এনআরসি তালিকাভুক্ত নন তাঁদের ভোটাধিকার

 

গতবছর অসমে এনআরসি তালিকা তৈরী করা নিয়ে প্রচুর জল ঘোলা হয়েছে। বহু মানুষ এনআরসি তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তাঁদের কথা আলাদা। কিন্তু এমন বহু মানুষ সেখানে রয়েছেন, যাঁরা কয়েক পুরুষ অসমে থাকা সত্ত্বেও ওই তালিকাভুক্ত হননি। তালিকায় নাম নথিভুক্তকরণের নিয়মের বেশ কিছু জটিলতাই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এমন মানুষও আছেন  সেখানে, যাঁরা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন, অথচ আসামে ভোট দেন, তাঁদের মধ্যে থেকেও অনেকে বাদ পড়েছেন ওই তালিকা থেকে।

  আসন্ন ভোটে এবারে সেই প্রশ্ন মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠল। সুপ্রীম কোর্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, যাঁদের নাম এনআরসি তালিকাভুক্ত হয়নি, তাঁরা ভোট দিতে পারবেন, কি না। ২০১৪ সালে ভোট দিয়েছে, অথচ এনআরসিতে নাম নেই, তাঁরাই বা কি করবেন। অসমে দীর্ঘদিন থাকার পরেও ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এবং হাইকোর্ট যাদের বিদেশী বলে তকমা দিয়েছে, তারাই বা এবারে কি করবে? এরকম বেশ কিছু প্রশ্ন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন বনগাঁর বাসিন্দা গোপাল শেঠ এবং অসমের শিবসাগরের বাসিন্দা সুশান্ত সেন। এজলাসে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে নির্বাচন কমিশনের সচিবকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কমিশনও দিতে পারেনি। উল্টে কমিশনের অন্যতম সচিব মলয় মল্লিক রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। তাই ওই তালিকাভুক্ত নন এমন মানুষরা আদৌ আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকারী হবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে যাই হোক,  আশা করাই যায়, নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই সঠিক উপায় বের করে এই সমস্যার সমাধান করে দেবে। এখনও যদিও কিছুদিন বাকি আছে, লোকসভা ভোটের সেই সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তা বলা যায়। কারন সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের নাগরিকের ভোটদানের অধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকে। সেই অধিকার থেকে অসমের নাগরিকেরা বঞ্চিত হতে পারেন না।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...