এশিয়া কাপে বিদায় হলেও ক্ষতের প্রলেপ দিল বিরাট কোহলির শতরান। ১০২০ দিন পরে আবার তাঁর ব্যাট থেকে শতরান এল, নিজেই বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না বিরাট।
পরপর দু' ম্যাচ হেরে আগেই ফাইনাল ওঠার রাস্তা থেকে সরে দাঁড়ায় ভারত। আগামী রবিবার পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হবে এশিয়া কাপ ফাইনালে। সুপার ফোরের শেষ নিয়মরক্ষার ম্যাচে 'গ্ৰুপ বি'-র চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় 'গ্ৰুপ এ'-র চ্যাম্পিয়ন ভারত। ম্যাচটি ১০১ রানে জিতে জয় দিয়েই নিজেদের অভিযান শেষ করে ভারত।
৪ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছিল পাকিস্তান। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে রোহিত শর্মাদের ৫ উইকেটে হারিয়ে দেন বাবর আজমরা। সেটাই ছিল এশিয়া কাপে ভারতের প্রথম হার। দুর্বল বোলিং হারিয়ে দেয় ভারতকে।
গ্রুপ পর্বে ভাল শুরু করেও সুপার ফোর পর্বে ছন্দহীন রোহিত শর্মারা। ৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী ম্যাচে পাকিস্তানের পর শ্রীলঙ্কার কাছেও হারে ভারত। প্রথম একাদশ নির্বাচন নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। রোহিত রান পেলেও ম্যাচে ব্যর্থ বিরাট কোহলি। ভারতের ১৭৩ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ১৯.৫ ওভারে ৪ উইকেটে করে ১৭৪ রান। এবারেও দুর্বল বোলিংই মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গ্ৰুপ পর্বের শেষে চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। গ্ৰুপের ম্যাচে বাবরদের বিরুদ্ধে রান তাড়া করার সময় জাড্ডুকে চার নম্বরে নামিয়ে ফাটকা খেলেছিল ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট। সেটা কাজে দিয়েছিল। জাদেজার চোট বড় রকম মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দেখা দিলো টিম ইন্ডিয়ার।
এরই সাথে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে হারের পরে সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট কোহলি জানিয়েছেন, তিনি যখন খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন কেউ তাঁর পাশে ছিলেন না। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, ''আমি যখন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ি, এক জন মাত্র প্রাক্তন ক্রিকেটার আমাকে ফোন করেছিল। অনেকের কাছেই আমার নম্বর আছে। কিন্তু ফোন করেছিল শুধু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এর থেকেই বোঝা যায় কে আমার ভাল চায়। সত্যি যদি আমার কথা কেউ ভেবে থাকে, তা হলে সে আমাকে ফোন করে কথা বলতে পারত। অনেকেই বাইরে আমার সমালোচনা করেছে। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে কথা বলেনি।''
কোহলির মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতের আর এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কর। তিনি জানিয়েছেন, এ ভাবে সবার কথা একসঙ্গে বলা উচিত হয়নি কোহলির। তিনি কার কার কাছ থেকে ফোন আশা করেছিলেন তাঁদের নাম জানানো উচিত ছিল। প্রতিযোগিতা চলাকালীন তাঁর এই ধরনের মন্তব্য করা উচিত হয়নি বলে মনে করেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার মদন লাল। তাঁর আশঙ্কা, এতে দলে ভাঙন ধরতে পারে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের পরে ভারতীয় দল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন চেতেশ্বর পুজারাও। পুজারা বলেন, ''এই দলের ভারসাম্য ঠিক নেই।'' তিনি জানিয়েছিলেন, দলে কয়েকটি বদল করা দরকার। চোটের কারণে এশিয়া কাপে খেলতে পারননি ভারতের প্রধান বোলার যশপ্রীত বুমরা। বাদ দেওয়া হয়েছিল মহম্মদ শামিকেও। স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের বোলিং অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
