‘বিশ্বকর্মা না থাকলে নাকি পৃথিবীটাই তৈরী হত না, পুরো ব্রহ্মাণ্ডের প্ল্যানিং নাকি তাঁরই’। আমাদের সবচেয়ে প্রাচীন গ্রন্থ 'ঋক' বেদে বিশ্বকর্মার সেই অবদানের কথা বলা আছে। তখন অবশ্য তাঁকে অগ্নি ও ইন্দ্রের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়েছিল। তখন কল্পনা করা হয়েছিল যে, তাঁর দুটি ডানা আছে, সেই ডানার পালক বুলিয়ে তিনি সৃষ্টি করেন ব্রহ্মান্ড। তার পরের যুগে তাঁকে ব্রহ্মার সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ ব্রহ্মাও তো সৃষ্টির দেবতা। পুরাণের যুগে এসে বিশ্বকর্মার জন্মকথা ও আলাদা পরিচয় পাওয়া যায়। জানা যায়, তিনি দেবতাদের গুরু বৃহস্পতির ভাগ্নে। অষ্টবসুদের মধ্যে প্রভাস তাঁর বাবা।
শুরু থেকেই বিশ্বকর্মার ব্যস্ততার শেষ নেই, সেই আদিযুগে ব্রহ্মাণ্ড নির্মাণ থেকে শুরু করে দেবতাদের অস্ত্র তৈরি, অর্জুনদের জন্য ইন্দ্রপ্রস্থ তৈরি, জগন্নাথের মূর্তি নিপর্মাণ, এমনকি কালীঘাটের কালী মূর্তি নির্মাণের কিংবদন্তীও শোনা যায় তাঁর নামে। বহু বছর আগে লখিন্দর আর বেহুলার লোহার বাসরঘর তৈরির দায়িত্বও এসে পড়েছিল তাঁর ওপর। তখন বাঙালির কাছে তাঁর আদরের ডাক নাম ছিল, 'বিশাই'। নিজে কুশলী শিল্পী বলেই কারিগরীশিল্পের দেবতা হিসেবে সেই প্রাচীনকাল থেকেই তাঁকে পুজো করে আসছেন সাধারণ মানুষ।