকানো যায়, এমন বেত অথবা বাঁশ দ্বারা বানানো হয়। এগুলোকে একটার সঙ্গে অন্যটিকে বেঁধে কাজটি সারা হয়। এর ভেতরের দিকে আছে নাইলনের তৈরি জাল, যা ঝুলিয়ে রাখা হয় কমলালেবুর আকৃতিতে।
মূলত বাতাসের জলীয় বাষ্পকে জলে পরিণত করে এই টাওয়ার। এর ভেতরের জালে ব্যবহার করা নাইলন এবং পলিপ্রোপাইলিনের তার জলীয় বাষ্পের ঘনীভবনে কাজ করে।
মেঘ, কুয়াশা বা বৃষ্টিতে জমা হওয়া জল কিংবা বাষ্প জলকণায় পরিণত হওয়ার পর চুঁইয়ে তা ভূমিতে রাখা একটি পাত্রে জমা হয়।
এভাবে একটি ওয়ার্কা ওয়াটার টাওয়ার প্রতিদিন ২৫ গ্যালন জল সংগ্রহ করতে পারে।
একটি ওয়ার্কা ওয়াটার টাওয়ার বানাতে খরচ পড়ে ৫৫০ ডলারের মতো। চারজনের একটি দল এটি এক সপ্তাহের মধ্যেই বানাতে পারবে। টাওয়ার বানাতে যা যা লাগে মোটামুটি সবই গ্রামে পাওয়া যায়।
দৈত্যাকার ওয়ার্কা গাছ মূলত দেখা যায় ইথিওপিয়ায়। আমাদের দেশের বট গাছের মতই। ইথিওপিয়ার গ্রামে ওয়ার্কা গাছের তলায় মানুষ গল্প করতে বা আড্ডা দিতে জমা হন। এখন তাঁদের সেই আড্ডা জমে উঠছে ওয়ার্কা টাওয়ারের নীচে।