এশিয়া কাপের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় অর্শদীপ সিংকে 'খলনায়ক' তকমা দেওয়া। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ ফস্কে 'খলনায়ক' হয়ে গিয়েছেন অর্শদীপ সিং। নেটমাধ্যমে লাগাতার সমালোচনা করা হয়েছে তাঁর। জনপ্রিয় ওয়েবসাইট উইকিপিডিয়ায় অর্শদীপের পেজের বিবরণ বদলে তাঁকে 'খালিস্তানি' হিসাবে অভিহিত করা হয়েছিল। অবশ্য যত সমালোচনা বাড়ছে তত সমর্থন পেয়েছেন ভারতীয় বোলার। হরভজন সিং, সুনীল গাওস্করের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তার হয়ে মুখ খুলেছেন। কোচকেও পাশে পেয়েছেন অর্শদীপ।
অর্শদীপের পাশে দাঁড়িয়েছেন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার। ক্ষুব্ধ হরভজন সিং লিখেছেন, 'তরুণ অর্শদীপের সমালোচনা বন্ধ করুন। কেউ ইচ্ছে করে ক্যাচ ফেলে দেয় না। আমরা আমাদের ছেলেদের জন্য গর্বিত। পাকিস্তান তুলনায় ভাল খেলেছে। যাঁরা আমাদের দল এবং অর্শদীপের উদ্দেশে খারাপ মন্তব্য করছেন বা হেয় করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের দেখে লজ্জা হয়। অর্শদীপ সোনা।'
২৩ বছরের অর্শদীপ সমর্থন পেয়েছেন সীমান্তের ওপার থেকেও। পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার হাফিজ লিখেছেন, 'ভারতীয় দলের সব সমর্থককে অনুরোধ করছি। খেলার মধ্যে আমাদের ভুল হয়েই থাকে। আমরাও মানুষ। দয়া করে কাউকে এই ভুলের জন্য অপমান করবেন না।' অর্শদীপের পাশে দাঁড়িয়ে ইরফান পাঠান নেটমাধ্যমে লিখেছেন, 'অর্শদীপ খুবই দৃঢ় চরিত্রের। তুমি এমনই থাকো।'
তবে এশিয়া কাপের সবথেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল বিরাট কোহলির প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শতরান। সেই তিন বছর আগে শেষ সেঞ্চুরি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। দিনক্ষণ ধরলে, ২৩ নভেম্বর ২০১৯ সাল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি টেস্টে কলকাতায় শতরানের ঝলক ছিল তাঁর ব্যাটে। তার পর? ব্যর্থতার নানা কাহিনি। সমালোচনায় ফালাফালা হয়ে যাওয়া। বিতর্কে জেরবার হওয়া। এমনকি, টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ভারতীয় টিমে তাঁর জায়গা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাওয়া। আবার মসনদে ফিরলেন বিরাট কোহলি। আবার ফিরে পেলেন তাঁর তাজ। ১০২০ দিন পর সেঞ্চুরি করলেন বিরাট। 'এভাবেও ফিরে আসা যায়'।
যে ফর্ম্যাটে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, সেই টি-টোয়েন্টিতে ক্রিকেটেই জানান দিলেন বিরাট, সময় খারাপ গেলেও তিনি আজও রাজা! এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৩ বলে ১০০ করলেন। ৪ ও ৬ মেরে শতরান করলেন। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম। যেন দেখিয়ে দিলেন, সমালোচনার জবাব যদি দিতে হয়, এ ভাবেই দিতে হয়
তবে বিরাট শতরানে সব থেকে খুশি হয়েছেন কোহলির এক পাকিস্তানি ভক্ত। যিনি ম্যাচের পর পেয়েছেন কোহলির সই। পাকিস্তানের ওই ক্রিকেটপ্রেমী ক্রিকেট ব্যাটে ক্রিকেটারদের সই সংগ্রহ করেন। গত ন'বছর ধরে ক্রিকেটারদের সই সংগ্রহ করছেন তিনি। ইমরান খান, শাহিদ আফ্রিদি, বীরেন্দ্র সহবাগ, যুবরাজ সিংহদের সই করা ব্যাট রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। বৃহস্পতিবার ম্যাচের পর একটি ব্যাটে কোহলির সই সংগ্রহ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন কোটি টাকা দিলেও কোহলির সই করা ব্যাট বিক্রি করবেন না। আজীবন নিজের কাছেই রেখে দেবেন ব্যাটটি।
নায়করা এমনই হন। কখন যে সাফল্যের সরণিতে উঠে আসবেন, কখন যে সমালোচনার ঝড় থামিয়ে দেবেন, কখন যে ছিনিয়ে নেবেন তাঁর তাজ, কেউ জানে না! সেঞ্চুরির পর বিরাটের তৃপ্ত মুখটা আবার ভারতীয় ক্রিকেটের বিজ্ঞাপনের শিরোনামে উঠে আসবে। তিনিই তো সেরা বিজ্ঞাপন। ভারতের। ক্রিকেটেরও!
