রিও অলিম্পিক্সে রিং ছাড়তে হয়েছিল স্ট্রেচারে করে, ভাঙ্গা পা নিয়ে। সেই মেয়েটাই আজ সোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছে টোকিও অলিম্পিক্সে। তিনি ভিনেশ ফোগত।
মাঝে করোনা আক্রান্ত হওয়া থেকে শুরু করে বহু ঝড় বয়ে গিয়েছে তাঁর উপর দিয়ে। হাল ছাড়েননি। টোকিও অলিম্পিক্সে কুস্তিতে নিজেদের বিভাগে বাছাই নির্বাচিত হয়েই গিয়েছেন। এ বছর সব প্রতিযোগিতায় সোনা জেতা ভিনেশ ৫৩ কেজি বিভাগে এক নম্বর বাছাই নির্বাচিত হয়েছেন। জাপানের কুস্তিগীর মায়ু মুকাইদাকে টপকে শীর্ষবাছাই ভিনেশই।
২০১৯ সালে চার বারের চেষ্টায় কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত কুস্তির বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জেতেন ভারতীয় কুস্তি তারকা। একই সঙ্গে চলতি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ থেকেই ২০২০ টোকিও অলিম্পিকের ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছিলেন ‘দঙ্গল কন্যা’ ভিনেশ।
ইতিমধ্যেই এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসের স্বর্ণপদক জেতা হয়ে গিয়েছে ফোগতের। ২০১৯ সালের আগ তিন বারে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েও পদক জিততে পারেননি তিনি। চার বারের চেষ্টায় ভিনেশ অধরা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ পদক ঝোলান নিজের গলায়।
সব মিলিয়ে পঞ্চম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগীর হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পদক জেতেন ভিনেশ।
ভিনেশ ফোগাট কুস্তিগীর মহাভার সিং ফোগাটের ছোট ভাই রাজপালের কন্যা এবং কুস্তিগীর গীতিকা ফোগাট ও বাবিতা কুমারীর খুড়তুত বোন। ২০১৪ গ্লাসগো, কমনওয়েলথ গেমসে মহিলা ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে ৪৮ কেজি, ভিনেশ, স্বর্ণপদক জিতেছেন। ২০১৮ গোল্ড কোস্ট, কমনওয়েলথ গেমসে মহিলা ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে ৫০ কেজি, ভিনেশ, স্বর্ণপদক জিতেছেন।
রিও অলিম্পকে সেই সময়টা বড় কঠিন ছিল নিজেকে সামলানোর জন্য। সারা দেশে তাকিয়ে তাঁর দিকে। একটা চোট, সব শেষ করে দিয়েছিল। ব্রাজিল থেকে ভিনেশ উদিত সূর্যের দেশে এসে নিজেরও সূর্যোদয়ের খোঁজ করছেন।
ভিনেশের তখন ৯ বছর বয়স। হঠাৎ তাঁর বাবা মারা যান। কঠিন পরিস্থিতি থেকে এই জায়গায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে মায়ের অবদান ছিল সবথেকে বেশি। যা তিনি কোনওদিন ভুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন বহু সংবাদমাধ্যমে। রিওতে চোট পাওয়ার পরও তাঁকে সর্বদা উজ্জীবিত করেছিল মা-ই। টোকিওতে ভিনেশের থেকে পদকের আশা করছে গোটা দেশ। প্রত্যাশা পূরণ করতে মরিয়া তিনি নিজেও।