বৃন্দাবনের রাধারমন মন্দির

যিনি রাধারমন তিনিই হলেন শ্রীকৃষ্ণ। রাধারমণের অর্থ হল রাধার প্রেমিক। ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো বৃন্দাবনের রাধারমন মন্দিরের পূজিত হন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের জন্য খুবই পবিত্র এই মন্দির। ১৫৪২ খ্রিষ্টাব্দে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গোপাল ভট্ট গোস্বামী। কথিত আছে, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর মৃত্যুর পর গোপাল ভট্ট গোস্বামী শোকাহত হয়েছিলেন। তখন তিনি স্বপ্নে প্রভুর দর্শন পান। সেই স্বপ্নাদেশ মেনেই নেপালের কালি গণ্ডকী নদীতে স্নান করেন। আর স্নানের সময় নদীতে পাত্র ডুবিয়ে তিনি মোট ১২টি শালগ্ৰাম শিলা পেয়েছিলেন। তারপর ঐ শিলাগুলিকেই পুজো করা শুরু করেছিলেন তিনি। এক ব্যবসায়ী ঐ বারোটি শিলার জন্যে পোশাক  ও গয়না দান করেছিলেন। কিন্তু গোপাল ভট্ট এই দান সামগ্ৰী ভগবানকে নিবেদন করেননি। তবে শিলাগুলির সঙ্গেই সেগুলি রেখে দিয়ে তিনি স্নান সারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্নান সেরে এসে আশ্চর্য হয়েছিলেন একটি শিলাকে দেখে। কারণ ঐ শিলাটি একটি পূর্ণাঙ্গ মূর্তির নিয়েছিল। ভক্তদের বিশ্বাস, ঐ শিলা কৃষ্ণের রূপ ধারণ করেছিল।তারপর পাথরের মূর্তি থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রূপ নেওয়া ঐ মূর্তিটির পুজো শুরু হয়েছিল। কৃষ্ণ ভক্তদের বিশ্বাস, মূর্তি রূপ নেওয়ার পর শ্রীকৃষ্ণ সকলের ইচ্ছাপূরণ করেছিলেন। সেই মূর্তিই আজও পূজিত হয়ে আসছে। গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের কাছে এই মন্দির গুরুত্বপূর্ণ।

মন্দির প্রতিষ্ঠার পর গোপাল ভট্ট গোস্বামী একটি পবিত্র অগ্নির স্থাপন করেছিলেন। যা আজও জ্বলছে। মন্দিরের উপাস্য দেবতা শ্রীকৃষ্ণের খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুই সম্পন্ন হয় এই পবিত্র আগুন মাধ্যমে। দেশলাই বা অন্য কোনও ভাবে আগুন জ্বালানোর নিয়ম নেই এই মন্দিরে।

প্রত্যেক বছর রামচন্দ্রের জন্মদিন অর্থাৎ 'রাম নবমী'র দিন ব্রাহ্মৎসব পালন করা হয়, চন্দন যাত্রা পালন করা হয়ে ২১ দিনে ধরে। এছাড়াও ঝুলন যাত্রা ও জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হয় এই মন্দিরে। এই সময় প্রচুর ভক্তের ভিড়ি দেখতে পাওয়া যায় এই মন্দিরে। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বৃন্দাবনে অবস্থিত এই মন্দিরটি। রেলপথেও এখানে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। এই মন্দির থেকে বৃন্দাবন রেল স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...