ফরিদ আহমেদের হাফভলি বলটা ছিল অফস্টাম্পের একটু বাইরে। ব্যাটটা পিছনে নিয়ে গিয়ে সপাটে ছয়টা মারলেন বিরাট কোহলি। ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বলটা সীমানার ও পারে পড়তেই হেলমেট খুলে ফেললেন তিনি। এক হাতে হেলমেট, এক হাতে উঁচু করে ধরা ব্যাট। মুখের চওড়া হাসিটাই বলে দিল, কতটা শান্তি পেলেন। বিরাটের এই শতরানের সঙ্গে সঙ্গে আবার সেই অপেক্ষাও শুরু হয়ে গেল। কবে কেরিয়ারের ১০০তম সেঞ্চুরিটা আসবে তাঁর ব্যাট থেকে? ৩৩ বছরের বিরাটকে যে ভাবে অভ্যস্ত ক্রিকেট দুনিয়া, সেই ছন্দেই দেখা গেল তাঁকে। শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাট করছিলেন। উইকেটের দু'দিকে রান করেছেন। সেই চোখধাঁধানো কভার ড্রাইভ। স্পিনারকে স্টেপ আউট করে দুরন্ত ছয়। কাট, পুলের ফুলঝুরি। হাফসেঞ্চুরির পর যেন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল, যে কোনও সময় আসতে পারে সেঞ্চুরি। করলেনও তাই। পর পর চার ও ছয় মেয়ে সেঞ্চুরি করে ফেললেন। সব মিলিয়ে কেরিয়ারে ৭১টা সেঞ্চুরি হয়ে গেল। তার আগে অবশ্য অন্য এক রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট। ক্রিকেট ইতিহাসে ১০০টা সেঞ্চুরির মালিক সচিন তেন্ডুলকর। তার পরেই রয়েছেন রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তির ৭১টা সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন বিরাট।
বিরাট শতরান প্রসঙ্গে সহ-অধিনায়ক রাহুল বলেন, "আমি জানি বিরাট খুব খুশি নিজের ব্যাটিং নিয়ে। যে ভাবে পরিশ্রম করছিল ও সেটার ফল পেল। বিশ্বকাপের আগে ওর রানে ফেরা স্বস্তি দেবে। এমন দু'তিনটে ইনিংস খেললে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। বিশ্বকাপের আগে নিজের সেরা ছন্দে থাকবে ও।"
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পর পর হেরে এশিয়া কাপ থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিল ভারত। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নিয়মরক্ষার ম্যাচ খেলতে নেমেছিল রাহুল দ্রাবিড়ের টিম। সেঞ্চুরির মঞ্চ হিসেবে আর সেই ম্যাচই বেছে নিলেন ভিকে। যতই নিয়মরক্ষার ম্যাচ হোক, এই সেঞ্চুরির গুরুত্ব অনেকখানি। টিমের দিক থেকে যেমন, বিরাটের দিক থেকেও। আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে বিরাটকে ফর্মে দেখতে চেয়েছিলেন নির্বাচকরাও। সেই কাজটাই এশিয়া কাপে করে রাখলেন বিরাট। এশিয়া কাপের শুরু থেকেই অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল তাঁকে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ৩৫ করেছিলেন। হংকংয়ের বিরুদ্ধে নট আউট ৫৯ রানটা আরও বেশি ছন্দ ফিরে পেয়েছিলেন। সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারলেও বিরাট করে গিয়েছিলেন চমৎকার ৬০ রান। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ০ করে ফিরেছিলেন। এই ম্যাচে আবার বিরাট স্বমহিমায়। ৬১ বলে নট আউট ১২২ করলেন তিনি। মেরেছেন ১২টা চার ও ৬টা ছয়।
