২০০৫ সালে ‘পরিণীতা’র পরে পরিচালক প্রদীপ সরকার ফের তৈরি করতে চলেছেন একটি পিরিয়ড পিস। এবার নটী বিনোদিনী। ঊনবিংশ শতকের বাংলা থিয়েটারের সবথেকে উল্লেখযোগ্য অভিনেত্রী তথা সুপার স্টারকে নিয়ে তৈরি হতে চলেছে নতুন ছবি। আর সেই ছবিরই কেন্দ্রীয় চরিত্র অর্থাৎ বিনোদিনী দাসীর ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য যেমন শক্তিশালী অভিনয় দরকার, সেরকম ক্ষমতাসম্পন্ন অভিনেত্রীকেই নির্বাচন করেছেন পরিচালক। হ্যাঁ, পরিণীতার পর তাঁর এ ছবিতেও থাকছেন বিদ্যা বালন।
পতিতা পল্লী থেকে উঠে আসা এবং পরবর্তীকালে বাংলা থিয়েটারের অন্যতম স্টার হওয়ার কাহিনী নিয়ে অসংখ্য বই লেখা হয়েছে। স্বয়ং নটী বিনোদিনীও লিখেছিলেন তাঁর আত্মকথা ‘আমার কথা’। তবে সেই জীবনকথা ছিল অসমাপ্ত। ১৯১৩ সালে প্রকাশিত এই বই আজও সমান জনপ্রিয়। অরুণ দাশগুপ্তর পরিচালনায় বীণা দাশগুপ্তর অভিনয়ে তাঁর জীবন উঠে এসেছিল যাত্রায়ও। যাত্রার নাম ছিল ‘নটী বিনোদিনী’। এছাড়াও ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার প্রযোজনায় নাটকের মঞ্চে এসেছে ‘নটী বিনোদিনী’। সেখানে বিনোদিনীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সীমা বিশ্বাস। এছাড়াও দীনেন গুপ্তর পরিচালনায় বাংলা সিনেমাতেও এসেছে ‘নটী বিনোদিনী’। সিনেমায় বিনোদিনী করেছিলেন দেবশ্রী রায়। এবার সেই চরিত্রে বিদ্যা বালন। জানা যাচ্ছে, দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকবেন নাসিরুদ্দিন শাহ ও জ্যাকি শ্রফ। এখন চলছে চিত্রনাট্য লেখার কাজ।
পরিচালক প্রদীপ সরকারের কথায়, ‘নটী বিনোদিনী একজন কালারফুল ক্যারেক্টার। এমন একজন মানুষের জীবন নিয়ে আমার আগ্রহ ছিলই। অনেকদিন ধরেই ভেবেছি ছবি করার কথা। তাই তাঁর জীবনের বহুশ্রুত দিক আর আড়ালে থাকা দিকগুলোকে নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এই ছবি তৈরি করার চেষ্টা করছি।’
গবেষক শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও থাকছেন এই ছবির নেপথ্যে। তিনি জানিয়েছেন, ‘নটী বিনোদিনী এবং শ্রীরামকৃষ্ণের বিখ্যাত সাক্ষাৎ এবং তাঁর অভিনয় জীবনের ওপর লেখা হয়েছে অনেক বই। কিন্তু তাঁর ১১ বছরের অভিনয় জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেশের সেই অশান্ত সময়ে তিনি কোন ভূমিকা পালন করেছিলেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে অন্তরালে চলে যাওয়ার পর সেই সময়ে অত বড় মাপের একজন স্টার কীভাবে জীবন কাটাতেন তাও অনেকেই জানেন না। কম আলোচিত। এই সবকিছুই উঠে আসবে এই ছবিতে।’
এর আগে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘পরিণীতা’কে বড়পর্দায় এনেছিলেন প্রদীপ সরকার। তাঁর সেই ছবি ছিল একটি পিরিয়ড পিস। এবার আসছে ‘নটী বিনোদিনী’। আবার একটা পিরিয়ড পিস। এবার দেখার তাঁর এই ছবিতে কীভাবে ধরা দেয় নটী বিনোদিনীর জীবন, আর কতটাই বা বিনোদিনী হয়ে উঠতে পারেন বিদ্যা বালন।