আফগানিস্তানকে হারিয়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে কোহলি বলেন, ''আমাকে অনেকে পরামর্শ দিচ্ছিল। অনেক উপদেশ শুনতে পাচ্ছিলাম। সবাই বলছিল, আমি এখানে ভুল করছি, ওখানে ভুল করছি। আমি কাউকে বোঝাতে পারছিলাম না আমার মনের মধ্যে কী চলছে। মানুষ আপনাকে উপদেশ দেবে। কিন্তু আপনার মনের কথা কেউ বুঝতে পারবে না।''
দীর্ঘ দিন শতরান না পেলেও কোহলি যে একেবারেই রান করতে পারেননি তা নয়। কিন্তু বড় রান আসছিল না। সমালোচনা বাড়ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন, ঠিক রানে ফিরবেন। অভিমানের সুরে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, ''৬০ রান করলেও সবাই বলছিল ব্যর্থ হয়েছি। খুব অবাক লাগত। কিন্তু কিছু করার ছিল না। নিজেকে বুঝিয়েছি। শূন্য থেকে শুরু করেছি।''
কোহলি যে এ রকম একটা ম্যাচে শতরান পেতে পারেন, সেটা কেউ বিশ্বাসই করতে পারেননি। বিশেষত আগের ম্যাচে দিলশান মদুশঙ্কের বলে ও ভাবে উইকেট ছত্রখান হয়ে যাওয়ার পর। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, আত্মবিশ্বাস তলানিতে থাকবে তাঁর। কোহলি বুঝিয়ে দিলেন, তিনি অন্য ধাতের মানুষ। অনেক দিন ধরেই বলা হচ্ছিল, কোহলির শতরান সময়ের অপেক্ষা। সেই সময়টাই কিছুতে আসছিল। অর্ধশতরান করছেন, ৭০-৮০ রানের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছেন। কিন্তু তিন অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারছেন না। সেই খরা কাটল দুবাইয়ে। ইডেন গার্ডেন্সে দিন-রাতের টেস্টে শেষ বার কোহলির ব্যাট থেকে শতরান পাওয়া গিয়েছিল। দুবাইয়ে এশিয়া কাপে আবার তাঁর থেকে পাওয়া গেল শতরান।
মাঝের কয়েকটি মাসে বেশ কয়েক বার ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম নিয়েছেন কোহলি। নিজেই জানিয়েছেন, এক মাস ব্যাট ছুঁয়ে দেখেননি। কিন্তু দলে ফেরার পরে সবার কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কোহলি বলেন, ''দলে ফেরার পরে সবাই আমাকে সমর্থন করেছে। সাজঘরের পরিবেশ খুব ভাল ছিল। কেউ আমাকে বাড়তি কোনও পরামর্শ দিতে যায়নি। সবাই খালি বলেছে, মাঠে নেমে ব্যাট করতে। সেটাই করেছি।''
এশিয়া কাপে এর আগে দু'টি অর্ধশতরান করেছিলেন কোহলি। সেটা ছিল ঝলক। আসল ছবি দেখা গেল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। নিজের ব্যাটিং দেখে নিজেই খানিকটা অবাক হয়ে গিয়েছেন কোহলি। তিনি বলেন, ''আমি বুঝতে পারছিলাম ধীরে ধীরে রানের মধ্যে ফিরছি। কিন্তু আজ যেভাবে ব্যাট করেছি সেটা দেখে আমি নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছি।''
হোক না প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, হোক না এশিয়া কাপের নিয়মরক্ষার ম্যাচ, টি-টোয়েন্টি কোহলির শতরান দেখার জন্যে যে কোনও ম্যাচেই মাঠে আসা যায়। অথচ দুবাইয়ের দুর্ভাগ্য, নিয়মরক্ষার ম্যাচ বলে মাঠে কেউই ভিড় জমাতে উৎসাহ দেখালেন না। দু'দলের জাতীয় সঙ্গীতের সময় দু'দলের জার্সির সঙ্গে গ্যালারির ফাঁকা আসনের নীল রং আলাদা করা যাচ্ছিল না। ম্যাচ শুরু হওয়ার পর কেউ কেউ এলেন বটে, তা-ও দু'-আড়াই হাজারের বেশি নয়। যাঁরা এলেন না, তাঁরা হয়তো সারাজীবন আক্ষেপ করবেন।
নিবন্ধকারঃ ঋদ্ধি রিত